ঢাকা, রবিবার, ২৯ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্রথম আলোর ঈদ শুভেচ্ছা কার্টুনে কুকুরের ছবি

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৫
প্রথম আলোর ঈদ শুভেচ্ছা কার্টুনে কুকুরের ছবি

তওবা রক্ষা করেননি প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। ২০০৭ সালে ধর্ম অবমাননার কারণে সারা দেশের আলেম-ওলামাসহ সাধারণ মানুষ যখন মতিউর রহমানকে গ্রেপ্তার ও প্রথম আলো নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনে নামেন, সে সময় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের মধ্যস্থতায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা উবায়দুল হকের হাত ধরে প্রকাশ্যে ক্ষমাপ্রার্থনা ও তওবা করেন মতিউর রহমান।

তওবা করে বলেছিলেন ‘ধর্মে আঘাত আসে এমন কিছু আর কখনোই করবেন না। ’ কিন্তু গত পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগের দিন ৩০ মার্চ প্রথম পাতায় ঈদ শুভেচ্ছা কার্টুনে ঈদ মোবারক লেখার পাশে কুকুরের ছবি দিয়েছে ঈদ শুভেচ্ছায়। এই কুকুরের ছবি দেওয়ায় দেশের আলেমসমাজসহ সাধারণ মানুষ এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। বলছে, এটা একটা ধর্ম অবমাননার শামিল। তাকে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে হবে। প্রথম আলো নিষিদ্ধ করতে হবে।

জানতে চাইলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম বলেন, ঈদের চাঁদের পাশে কুকুরের ছবি প্রকাশ আপত্তিকর। এটা ধর্মীয় অবমাননার শামিল। কুকুরের ছবি দিয়ে তারা কী বোঝাল? বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আবদুল হাকিম বলেন, ঈদের খুশিতে একটা কুকুরের দৃশ্যমান ছবি দ্বারা মুসলমানদের একটা ধর্মীয় চেতনাকে হেয় করা হলো। এটা একটা ধর্ম অবমাননার শামিল।

ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ঈদের চাঁদের কার্টুনের সঙ্গে কুকুরের ছবি আঁকা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রথম আলো পত্রিকায় এই কার্টুন ছবির মাধ্যমে মুসলমানদের পবিত্র ঈদের চাঁদের সঙ্গে কুকুরের ছবি এঁকে ধর্মীয় অনুভূতিতে চরমভাবে আঘাত করা হয়েছে। এই কার্টুনের মাধ্যমে মুসলমানদের ঈদ উদ্‌যাপনকে চরমভাবে অবমাননা করা হয়েছে। মুসলমানদের বছরে দুইটা পবিত্র ঈদকে এভাবে কুকুরের ছবি আঁকার মাধ্যমে প্রথম আলো পত্রিকা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে। এই কার্টুনের জন্য প্রথম আলো পত্রিকাকে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

প্রথম আলোর এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায় বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি। গতকাল এক বিবৃতিতে দলের নির্বাহী সভাপতি মাওলানা এ কে এম আশরাফুল হক ও মহাসচিব মাওলানা মুমিনুল ইসলাম বলেন, প্রথম আলো ঈদসংখ্যায় কার্টুনে কুকুরের ছবি দিয়ে দেশের কোটি কোটি মুসলমানের হৃদয়ে ও ইমানে আঘাত করেছে। আমরা অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে দেখছি যে ওই পত্রিকাটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কিছুদিন পর পর ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে আঘাত করে আসছে। ইসলামবিরোধী সব তৎপরতা উসকে দিচ্ছে। নেজামে ইসলাম পার্টির নেতারা প্রথম আলো কর্তৃপক্ষকে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে ইসলামবিরোধী তৎপরতা থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানান।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশের মুসলমানদের বহির্বিশ্বে জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিত্রায়িত করার জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে মিডিয়াস্টার লিমিটেডের মিডিয়া হাউসগুলো। উসকানি দিয়ে দেশের মুসলমানদের সহিংসতায় জড়ানোর চেষ্টা করেছে। আর এ কাজ সবচেয়ে বেশি করেছে প্রথম আলো। বিগত সময়ে জঙ্গি নাটক তৈরি, ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দাড়ি, টুপি ও হিজাবের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রচারণা করেছে প্রথম আলো। আলেম-ওলামাগণ বলছেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা ও বিতর্কিত করার চেষ্টা প্রথম আলোর অনেক পুরোনো অভ্যাস।

দাড়ি-টুপিওয়ালাদের জঙ্গি সাজিয়ে মুসলমানদের দমন করতে চেয়েছে প্রথম আলো। অবসরপ্রাপ্ত মেজর মোহাম্মদ মোহসীন করিমের সঙ্গেও জঙ্গি নাটক সাজিয়েছিল প্রথম আলো। এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, দাড়ি-টুপি দেখলেই জঙ্গি নাটক সাজিয়েছে প্রথম আলো, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। মানুষ বলছে ইসলাম চর্চা করলেই প্রথম আলো তাদের জঙ্গি বলত। কেউ নবীজি (সা.)-এর সুন্নত পালন দাড়ি রাখলে তাকেও জঙ্গিও তকমা দিয়েছে প্রথম আলো।

দাড়ি-টুপি থাকলেই জঙ্গি বানিয়ে দেয়- এমনটা বলছে সাধারণ মানুষ। এদিকে বিভিন্ন সময়ে খবর প্রকাশ করে জঙ্গিবাদকে উসকে দিয়েছে প্রথম আলো। আপনার সন্তান জঙ্গি হচ্ছে না তো? এসব খবর যতটা না মানুষকে সচেতন করত, তার চেয়ে বেশি বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র তকমা দিত। আলেম ও মুসলমানদের ধ্বংস করতে বাংলাদেশে এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে প্রথম আলো।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৫
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।