ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘শেখ পরিবার ক্ষমা চাইলে মুজিব ‌’৭১ পূর্ববর্তী ভূমিকার জন্য সম্মান পাবেন’

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২৪
‘শেখ পরিবার ক্ষমা চাইলে মুজিব ‌’৭১ পূর্ববর্তী ভূমিকার জন্য সম্মান পাবেন’

অন্তর্বর্তী সরকারের নবনিযুক্ত উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, ‘শেখ (মুজিবুর রহমান) তার একাত্তর পূর্ববর্তী ভূমিকার জন্য সম্মান পাবেন, যদি শেখ মুজিব একাত্তর পরবর্তী গণহত্যা, গুম, দুর্নীতি, দুর্ভিক্ষ এবং অবশ্যই ‘৭২-এর সংবিধান, যা বাকশালের পথ প্রশস্ত করেছিলো— এসবের জন্য তার দল ও তার পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চান। ’

বুধবার (১৩ নভেম্বর) ভোরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের বিষয়ে এ কথা লেখেন তিনি।

পতিত শেখরা শিরোনামের ওই ফেসবুক স্ট্যাটাসে মাহফুজ আলম শুরুতে লেখেন,  ‘শেখ মুজিব ও তার কন্যা (আরেক শেখ) তাদের ফ্যাসিস্ট শাসনের জন্য মানুষের ক্রোধ ও ক্রোধের সম্মুখীন হয়েছেন। পার্থক্য একটাই, হাসিনার মতো না, শেখ মুজিব এক সময় পূর্ব বাংলার জনপ্রিয় গণতন্ত্রবাদী ছিলেন। জনগণ তাকে অনুসরণ করেছিল পাকিস্তানি অত্যাচারের বিরুদ্ধে। কিন্তু ’৭১ সালের পর তিনি নিজেই অত্যাচারী হয়ে ওঠেন। যে মুজিববাদের প্রতি সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতায় ’৭১ সালের পর বাংলাদেশ পঙ্গু ও বিভক্ত হয়ে পড়ে। তার ফ্যাসিস্ট ভূমিকার জন্য মানুষ ১৯৭৫ সালে তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেনি। ’

এরপর তিনি লেখেন, ‘তাদের (আওয়ামী লীগ ও পরিবারের) শেখ কন্যার (তিনি তার পিতাকে বিদ্রুপ ও হাসির পাত্র বানিয়েছেন) স্বৈরাচারী শাসনের দায় স্বীকার করা, ক্ষমা চাওয়া ও বিচার প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হওয়া উচিত। মুজিববাদী রাজনীতি ও শেখ পরিবারের বন্দনাও পরিহার করা উচিত। ’

সম্প্রতি বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামিয়ে ফেলার ঘটনাকে ইঙ্গিত করে মাহফুজ আলম লেখেন, ‘তার কন্যার (শেখ হাসিনা) স্বৈরাচারী শাসনের কারণে শেখের ছবিও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে (যদিও কর্মকর্তারা সরিয়েছে)। ’

ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ‘ফ্যাসিবাদী বাবার নামে ও তার একাত্তর পরবর্তী চেতনার কথা বলে’ শাসন কার্য চালিয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আন্দোলনকারীদের একাংশ শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি, মূর্তি, ভাস্কর্য ভেঙে ফেলেছিলো। মাহফুজ আলম তার ফেসবুক পোস্টে সে বিষয়টিও উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘তার পিতাকে দেবতুল্য করা হয়েছিল কিন্তু বিপ্লবের পর জনগণ তাদের উভয়ের ছবি, মূর্তি এবং ভাস্কর্য একসঙ্গে অপসারণ করে। যদি কেউ সরকারি অফিস থেকে শেখদের ছবি সরানোর জন্য আক্ষেপ করেন, তাহলে তিনি মূলত এই গণঅভ্যুত্থান ও জনগণের চেতনাকেই নিন্দা জানালেন। ’

তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে যে, ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না। আমরা ইতিহাসের অসংগতি ও অপব্যাখ্যাগুলো সংশোধন করতে এখানে এসেছি। মনে রাখবেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল বাংলাদেশের গণমানুষের। তবে কোনো মুক্তিযোদ্ধা যদি একাত্তরের পর কোনো অন্যায় করে থাকেন, তাহলে তার বিচার ও সাজা হওয়া উচিত। মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকার জন্য তাদেরকে ছাড় দেওয়া উচিত নয়। ’

সব শেষে তিনি বলেন, ‘৪৭ এবং ‘৭১-এর পাশাপাশি জুলাইয়ের চেতনা সবার স্মৃতিতে অম্লান থাকুক।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২৪
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।