সাভার (ঢাকা): সাভারে হোটেল ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম লস্করকে (৪২) হত্যার ১০ দিনপর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেসটিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনা উদঘাটন করতে গিয়ে জড়িত আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঢাকা জেলা পিবিআই’র পুলিশ সুপার (সেবা) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বিষয়টি জানান।
এর আগে, ১৩ অক্টোবর ডাকাত দলের নেতা আসামি বসির মোল্লাকে সাভার থেকে গ্রেফতার করে তার দেওয়া তথ্য মতে সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই ও রাজধানীর ডেমরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলো- দলনেতা হলেন পটুয়াখালী জেলার দুমকি থানার আঙ্গারিয়া গ্রামের মৃত রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে বসির মোল্লা (৪২), ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার নাওড়া গ্রামের জবেদ আলী শেখের ছেলে শেখ হাফিজ (৩৫), মুন্সিগঞ্জ জেলার টুঙ্গীবাড়ি থানার ডোরাপতি গ্রামের নুরুল হকের ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩৫), ধামরাইয়ের কেলিয়া পশ্চিম পাড়া এলাকার আব্দুল ওহাবের ছেলে আমির হোসেন (২৮), বাগেরহাট জেলার মংলা থানার বাজিগারখন্ড এলাকার শাহ আলমের ছেলে আল আমিন (২৮), আশুলিয়ার নলাম তারিগরপাড়া এলাকার মৃত জাহাঙ্গীরের ছেলে জুয়েল (৩২), নোয়াখালী জেলার সেনবাগ থানার ফতেহপুর গ্রামের হুমায়ুন কবিরের ছেলে নঈম (২২), টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানার ভুখন্ডি গ্রামের সুভাস মণ্ডলের ছেলে তপন (২৮) ও টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানার ষাটশালা গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে নাজমুল (৩০)। তারা সবাই ড্রাইভার ও হেলপার এবং সাভার, ধামরাই ও যাত্রাবাড়িতে থেকে আন্তঃজেলা ডাকাত দল প্রতিষ্ঠা করে দীর্ঘদিন ধরে বাসে ডাকাতি করতো।
পিটিআই’র তথ্যমতে, গত ৫ অক্টোবর সাভারের বলিয়ারপুরে রবিউল ইসলাম লস্কর নামের এক হোটেল ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পিবিআই’র রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করলে জানা যায়, গত ৫ অক্টোবর বিকেলে রবিউল ভাগিনার সঙ্গে দেখা করার জন্য কর্মস্থল মিরপুর থেকে আশুলিয়ার জামগড়ার যান। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার ব্যক্তিগত মোবাইল থেকে তার মেয়ের সঙ্গে শেষ কথা বলেন তিনি। পরে রাত ১২টার দিকে একই মোবাইল থেকে তার মায়ের ফোন নম্বরে ফোন করে রবিউল খুন হয়েছে বলে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি ফোন করে জানায়। এ ঘটনায় গত ১৩ অক্টোবর সাভার থেকে ডাকাত দলনেতা বসির মোল্লাকে গ্রেফতার করে পিবিআই। পরে তার দেওয়া তথ্যমত সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই ও ডেমরা থেকে আরও ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। সেই সঙ্গে বাস ও হুইলরেঞ্জ জব্দ করা হয়।
এ ব্যাপারে পিবিআই’র পুলিশ সুপার (সেবা, ঢাকা) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, গত ৪ অক্টোবর গ্রেফতাররা ঢাকা-টাঙ্গাইল রুটের নিরালা পরিবহনের একটি বাস কুয়াকাটা যাওয়ার কথা বলে তিনদিনের জন্য রিজার্ভ নেয়। পরে এই পরিবহন দিয়ে মানিকগঞ্জ ও রাজবাড়িতে ডাকাতির কাজ শেষ করে ফেরার সময় আশুলিয়ার নবীনগর থেকে রবিউলকে বাসে ওঠায়। বাসের ভিতরে ডাকাতির সময় রবিউল চিৎকার করলে তাকে ডাকাত সদস্যরা চেপে ধরে ও দলনেতা লাঠি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই রবিউল মারা যান।
ডাকাত দলটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রুটের গাড়ি ভাড়া নিয়ে স্টিকার পরিবর্তন করে রং দিয়ে বিভিন্ন রুটের নাম লিখে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ডাকাতি করে আসছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২০
এনটি
