একজন চলচ্চিত্র নায়িকার যেসব বৈশিষ্ট্য বা গুণ থাকা দরকার তার সবই আছে তিন্নির। টিভিনাটকের মাধ্যমে মিডিয়ায় পদার্পনের পর থেকেই তাই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব তার পিছু নেয়।
সম্প্রতি বাংলানিউজকে তিন্নি তার চলচ্চিত্রের ক্যারিয়ার সম্পর্কে বলেন, শোবিজে পা রাখার প্রায় নয় বছর পর আমি মূলধারার বানিজ্যিক ছবিতে অভিনয় করি। এতদিন ছোটপর্দায় নাটক, টেলিফিল্ম, বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি বিকল্প ধারার চলচ্চিত্রে কাজ করেছি। বড় পর্দায় বাণিজ্যিক ধারার চলচ্চিত্রে কাজ করব, এমন স্বপ্ন শুরুতে ছিল না। বেশ কয়েকজন চলচ্চিত্র পরিচালক আমাকে বড় পর্দায় কাজ করার পরামর্শ দিলে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে থাকি । একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিলাম কাজ করার। আমি চেয়েছিলাম একজন ভালো নির্মাতার ভালো ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করতে। নিজেকে আমি সৌভাগ্যবান মনে করি, কারণ শুরুতেই সোহানুর রহমান সোহানের মতো পরিচালকের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ছবিতে আমার প্রথম কাজ করার সুযোগ হয়েছে। কারণ আমার স্বপ্নের নায়ক সালমান শাহ আর মৌসুমী আপুর আবিস্কারক তিনি। তাছাড়া এ ছবিতে এই সময়ের টপহিরো শাকিব খানের সঙ্গে কাজ করাটাও আমার জন্য প্লাস পয়েন্ট। সবমিলিয়ে ‘সে আমার মন কেড়েছে’ ছবিটির মাধ্যমে বড়পর্দায় দর্শকদের সামনে হাজির হওয়ার অপেক্ষায় আমি এখন দিন গুনছি।
বাণিজ্যিক ছবিতে কাজ করার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তিন্নি বললেন, চলচ্চিত্র জগত সম্পর্কে জানার আগ্রহ আমার দীর্ঘদিনের । কাজ করে বুঝতে পেরেছি এটি সত্যিই একটি সম্মানের জায়গা। এখানকার প্রতিটি মানুষই খুব সহযোগী মনোভাব সম্পন্ন। এফডিসির পরিবেশটি আসলেই সিনেমাটিক। এখন বুঝতে পারছি আমার অনেক আগেই এখানে আসা উচিত ছিল। কিন্তু ছোটপর্দার ব্যস্ততা আর সাংসারিক কাজকর্ম কাটিয়ে উঠতে পারিনি।
খেয়ালী স্বভাবের মেয়ে তিন্নি। ‘সে আমার মন কেড়েছে’ ছবির শুটিংয়েও তার এই খেয়ালীপনার কারণে নানারকম জটিলতা তৈরি হয়েছে। একপর্যায়ে তো ছবির কাজই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এই অভিযোগ প্রসঙ্গে তিন্নি বললেন, আমি চলচ্চিত্রে নতুন। তাই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে চলতে খানিকটা সময় লাগতেই পারে। এ ক্ষেত্রে বড়দের উচিত ছিল আমাকে সঠিক দিক-নির্দেশনা দেওয়া। বার বার শিডিউল পরিবর্তন আর নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অনেক দীর্ঘ সময় নেওয়ায় একপর্যায়ে আমি উৎসাহ হারিয়ে ফেলি। কিন্তু এসব কিছুই ছিল সাময়িক। আমি আমার সাধ্য মতো মন দিয়েই এই ছবিতে অভিনয় করেছি। ভালো করার জন্য আমার চেষ্টার কমতি ছিল না।
তিন্নি আরো বলেন, কাজ শুরুর পর নানা জটিলতায় একাধিকবার ভেবেছিলাম কাজটি ছেড়ে দেব। ছবিটির রাশপ্রিন্ট দেখার মনে পর হয়েছে, ভাগ্যিস এ ধরণের কোনো সিদ্ধান্ত নেই নি। কারণ চমৎকার ছবি হয়েছে ‘সে আমার মন কেড়েছে’। আমার বিশ্বাস, দর্শক আমাকে চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী হিসেবে গ্রহণ করবে। যদি তাই হয়, তবে আমি নিয়মিত এই মাধ্যমে কাজ করে যাব। কারণ চলচ্চিত্র হচ্ছে সবচেয়ে বড় গণমাধ্যম। অনেক প্রস্তাব পেলেও আপাতত নতুন কোনো বাণিজ্যিক ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হই নি, কারণ আমি অপেক্ষা করছি। ছবিটি মুক্তির পরই আমি আমার চলচ্চিত্রের ক্যারিয়ার সম্পর্কে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চাই।
তিন্নি জানালেন, আসছে ঈদের বেশ কয়েকটি নাটকে তিনি অভিনয় করছেন। ধারাবাহিক নাটকে অনেক সময় দিতে হয় বলে আপাতত একপর্বের নাটকেই অভিনয় করছেন। মেয়ে ওয়ারিশার বয়স মাত্র দুই, তার জন্যই বরাদ্দ রাখেন দিনের দীর্ঘ সময়। সংসারে স্বামী হিল্লোল আর তার মধ্যে ওয়ারিশা-ই তো সেতুবন্ধন।
‘সে আমার মন কেড়েছে’ ছবিটি আগামী রোজার ঈদের মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময় ১৬৫০, জুন ১৬, ২০১১