ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ভারতের ২ কোম্পানি থেকে আনা হয় ‘টাপেন্টাডল’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০২৩
ভারতের ২ কোম্পানি থেকে আনা হয় ‘টাপেন্টাডল’

ঢাকা: ভারতের তেলেঙ্গানা ও গুজরাটের দুটি কোম্পানি থেকে নিষিদ্ধ মাদক টাপেন্টাডলের চালান বাংলাদেশে ঢোকে কুমিল্লা বর্ডার হয়ে। পরে ছোট ছোট চালানে ভাগ করে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আসে ঢাকায়।

এ মাদকের চালান কুমিল্লা থেকে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকার তামজীদ ও মবিনুরের কাছে পাঠান প্রশান্ত সাহা নামে এক কারবারি। প্রশান্ত পেশায় একজন চিকিৎসক।

বুধবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো উত্তর উপ অঞ্চল কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মজিবুর রহমান পাটওয়ারী।

নিষিদ্ধ মাদক টাপেন্টাডল ট্যাবলেটের বড় একটি চালান জব্দসহ দুই কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) ঢাকা মেট্রো উত্তর উপ অঞ্চল।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর হাজারীবাগ থানাধীন হাজী আফছার উদ্দিন রোডের একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে ১ লাখ ২১ হাজার পিস টাপেন্টাডল ট্যাবলেট ও নগদ ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ মাদক কারবারি চক্রের মূলহোতা মো.তামজীদ পাটোয়ারী (২৯) ও তার সহযোগী মবিনুর রহমানকে (৩০) গ্রেপ্তার করে ডিএনসি।

মো. মজিবুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়- ভারতের তেলেঙ্গানা ও গুজরাটের দুটি কোম্পানি থেকে টাপেন্টাডল ট্যাবলেট সংগ্রহ করেন প্রশান্ত সাহা নামে এক চিকিৎসক। তিনি কৌশলে কুমিল্লা বর্ডার হয়ে ভারত থেকে এসব ট্যাবলেট দেশে ঢোকান। শুধু তাই নয়, কুমিল্লা থেকে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকায় ছোট ছোট চালানে আসে। চিকিৎসক ও মাদক কারবারি প্রশান্ত সাহা ঢাকায় অবস্থিত চক্রের মূল হোতা তামজীদ পাটোয়ারী ও তার সহযোগী মবিনুর রহমানের কাছে পাঠাতেন। তামজীদ ও মবিনুর রহমান টাপেন্টাডল সংগ্রহ করে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় তাদের বাসায় মজুদ করতেন এবং রাজধানীসহ, মাদারীপুর ও বেশ কয়েকটি জেলা শহরে একাধিক পাইকারি ও বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতেন।

টাপেন্টাডলে তো ব্যথানাশক ওষুধ, মাদক হিসেবে এর ব্যবহার কীভাবে হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ব্যথানাশক ওষুধ হলেও অনেকে মাদক হিসেবে গ্রহণ করেন। যারা মাদক সেবন করেন তারাই ক্রেতা। অপিয়েড মাদক হেরোইনের সেবনের পর যে অনুভূতি হয়ে এটা সেবন করলে তেমনি অনুভূতি হয়। এটা দীর্ঘদিন ব্যবহার করা হলে শরীরের নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে। যে কারণে এই ওষুধকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ মাদক সেবন করলে স্নায়ু দুর্বল করে এবং অন্যান্য সব মাদকের কারণে শারীরিক যেসব সমস্যা হয় এটা সেবন করলেও একই ধরনের সমস্যা হয়।

এ ট্যাবলেটের মূল্য দেশ কত, জানতে চাইলে তিনি বলেন- একেকটি ট্যাবলেট আমাদের দেশে ১০০ টাকা করে বিক্রি হয়ে থাকে।

চিকিৎসক প্রশান্ত সাহাকে আইনের আওতায় আনা হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নরে জবাবে মজিবুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, দুই আসামির কাছ থেকে আমরা তার (প্রশান্ত সাহা) বিষয়ে অনেক তথ্য পেয়েছি। তার ভারতে নিয়মিত যাতায়াত আছে।

কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে মাদক চালান হচ্ছে। তাদের সতর্ক করার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে পুলিশের এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আমরা কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর কর্তৃপক্ষদের নিয়ে একটি ওয়ার্কশপ করেছি। তাদের আমরা বলার চেষ্টা করেছি এবং বুঝিয়েছি কি কি করা যাবে এবং কি কি করা যাবে না। তারা আমাদের পরামর্শগুলো শুনেছে এবং এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০২৩
এসজেএ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।