ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঢাকা একটা চরিত্রহীন শহর: ফাওজুল কবির

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২৫
ঢাকা একটা চরিত্রহীন শহর: ফাওজুল কবির

ঢাকা: ঢাকাকে একটি চরিত্রহীন শহর বলে উল্লেখ করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক ও জনপথ এবং সেতু ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে বাংলাদেশ স্থাপত্য ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে কেএসআরএম-আইএবির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ডস ফর ফিউচার আর্কিটেক্টস’ পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফাওজুল কবির খান বলেন, ঢাকা হচ্ছে একটা চরিত্রহীন শহর। এটা কি শহর বলেন? আমি কয়েকদিন আগে কাতারে গিয়েছিলাম। দোহায় গেলে আপনি বুঝতে পারবেন এটা একটা আরবের শহর। আমরা কেন এই শহরকে একটা চরিত্র দিতে পারলাম না। আমাদের যদি উত্তরাধিকারের কথা বলি, আমাদের একটা মোগল ঐতিহ্য ছিল। আহসান মঞ্জিল, লালবাগের কেল্লার সূত্র ধরে আমাদের আর্কিটেকচার গড়ে উঠতে পারতো।

আমাদের যে ব্রিটিশ শাসন ছিল, সেটারও একটা আর্কিটেকচার প্যাটার্ন ছিল, সেটা ধরেও এগোনো যেত। সেটা না হয় বাদ দেন, আমাদের আবহমান বাংলার বাড়ি ঘর নির্মাণের যে ঐতিহ্য আছে, যেমন কুঁড়েঘর, মুন্সিগঞ্জে টিন ও কাঠের দোতলা ঘর, আমরা কোনটাই গ্রহণ করলাম না। আমাদের আর্কিটেকচাররা অনেক আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন। কেউ যেন ঢাকায় এসে বুঝতে পারে যে আমি ঢাকায় আসছি। আমি নতুনদেরকে অনুরোধ করবো এটা কিভাবে অর্জন করা যায়। আত্মপরিচয় ছাড়া কোন শহর উন্নতি করতে পারে না। আপনারাই নির্ধারণ করবেন আপনারা কোথায় যাবেন।

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা আরও বলেন, প্রকল্পের আচরণ দেখে মনে হয় আমাদের বিশাল একটা দেশ এবং ভূমির পরিমাণ অপরিসীম। প্রতিদিন ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ আমি ২০০ কোটি, ১০০ কোটি, ৮০ কোটি টাকা স্বাক্ষর করি। এভাবে যদি চলে তাহলে আমাদের তো রাস্তায় মানুষকে কবর দিতে হবে। মানুষের কবর দেয়ার জায়গাও থাকবে না। একটা রাস্তা আছে, সেটা ব্যবহার না করে নতুন আরেকটা এলাইমেন্ট করবে। নতুনভাবে ভূমি অধিগ্রহণ করবে, এটা দুর্নীতির একটা বিরাট চক্র। আমি বলে দিয়েছি, না এটা হবে না, মাল্টি মডেল রোড ডেভেলপ করবা। জমি স্বল্পতার কারণে আমরা একটা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি, যেটা ৬৪ জেলাকে মাটির উপর দিয়ে (উড়াল সড়ক) কানেক্ট করা হবে।

তিনি বলেন, কাজ করার জন্য আমাদের হাতে যে সময় আছে তা যথেষ্ট নয়। তবু আমরা কিছু কিছু কাজে হাত দিয়েছি নগরকে যানজটমুক্ত ও বাসযোগ্য করার জন্য। বিভিন্ন কাজে পেশাদারদের সম্পৃক্ত করার কাজও আমরা করে যাচ্ছি। উপযুক্ত জায়গায় উপযুক্ত এবং যোগ্য ব্যক্তির নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ (আইএবি) সভাপতি স্থপতি ড. আবু সাঈদ এম আহমেদ, কেএসআরএমের মহাব্যবস্থাপক (মার্কেট রিচার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) কর্নেল (অব.) আশফাকুল ইসলাম। জুরি বোর্ডের পক্ষে বক্তব্য দেন স্থপতি আসিফ মো. আহসানুল হক। স্বাগত বক্তব্য দেন অ্যাওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর স্থপতি সাকিব আহসান চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইএবি সহ-সাধারণ সম্পাদক স্থপতি ড. মো. নওরোজ ফাতেমী, সম্পাদক (শিক্ষা) স্থপতি ড. মো. মারুফ হোসেন, সম্পাদক (প্রকাশনা ও প্রচার) স্থপতি মো. শফিউল আযম শামীম, কেএসআরএমের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম, উপ-মহাব্যবস্থাপক মোজাম্মেল হক, নাজমুল হুদা, আলী কবির, উপ-ব্যবস্থাপক সৈয়দ তানভীরুল হাসান, ব্যবস্থাপক সাইফ মাওলা, প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মিজান উল হক, মিথুন বড়ুয়া, মো. মুন রহমান মুন্নাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, কেএসআরএম ও আইএবির মধ্যে ২০১৯ সালে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তির আওতায় এবার ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ৪৪টি গবেষণাপত্র রাজধানী ঢাকার আগারগাঁও স্থপতি ইনস্টিটিউটে ২৭ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত প্রদর্শন করছেন। এরমধ্যে নির্বাচিত তিন সেরা প্রকল্প উপস্থাপনকারী শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২৫
আরকেআর/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।