ঢাকা: ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নবায়নযোগ্য শক্তি অর্থায়নের দীর্ঘমেয়াদি পথ-নকশা দাঁড় করানো একান্ত জরুরি বলে উন্নয়ন সমন্বয়ের সেমিনারে বিশেষজ্ঞ আলোচকরা অভিমত প্রকাশ করেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাজধানীর বাংলামোটরের বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবনে “বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য শক্তি অর্থায়ন: বিদ্যমান ধারা ও আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ’ শীষর্ক সেমিনারে থেকে এ কথা বলা হয়।
সেমিনারে বাংলাদেশ ব্যাংকের টেকসই অর্থায়ন বিভাগের সাবেক পরিচালক, বিআইবিএমের ফ্যাকাল্টি মেম্বার, টেকসই অর্থায়ন বিশেষজ্ঞ খোন্দকার মোরশেদ মিল্লাত বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বর্তমানে যে ধারায় নবায়নযোগ্য শক্তি উদ্যোগে ঋণ সরবরাহ করছে তা অব্যাহত রাখলে ২০৪০ সাল নাগাদ দেশের নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে বিনিয়োগ চাহিদার ১০ শতাংশেরও কম পূরণ করতে পারবে দেশীয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। তাই দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নবায়নযোগ্য শক্তি অর্থায়ন বলশালী করতে দীর্ঘমেয়াদি পথ-নকশা দাঁড় করানো একান্ত জরুরি।
তিনি আরও বলেন, বৃহদাকার নবায়নযোগ্য শক্তি প্রকল্প অর্থায়নের সীমাবদ্ধতা দূর করতে অনেকগুলো ব্যাংক একযোগে অর্থায়নের উদ্যোগ নিতে পারে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও ব্যক্তি খাতের ব্যাংক একযোগে কাজ করতে পারে, কেননা বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। এছাড়াও বিদেশি ব্যাংকগুলোর অভিজ্ঞতাও এক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয়ের আয়োজনে এ সেমিনারে বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন, পূবালী ব্যাংক পিএলসির এমডি ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আলী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইনান্স বিভাগের নির্বাহী পরিচালক এ. কে. এম. এহসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও সহযোগী অধ্যাপক ড. এস. এম. নাসিফ শামস, স্রেডা-এর পরিচালক প্রকৌশলি মো. মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশ পাওয়ার অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের (বিপিএমআই) ডিরেক্টর মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, এবং বাংলাদেশ সাসটেইনেবল অ্যান্ড রিনিউবেল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আল মামুদ।
উন্নয়ন সমন্বয়ের পক্ষে সেমিনারে প্রেক্ষাপট উপস্থাপন করেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক আব্দুল্লাহ নাদভী। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সরকারের বাজেটারি পদক্ষেপের পাশাপাশি মুদ্র্রানীতিতে এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি।
বর্তমানে বাংলাদেশে ‘গ্রীন ফাইনান্স’-এর যে সংজ্ঞা বা মান নির্ধারিত রয়েছে তা আন্তর্জাতিক মানে সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন এদেশে নবায়নযোগ্য শক্তির প্রসারে ১.৩ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সে অর্থসহ নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে অন্যান্য বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে এমন অসঙ্গতি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
সেমিনারে আলোচনায় অংশ নেন নবায়নযোগ্য শক্তি উদ্যোক্তা, বিশেষজ্ঞ-গবেষক, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। তাদের আলোচনায় নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে ঋণ প্রবাহ বাড়াতে ক্রেডিট গ্যারন্টি স্কিম, ছোট আকারের প্রকল্পের জন্য জামানতবিহীন ঋণ, সোলার রুফটপ-ভিত্তিক প্রকল্পের প্রসারের জন্য ইউটিলিটি কোম্পানি-কেন্দ্রিক অর্থায়নের মডেল ইত্যাদি বিষয় উঠে আসে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৫
আরকেআর/জেএইচ