ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

১২ ফুটের বাঁশের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয় ব্রিজে!

এইচ এম নাঈম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৩
১২ ফুটের বাঁশের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয় ব্রিজে!

ঝালকাঠি: ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার শুক্তাগড় ইউনিয়ন ভূমি অফিস সংলগ্ন সাংগর খালের ওপরে ব্রিজ নির্মাণ হলেও হয়নি সংযোগ সড়ক। এ কারণে ওই ব্রিজে উঠতে হয় বাঁশের সিঁড়ি বেয়ে।

এই সিঁড়ি বেয়ে ওঠার কারণে শিশু ও বৃদ্ধরা মাঝেমধ্যেই হোচট খেয়ে ঘটছে ছোট-খাটো দুর্ঘটনা।  

জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ সাংগর খালের ওপর ২০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭.৩ মিটার প্রস্থ আর সিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করেন। ২ কোটি ১৭ লাখ ৯৮ হাজার ৬৬৭ টাকা ব্যয়ে মেসার্স হাবিব সন্স-খন্দকার বিজনেস নামে ঝালকাঠির একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওই ব্রিজের নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায়। ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ব্রিজ নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়। ২০২২ সালের ৩০ এপ্রিল সম্পূর্ণ কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখনও দুই পাশের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করেনি ঠিকাদার। নির্দিষ্ট সময় অতিক্রম করেও কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় ব্রিজ দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে না পারায় কোনো কাজেই আসছে না ব্রিজটি। ফলে দুই পারের শত শত মানুষ রয়েছে চরম দুর্ভোগে।  

জনদুর্ভোগ লাঘবে সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রিজ করলেও সেই ব্রিজে এখন ভোগান্তির মাত্রা বেড়েছে আরও কয়েকগুন। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ নৌকায় পার হতে গিয়ে অনেক সময় নৌকা থেকে পড়ে ভিজতে হয়েছে। এতে অনেকের স্কুল-কলেজসহ সাধারণের কাজে যাওয়া বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে নতুন ব্রিজে ওঠার জন্য এলাকাবাসী কাঠ-বাঁশ দিয়ে সিঁড়ি তৈরি করে তাতেই ব্রিজ পার হচ্ছেন। প্রায় ১২ ফুট উচুঁ ব্রিজে সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামা করতে গিয়ে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে।  

স্থানীয় রহমত আলী, জব্বার হোসেন, কহিনুর বেগম, রাজ্জাক হাওলাদার জানান, ব্রিজটি নির্মিত হওয়ায় তাদের আশা ছিল জনভোগান্তি দূর হবে কিন্তু এখন উল্টো তাদের দুর্ভোগ বেড়েছে। সিঁড়ি বেয়ে ব্রিজে উঠতে গিয়ে অনেক সময় কোমলমতি শিশুরা হোচট খেয়ে পড়ে ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। বয়স্ক মানুষ কারো সাহায্য ছাড়া ব্রিজে উঠতে পারছেন না। আবার কারো সাহায্য নিয়ে পার হতেও খুব কষ্ট হয়।  

পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসতে হলে তাদের নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এখন রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও সামনে বর্ষাকালে ছেলে-মেয়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন স্থানীয় অভিভাবকরা। এছাড়াও চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদার ব্রিজ নির্মাণ করেনি বলেও তারা অভিযোগ করেন।  

ব্রিজের ঠিকাদার মো. শাহিন হোসেন জানান, কর্তৃপক্ষের এক এক সময় এক এক রকমের সিদ্ধান্তের কারণে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। এখন একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে এসেছি খুব শিগগিরই সংযোগ সড়কের কাজ শুরু করা হবে।  

উপজেলা প্রকৌশলী অভিজিৎ মজুমদার বলেন, ঠিকাদার শিগগিরই ওই ব্রিজের বাকি কাজ শুরু করবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।