ঢাকা, শনিবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ২৫ হাজার কৃষক পাচ্ছেন সার ও বীজ সহায়তা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০২০
প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ২৫ হাজার কৃষক পাচ্ছেন সার ও বীজ সহায়তা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ২৫ হাজার কৃষক পাচ্ছেন সার ও বীজ সহায়তা। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ও রবি মৌসুমে ফসলের উৎপাদন বাড়াতে পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় রাজশাহীতে ২৫ হাজার জন কৃষককে দুই কোটি ১৮ লাখ ৪৯ হাজার ৯০০ টাকার সার ও বীজ সহায়তা দিচ্ছে সরকার। একই সঙ্গে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় রবি মৌসুমের জন্য সার ও সাত প্রকার বীজ বাবদ দুই কোটি ৩৩ লাখ ৪৩ হাজার ৮০০ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।

রাজশাহী জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, দফায় দফায় বন্যায় রাজশাহীর ৩৮ হাজার ৪৫০ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এর মধ্যে ২৮ হাজার ৯০৩ দশমিক পাঁচ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। যার আর্থিক ক্ষতি ৫১ কোটি ১৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা। এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে রবি মৌসুমে গম, সরিষা, সূর্যমুখী, চীনাবাদাম, মসুর, খেসারি, টমেটো ও মরিচ ফসলের জন্য জেলার নয়টি উপজেলার অধিক ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ ও সার সহায়তা দেওয়া হবে।

কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত একটি কৃষক পরিবার এক বিঘা জমির জন্য গমের ক্ষেত্রে প্রতি কৃষক ২০ কেজি বীজ, সরিষার ক্ষেত্রে এক কেজি বীজ, চীনা বাদামের ক্ষেত্রে ১০ কেজি বীজ, মসুরের ক্ষেত্রে পাঁচ কেজি, খেসারির ক্ষেত্রে আট কেজি বীজ, সূর্যমুখীর ক্ষেত্রে এক কেজি বীজ, টমেটোর ক্ষেত্রে ০.০৫ কেজি বীজ ও মরিচের ক্ষেত্রে ০.৩০ কেজি বীজ পাবেন। প্রত্যেক কৃষক সর্বোচ্চ ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার সহায়তা হিসেবে পাবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তানোর উপজেলায় এক হাজার ৫০ জন কৃষককে বীজ খাতে ১১ লাখ ৬১ হাজার ৬০০ টাকা, সার খাতে এক লাখ ৮৬ হাজার টাকা, অন্যান্য খাতে ৯৬ হাজার ৯০০ টাকাসহ মোট আর্থিক বরাদ্দ ১৪ লাখ ৪৪ হাজার ৩৯০ টাকা।

মোহনপুরে চার হাজার ২০০ জন কৃষককে বীজে ১৯ লাখ ৬৩ হাজার ৮০০ টাকা, সারে সাত লাখ ৬৪ হাজার ৭৫০ টাকা, অন্যান্য খাতে দুই লাখ ৮৫ হাজার ৬৩০ টাকাসহ মোট আর্থিক বরাদ্দ ৩০ লাখ ১৪ হাজার ১৮০ টাকা।

পবা উপজেলায় এক হাজার ৩৫০ জন কৃষককে বীজ খাতে বরাদ্দ ১২ লাখ ২৯ হাজার ৮০০ টাকা, সার খাতে বরাদ্দ এক লাখ ১৫ হাজার টাকা, অন্যান্য খাতে বরাদ্দ ৭১ হাজার টাকাসহ মোট আর্থিক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৪ লাখ ১৬ হাজার ৭৩০ টাকা।

বাগমারায় ১১ হাজার ৩০০ জন কৃষককে বীজ খাতে ৭৪ লাখ ৬৪ হাজার, সারে ১৫ লাখ ৮২ হাজার, অন্যান্য খাতে আট লাখ ৫৬০ টাকাসহ মোট বরাদ্দ ৯৮ লাখ ৪৭ হাজার ৬০ টাকা।

চারঘাটে ৭৫০ জন কৃষককে ছয় লাখ ৭৩ হাজার টাকার বীজ, ৬৪ হাজার ২৫০ টাকার সার, অন্যান্য খাতে বরাদ্দ ৪৭ হাজার ৪৬০ টাকাসহ উপজেলায় মোট আর্থিক বরাদ্দ সাত লাখ ৮৪ হাজার ৯১০ টাকা।

দুর্গাপুরে এক হাজার ২৫০ জন কৃষককে বীজ খাতে আট লাখ ৮০ হাজার ৬০০ টাকা, সার খাতে এক লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা, অন্যান্য খাতে ৭৮ হাজার ৫০ টাকাসহ মোট ১১ লাখ ২১ হাজার ১৫০ টাকা সহায়তা দেওয়া হবে।

বাঘা উপজেলায় এক হাজার কৃষককে বীজ খাতে আট লাখ ৯৯ হাজার টাকা, সারে ৯৮ হাজার ২৫০ টাকা, অন্যান্য খাতে ৬৪ হাজার ৯৮০ টাকসহ মোট আর্থিক বরাদ্দ ১০ লাখ ৬২ হাজার ২৩০ টাকা।  

পুঠিয়া উপজেলায় দেড় হাজার কৃষককে বীজ খাতে আর্থিক বরাদ্দ ১০ লাখ ৮১ হাজার ৬০০ টাকা, সার খাতে আর্থিক বরাদ্দ এক লাখ ৯২ হাজার ৭৫০ টাকা, অন্যান্য খাতে ৯৬ হাজার ৫৯০ টাকাসহ মোট আর্থিক বরাদ্দ ১৩ লাখ ৭০ হাজার ৯৪০ টাকা।

গোদাগাড়ীতে দুই হাজার ৫০ জন কৃষককে ১৩ লাখ ৭৪ হাজার টাকার বীজ, দুই লাখ ৮৪ হাজার টাকার সার, অন্যান্য খাতে এক লাখ ২৯ হাজার ৭১০ টাকাসহ মোট ১৭ লাখ ৮৮ হাজার ৩১০ টাকার আর্থিক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক উম্মে ছালমা বাংলানিউজকে বলেন, ইতোমধ্যে জেলা কৃষি পুনর্বাসন বাস্তবায়ন কমিটির বৈঠকে উপজেলা পর্যায়ে বিতরণের বিভাজন সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় কৃষকদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। ওই তালিকা অনুযায়ী খুব শীঘ্রই এসব সহায়তা কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। আশা করছি, কৃষকদের সঠিকভাবে এসব সহায়তা দেওয়া হলে এবং এর যথাযথ ব্যবহার হলে বন্যায় যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নেওয়া অনেকটাই সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০২০
এসএস/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।