ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

২০ টাকার আখনিতে দুপুরে ভোজ

শারমীনা ইসলাম, লাইফস্টাইল এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৭
২০ টাকার আখনিতে দুপুরে ভোজ সিলেটাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খাবার আখনি/ছবি: আসিফ আজিজ-বাংলানিউজ

বড়লেখা, মৌলবভীবাজার থেকে ফিরে: দেশের সবচেয়ে বড় হাওর হাকালুকি যাওয়ার উদ্দেশে শ্রীমঙ্গল থেকে ট্রেনযোগে কুলাউড়া যাওয়া। সেখান থেকে সিএনজি অটোরিকশায় বড়লেখার পাখিয়ালা চৌমুহনী। এখান থেকে আট কিলোমিটার এগোলে হাকালুকির পূর্বপাড়। গন্তব্য সেখানেই। কিন্তু শীতে একটু চাঙ্গা হতে বাজারে চা পানের সাময়িক বিরতি।

হোটেলের সামনে চায়ের জন্য অপেক্ষা করতে করতেই চোখে পড়লো ছোলা ভুনা দিয়ে খিচুড়ি খাচ্ছে এখানকার মানুষ। বৃহত্তর সিলেটাঞ্চলের বাইরের মানুষের কাছে বিষয়টি একটু বিস্ময় জাগানিয়া বটে।

বাংলানিউজ টিমেরও সাধ হলো এর একটু স্বাদ চেখে দেখার। জিজ্ঞেস করে জানা গেলো খাবারটি খিচুড়ি নয়, এর নাম আখনি। এ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খাবার।

অর্ডার করা হলো প্রথমে ১০ টাকার। স্বাদ ভালো হলে আরও নেওয়া হবে। ১০ টাকায় মিলবে একবাটি। এটাই সর্বনিম্ন। পরিবেশনটাও চমৎকার। হলুদরঙা খিচুড়ির উপর ছড়ানো ছোলা ভুনা, কয়েকটি শুকনো মরিচ আর খোসাসহ লেবুর কুচি।

সিলেটাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খাবার আখনি/ছবি: আসিফ আজিজ-বাংলানিউজমুখে দিয়ে স্বাদ লাগলো বেশ। অর্ডার করা হলো আরও ১০ টাকার। ২০ টাকার হলেও হয়ে ‍যায় এক প্লেট। ঝাল-মসলায় খাওয়া যায় অনেক। মাত্র ২০ টাকায় একজন পেটপুরে খেতে পারেন আখনি। ছোট্ট হোটেলটি মুহূর্তেই ভরে গেলো। টেবিলে এবার আখনির সঙ্গে দেখা গেলো সিঙ্গাড়াও।

সস্তায় পাওয়া যায় বলে এখানে কাস্টমারের কমতি নেই বলে জানালেন হোটেল মালিক আবুল হোসেন। তিনি নিজের হাতেই রান্না করেন আখনি।

আবুল হোসেন বলেন, মাত্র ২০ টাকায় পেট ভরে দুপুরের খাবার খেয়ে কাস্টমাররা অনেক খুশি। তবে এখানে ভোক্তা মূলত নিম্ন আয়ের মানুষ।

সিলেটাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খাবার আখনি/ছবি: আসিফ আজিজ-বাংলানিউজছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন খাবারের হোটেলে কাজ করছেন আবুল হোসেন। স্বপ্ন ছিলো একদিন নিজের একটি হোটেল হবে। আজ তার স্বপ্ন সত্যি...ছোট্ট হলেও একটি হোটেলের মালিক। তার সঙ্গে কাজ করেন আরও তিনজন। হোটেলের খাবারের তালিকায় আখনিই মূল আইটেম। সঙ্গে রয়েছে কিছু সিঙ্গাড়া, পুরি। দুপুরের ডাল-ভাতও করেন তিনি।

অনেকেই সিঙ্গাড়া দিয়ে আখনি খেতে পছন্দ করেন বলেও জানান আবুল হোসেন। তিনি বলেন, পুরো সিলেটেই আখনি সবার প্রিয় খাবারের একটি। এ আইটেমটি প্রায় প্রতি বাড়িতেই রান্না হয়।

আখনি খেতে থাকা জুয়েলও জানান, তার বেশ পছন্দের খাবার সিঙ্গাড়া দিয়ে আখনি। সময় থাকলে এ হোটেলে এসেই দুপুরের খাবার খান তিনি।

সিলেটাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খাবার আখনি পরিবেশনের প্রস্তুতি/ছবি: আসিফ আজিজ-বাংলানিউজআখনির রেসিপি জানালেন আবুল হোসেন, আতপ চাল (মিনিকেট), পেঁয়াজ, আদা-রসুন-ধনিয়া-জিরা, লবণ আর সামান্য হলুদ দিয়েই রান্না হয় আখনির খিচুড়ি। শুধু তেলের বদলে তিনি ডালডা ব্যবহার করেন। আর ছোলা সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে সেদ্ধ করে মাংসের মসলা দিয়ে ভুনা করেন।  

১০ টাকায় নাস্তা আরও ২০ টাকায় জম্পেশ দুপুরের খাবার!

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৭
এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।