মাদারীপুর: মাদারীপুর জেলার কালকিনিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নেতার শোভাযাত্রায় লাঠিপেটা করেছে পুলিশ।
এ সময় পুলিশের লাঠির আঘাত থেকে বাঁচতে ছাত্রদলের অনেক নেতাকর্মী মোটরসাইকেল ফেলেই পালিয়ে যান।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কালকিনি উপজেলা পরিষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিএনপি ও ছাত্রদলের অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক জসিমউদ্দীন, মাদারীপুর জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী রফিকুল ইসলাম, সহ-সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, কালকিনি উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শিকদার মো. মামুন, সাবেক ছাত্রনেতা শামীম মোল্লা, কালকিনি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন, কালকিনি পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাওছার হোসেন, সাবেক দপ্তর সম্পাদক নজরুল ইসলাম, গোপালপুর ইউনিয়ন বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল খন্দকারসহ অন্যরা।
আহতরা কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
জানা গেছে, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে খাইরুল আলম ওরফে সুজন মনোনীত হন। বাবার কবর জিয়ারতের উদ্দেশ্যে বুধবার সকালে তিনি নিজ এলাকায় যান। কালকিনির ভুরঘাটায় পৌঁছালে উপজেলা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তিনি কুশল বিনিময় করেন। পরে তার ছাদখোলা গাড়ি নিয়ে গ্রামের বাড়ি কয়ারিয়ার দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় তার পেছনে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের অন্তত দেড় থেকে দুইশত মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে আসছিল। তারা ভুরঘাটা-কালকিনি সড়ক হয়ে কালকিনি উপজেলা পরিষদের কাছে আসলে সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ এসে তাদের সরে যেতে বললে পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায় পুলিশের ওপর বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মী চড়াও হলে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় পুলিশের লাঠিপেটায় অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হন।
কালকিনি উপজেলা বিএনপির তথ্য ও যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক নুরু তালুকদার বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের ছাত্রদলের এক কেন্দ্রীয় নেতা তার গাড়ি নিয়ে গ্রামের বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ পুলিশ আমাদের গতিরোধ করে লাঠিচার্জ শুরু করে। পুলিশের লাঠিপেটায় আমাদের ১৫ থেকে ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ’
মাদারীপুর জেলা ছাত্রলদের আহ্বায়ক জাকির হোসেন, ‘পুলিশ ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে আমাদের লাঠি দিয়ে বেদম পেটানো শুরু করে। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে আমরা অনেকেই নিজেদের বাইক রেখে পালিয়ে যাই। আমরা এই ন্যাক্কারজনক হামলার বিচার চাই। ’
কেন্দ্রীয় ছাত্রদল যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খাইরুল আলম বলেন, ‘আমি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় পদ পাওয়ার পরে প্রথমবারের মত নিজ এলাকায় যাচ্ছিলাম। ইচ্ছে ছিল বাবার কবর জিয়ারত করে আবার ঢাকায় ফিরে যাব। পদ পাওয়ার পর আমি ঢাকা থেকে প্রথম নিজ এলাকায় আসার কারণে এখানকার নেতাকর্মীরা আমাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে আসেন। কিন্তু পুলিশ অতি উৎসাহিত হয়ে আমাদের টার্গেট করে হামলা করেছে। পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরাও ছিলেন। ’
কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসেন বলেন, ‘বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা কোনো প্রকার অনুমতি ছাড়াই মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করেন। তারা সড়কে বিশৃঙ্খলা করছিলেন। এতে যাত্রী ও সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন। পুলিশ তাদের শান্তিপূর্ণভাবে সরে যেতে বললে কিছু উগ্র নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে চড়াও হয়। পরে পুলিশ বাধ্য হয়ে তাদের লাঠিচার্জ করে সড়ক যানজট মুক্ত করে। তবে পুলিশের লাঠিচার্জে কেউ আহত হয়নি, বিএনপির নেতাকর্মীরা ছুটোছুটি করতে গিয়ে পড়ে গিয়ে আহত হতে পারে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৩
এসএএইচ