পারিবারিকভাবে জয় আর প্রমির বিয়ে হয়। ছোট্ট সংসারে সুখের ছড়াছড়ি।
কেন তাদের সংসারে এমন হলো, অনেকে ভাগ্যকে দোষারোপ করে নিশ্চিন্ত থাকেন। কিন্তু বিজ্ঞান অনেক এগিয়ে গেছে। গবেষকরা সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখেছেন স্বামী-স্ত্রী বোনিবোনা হচ্ছে না বা শেষ পর্যন্ত বিয়েটাই ভেঙে গেছে, এর জন্য দায়ি আসলে মেয়েদের শরীরে থাকা বিশেষ এক ধরনের জিন। জিনটির নামই দিয়েছেন তারা ‘ডিভোর্স জিন’। স্ত্রী এই জিনের বাহক হলে সেই সংসার হবে কুরুক্ষেত্র।
এই জিনের বাহক মেয়েটির যদি মনে হয়, এই লোকটির সঙ্গে বসবাস করা খুব কঠিন তাহলে সে তাকে কোনোভাবেই বিয়ে করতে চাইবে না। আর যদি বিয়েটা হয়েই যায় তাহলে দেখা গেছে তাদের ৫০ ভাগই সাংসারিক অশান্তির কথা বলেছেন।
বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, নারীর মধ্যে ভালবাসা এবং মাতৃত্ব জাগানোর জন্য দায়ি অক্সিটোসিন হরমোনের ওপর এই বিশেষ জিনটির প্রভাব রয়েছে।
নারীর শরীরে এই হরমোনটি প্রাকৃতিক নিয়মেই তৈরি হয়। তবে বিশেষ করে শিশুজন্ম এবং শিশুকে দুগ্ধদানের সময় এর উৎপাদন এবং নিঃসরণ বেশি হয়। এতে করে মা ও শিশুর মধ্যে গভীর স্নেহের বন্ধন তৈরি হয়।
কিন্তু কোনো কারণে এই হরমোন তৈরি বিঘ্নিত হলেই ঘটবে বিপত্তি। স্বামী বা সঙ্গী তো দূরের কথা নিজের সন্তানের প্রতিও বিরক্ত হবেন সেই নারী।
সুইডেনের একদল বিজ্ঞানী দীর্ঘ পাঁচ বছর একসঙ্গে আছেন এমন ১৮শ’ জনেরও বেশি নারী ও তাদের সঙ্গীর ডিএনএ নিয়ে পরীক্ষা করে বিয়ে বিচ্ছেদ বা দাম্পত্য কলহের সঙ্গে এই বিশেষ জিনের সম্পর্কটি আবিষ্কার করেছেন।
এই গবেষণার ফলাফলটি আমাদের অতি প্রাচীন বাক্য ‘সংসার সুখের হয় রমনীর গুণে’ একেই শুধু প্রতিষ্ঠিতি করল না সঙ্গে বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও দিল।
অবশ্য সংসারে সব অশান্তির জন্য নারীই দায়ি এর পক্ষে বৈজ্ঞানিক ভিত্তি পেয়ে পুরুষরা যেনো বেশি খুশি হবেন না। কারণ বিজ্ঞানীরা এও দেখেছেন, এরকম জিন পুরুষের মধ্যেও থাকতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই জিন পিটুইটারি গ্রন্থির এক অংশ থেকে বিশেষ হরমোন নিঃসরণ প্রভাবিত করে যার কারণে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত আস্থা, বিশ্বাস এবং প্রতিশ্রুত দায়িত্বশীলতা বোধ নিয়ন্ত্রণ করে।
সংসার শুধু রমনীর গুণে নয় উভয়ের মধ্যে ভালবাসা, শ্রদ্ধাবোধ সহিষ্ণুতা, আস্থা, সমঝোতা, মূল্যায়ন এমন আরও কিছু গুণেই সুখের হয়।