ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সড়ক প্রশস্ত করতে ঐতিহাসিক নিদর্শন ভাঙার অভিযোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০২০
সড়ক প্রশস্ত করতে ঐতিহাসিক নিদর্শন ভাঙার অভিযোগ

বরিশাল: ব্রিটিশ ও পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলনের নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বিপ্লবী কুমুদ বিহারী গুহ ঠাকুরতা’র (কুমুদা) স্মৃতি স্তম্ভ ও সমাধিস্থল ভাঙার অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সড়ক প্রশস্তের নামে গত মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলায় ওই ঘটনা ঘটে।

তবে স্মৃতি স্তম্ভ ভাঙা হয়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ আব্দুল্লাহ সাদীদ। তিনি জানান, সড়ক সংস্কার করতে গিয়ে শ্রমিকরা ভুলবশত একটি অংশের দেয়াল ভেঙে ফেলে। আমরা বিষয়টি দেখেছি এবং শ্রমিকদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি ভাঙা অংশটুকু সংস্কার ও গোটা স্থানটিকে আধুনিকায়ন করা হবে। সে সঙ্গে ওইখানে একটি ছাউনিও নির্মাণ করে দেওয়া হবে।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েকদিন আগে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রাচীর ভেঙে ফেলা হয়। আর মঙ্গলবার বিপ্লবী কুমুদ বিহারী গুহ ঠাকুরতা’র স্মৃতি স্থাপনা ও সমাধির অংশ ভাঙা হয়।

স্থানীয়রা বলছেন, সড়ক সংস্কারের নামে ঐতিহাসিক স্থাপনা এবং মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয়ের দেয়াল ভেঙে ফেলায় তীব্র সমালোচনার মুখে পুনর্নির্মাণের এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৯০৪ সালের ৮ ডিসেম্বর বানারীপাড়ায় নিজ পিত্রালয়ে তমাল তলায় জন্মগ্রহণ করেন বিল্পবী কুমুদ বিহারী গুহ ঠাকুরতা। তার পিতা ছিলেন শরৎ গুহ ঠাকুরতা ও মাতা ছিলেন ভুবন মহীনি দেবী। তাদের চার ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে কুমুদা ছিলেন সবার ছোট। তিনি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলতেন। আন্দোলন করতে গিয়ে বিয়ে করা হয়নি তার। প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যতক্ষণ পর্যন্ত দেশ (অর্থাৎ বর্তমান ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ) স্বাধীন না হবে ততদিনে তিনি বিয়ে করবেন না।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর তার পরিবার পূর্ব পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে চলে যায়। কিন্তু তিনি দেশ মাতৃকার টানে পূর্ব পাকিস্তানে থেকে যান। দেশে থেকে যাওয়ার সুবাদে পাকিস্তানের অত্যাচার শোষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বদা সরব থাকতেন। তিনি পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন করায় তাকে ৮ বার এবং ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে ১৭ বারসহ মোট ২৫ বার কারাগারে পাঠানো হয়। দুটো স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিল্পবী কুমুদ বিহারী গুহ ঠাকুরতা বানারীপাড়ায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বিভিন্ন শিক্ষা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। আর তার কোন বংশধর না থাকায় জন্মভিটাই স্মৃতিচিহ্ন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০২০
এমএস/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।