ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ পৌষ ১৪৩১, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

গুম কমিশনের প্রতিবেদন পড়ার আগে প্রধান উপদেষ্টার সতর্কতা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৪
গুম কমিশনের প্রতিবেদন পড়ার আগে প্রধান উপদেষ্টার সতর্কতা

ঢাকা: গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন পড়ার আগে এখানে উঠে আসা বিগত সরকারের লোমহর্ষক ঘটনা ও নৃশংসতার বিষয়ে সবাইকে সাবধান হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার (ডিসেম্বর ১৬) সকালে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন বিগত সরকারের হাতে খুন গুম হওয়ার ব্যক্তিদের নিয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। 'আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ' শিরোনামে জমা দেওয়া রিপোর্টে কমিশন সদস্যরা এখন পর্যন্ত পাওয়া এক হাজার ৬৭৬টি অভিযোগের মধ্যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করেছেন। গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে কমিশন।

গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ারপর বিভিন্ন খাতে সংস্কারের লক্ষ্যে গুম কমিশনসহ ১৫টি কমিশন গঠন করেছে। এসব কমিশন পূর্ণউদ্যমে তাদের কাজ করে যাচ্ছে। গুম কমিশন গত পরশু তাদের প্রতিবেদনের প্রথম খণ্ড আনুষ্ঠানিকভাবে পেশ করে গেছেন। গুমের শিকার বহু পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে এটা এখন প্রকাশ করা যাচ্ছে না।

ড. ইউনূস বলেন, এই প্রতিবেদন পড়ার আগেই আপনাদেরকে সাবধানকরে রাখি, এটা একটা লোমহর্ষক প্রতিবেদন। মানুষ মানুষের প্রতি কী পরিমাণ নৃশংস হতে পারে এতে আছে তার বিবরণ। অবিশ্বাস্য বর্ণনা।

তিনি বলেন, বিগত সরকারের আক্রোশের শিকার হয়ে ঘটনাচক্রে যারা এখনো বেঁচে আছেন তারা আজ পর্যন্ত মুখ খুলতে সাহস করছেন না। তাদের ভয় কিছুতেই কাটছে না। তাদের ভয়, হঠাৎ যদি ঐ জালেমরা আবার ক্ষমতায় আসে তাহলে তাদের প্রতি এরা নৃশংসতম হবে। গত সরকারের ঘৃণ্যতম অধ্যায়ের ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে এই প্রতিবেদন অমর হয়ে থাকবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আশা করছি, কমিশনগুলো এখন থেকে নিয়মিতভাবে তাদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন ও সুপারিশমালা পেশ করতে থাকবে।

অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান তার ভাষণে বলেন, এসব হত্যাযজ্ঞের সাথে জড়িত পতিত স্বৈরশাসক ও তার দোসরদের বিচার কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। এজন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করা হয়েছে। বিচারপ্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য আসামিদের বিদেশি আইনজীবী নিয়োগের সুযোগদেয়া হয়েছে। আত্মপক্ষ সমর্থনের সব ধরনের সুযোগ তারা পাবেন। বিচার প্রক্রিয়ায় সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও অন্যান্য পর্যবেক্ষকদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। বিচারের যেকোন অংশ চাইলে যে কেউ রেকর্ড করার সুযোগ পাবেন।

ড. ইউনূস বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিসি) প্রসিকিউটর করিম খান সম্প্রতি আমার সাথে দেখা করেছেন। তিনি আইসিটি প্রসিকিউটর এবং অন্যান্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে সম্মতহয়েছেন এবং আইসিটিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিদিয়েছেন। আলাদাভাবে আমরা গণহত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা করবো বলে তাকে জানিয়েছি।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৪
এমইউএম/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।