নড়াইল: তেভাগা আন্দোলনের পুরোধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কমরেড অমল সেনের ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বুধবার (১৭ জানুয়ারি)।
২০০৩ সালের এই দিনে বার্ধক্যজনিত কারণে ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
কমরেড অমল সেন ১৯১৪ সালের ১৯ জুলাই নড়াইলের আউড়িয়া গ্রামে মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। নড়াইলের আফরা গ্রামের জমিদার বংশের সন্তান হয়েও খুব সাদাসিধে জীবনযাপন করতেন তিনি। শোষিত-নিপীড়িত কৃষক সমাজের অধিকার আদায়ে সচেষ্ট ছিলেন। কৃষকদের অধিকার আদায়ে তেভাগা আন্দোলনে অগ্রপথিকের ভূমিকা পালন করেন তিনি।
নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় তৎকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী দেশপ্রেমিক সংগঠন ‘অনুশীলন’ গ্রুপে যোগ দেন অমল সেন। খুলনার বিএল কলেজে গণিতে পড়ার সময় মার্কসবাদী আদর্শে উদ্বুদ্ধ হন এবং নড়াইলে ফিরে এসে কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলেন। বাবার জমিদারি প্রথা কখনো আকৃষ্ট করতে পারেনি অমল সেনকে। তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন-মানবজীবনের সর্বোচ্চ প্রাপ্তি হতে পারে মানবকল্যাণে আত্মনিয়োগ করা। শ্রমজীবী মানুষের শোষণ, মুক্তির লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করা।
ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করায় পাকিস্তান শাসনামলে ১৯ বছর অমল সেনকে কারাগারে কাটাতে হয়েছে। এদিকে, কষ্টার্জিত ফসলের তিন ভাগের দুই ভাগ বর্গাচাষির, আর একভাগ জমি মালিকের-এ দাবিতে কৃষকদের সংগঠিত করে আন্দোলন গড়ে তোলেন অমল সেন। এক সময় আন্দোলন সফল হলো। দেশের বর্গাচাষিরা এখনও সেই সুবিধা (তেভাগা) পাচ্ছেন। এটিই ‘তেভাগা আন্দোলন’ নামে পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধের সময়ও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
অমল সেনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নড়াইল-যশোর সীমান্তবর্তী বাঁকড়ী গ্রামে বুধবার দুপুরে তার সমাধিতে পুস্পস্তবক অর্পণ, কৃষক সমাবেশ, আলোচনা, ঐতিহ্যবাহী কবিগান, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া দুদিনব্যাপী (বুধ ও বৃহস্পতিবার) গ্রামীণ মেলাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কমরেড অমল সেন স্মৃতি রক্ষা কমিটির উদ্যোগে এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৪
এসএম