ঢাকা, রবিবার, ৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সাঙ্গু নদীর তীরে সপ্তাহব্যাপী বৈসাবি উৎসব

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৫
সাঙ্গু নদীর তীরে সপ্তাহব্যাপী বৈসাবি উৎসব

বান্দরবান: পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব বৈসাবি শুরু হয়েছে।

শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে বান্দরবানের সাঙ্গু নদীতে ফুল উৎসর্গের মাধ্যমে চাকমা সম্প্রদায়ের বিজু ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের বিষু উৎসব শুরু হয়।

পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে বরণ করে নিতে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে সপ্তাহব্যাপী নানা আয়োজনে চলবে এ আয়োজন।

ভোরের আলো ফুটতেই বান্দরবানে বসবাসরত তঞ্চঙ্গ্যা ও চাকমা সম্প্রদায়ে শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী নর-নারী উপস্থিত হয় সাঙ্গু নদীর তীরে।

এ সময় সাঙ্গু নদীর পানিকে লক্ষ্য করে মোমবাতি, ধূপ জ্বালানোর পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা ফুল উৎসর্গ করে ফুল বিজু ও বিষু উৎসবের শুরু করে। এ সময় বিভিন্ন পাড়া ও গ্রামের তঞ্চঙ্গ্যা ও চাকমা সম্প্রদায়ের যুবক-যুবতীরা একত্র হয়ে গঙ্গা মাকে প্রণাম জানায় এবং অতীতের সব দুঃখ, কষ্ট ও গ্লানি মুছে আগামীর নতুন সুন্দর দিনের প্রত্যাশা কামনা করেন।

নববর্ষের এ আনন্দে একসঙ্গে সবাই মিলিত হওয়ায় খুশি তরুণ-তরুণী থেকে শিশু ও বৃদ্ধরা।

বাংলা বর্ষপঞ্জিকা অনুসারে বছরের শেষ দুদিন ও বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন চাকমারা ফুল বিজু, মূল বিজু ও গোজ্যেপোজ্যে এ তিনদিন বিজু পালন করে থাকে। আগামীকাল মূল অনুষ্ঠান চাকমাদের ঘরে ঘরে হরেক রকমের মিশ্রনে পাজন রান্না করে পরিবেশন করা হবে, নতুন কাপড় পরিধান করে দলবেঁধে পুরো গ্রাম ঘুরে বেড়াবে তরুণ তরুণীরা। তাছাড়া সাধ্যানুসারে ঘরে ঘরে বিভিন্ন রকমের পিঠা তৈরি করে বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন এমনকি কারোর সঙ্গে অতীতে বৈরিতা বা ঝগড়া, মনোমালিন্য থাকলেও এদিন সবাই ভুলে গিয়ে একে অপরকে ক্ষমা করে দিয়ে নিজের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে পিঠাসহ হরেক রকম খাবার পরিবেশন করে।

তিন পার্বত্য জেলা বিশেষ করে বান্দরবান পার্বত্য জেলায় বাঙালি ছাড়াও ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে যা দেশের অন্য কোনো জেলায় নেই। ১১ জাতি সত্তার নানা বৈচিত্রময় জীবনধারা, নানা সংস্কৃতির সম্মিলন উৎসবে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে বলে জানান আয়োজকরা।

বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা কল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল তঞ্চঙ্গ্যা জানান, প্রতি বছরের মতো এবারো আমরা বর্ণাঢ্য আয়োজনে সাঙ্গু নদীতে ফুল উৎসর্গ করে আমাদের এবারের বৈসাবির আয়োজন শুরু করেছি আর এতে চাকমা, তঞ্চঙ্গ্যাদের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মালম্বী যোগ দিচ্ছে।  

তিনি আরও জানান, ফুল ও বিজু মাধ্যমে বান্দরবানে বৈসাবির আয়োজন শুরু হয়েছে, আর সপ্তাহব্যাপী নানা ধর্মীয় ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে চলবে বৈসাবির এ  আয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৫
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।