ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

অনুমোদন নেই মাইন্ড এইড হাসপাতালের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২০
অনুমোদন নেই মাইন্ড এইড হাসপাতালের কথা বলছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন অফিসার ডা. মইনুল আহসান। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: রাজধানীর আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালের কোনো রকম অনুমোদন নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন অফিসার ডা. মইনুল আহসান।

মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান তিনি।

ডা. মইনুল আহসান বলেন, ‘২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মাইন্ড এইড হাসপাতাল চালানোর জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। আমরা তখন পরীক্ষা করে দেখেছি হাসপাতালটি চালানোর মত সুবিধা ও জনবল কিছুই তাদের ছিল না। সেজন্য মার্চ মাসে তাদের আবেদন আমরা পেন্ডিং (স্থগিত) করি। ’

তিনি আরও বলেন, ‘স্থগিত আদেশের পর তারা যদি কোনো চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে থাকে তা সম্পূর্ণ অবৈধ। তারা এটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র ও পুনর্বাসন কেন্দ্র হিসেবে চালাচ্ছিল। এসব প্রতিষ্ঠান চালাতে হলে কিছু ক্লিনিক্যাল ফ্যাসিলিটিজ ও হাসপাতালে ব্যবস্থা রাখতে হয়। যেন জরুরি মুহূর্তে চিকিৎসা দেওয়া যায়। কিন্তু তাদের সে ব্যবস্থা ছিল না। ’

ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন অফিসার বলেন, ‘মাইন্ড এইড হাসপাতাল আমাদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি, এ কারণেই এটা বন্ধ করার মতো অবস্থায় নেই। এই ঘটনার শুরু থেকে তদন্ত করে হাসপাতালের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ যে ব্যবস্থা নেওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধে সেটা আমরা করব। ’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের হাসপাতালে কোন অনুমতি ছিল না। হাসপাতালে অনুমতি দেওয়ার পরে যদি কেউ কোনো ব্যত্যয় ঘটিয়া থাকে, তখন সেই বিষয়গুলো আমরা দেখে থাকি। ঢাকা একটি জনবহুল শহর, এখানে প্রায় কয়েক হাজারের মতো চিকিৎসা স্থাপনা আছে। এই হাসপাতাল গুলোর আমরা দেখভাল করছি এগুলো আমাদের চলমান প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। আমরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। হাসপাতালে ভেতরের সব খবর আমরা পাই না। যখনই জানতে পারি, সে অনুযায়ী আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেই। আমাদের বর্তমান মহাপরিচালক জয়েন করার পরে কোন না কোন জায়গায় প্রতিদিনই অভিযান চলে।  

হাসপাতালটির বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তাদের কোনো অনুমতি না থাকার কারণে হাসপাতালটি আমরা সিলগালা করছি না। তারা আমাদের কাছে যে অনুমতি চেয়েছিল সেটা আমরা বাতিল করে দেবো। এই হাসপাতালটি যেন পরবর্তীতে চালানোর জন্য, তারা কোন প্রকার ব্যবস্থা নিতে না পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেব। ’

সোমবার (০৯ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আনিসুলকে মাইন্ড এইড হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালটিতে ভর্তির কিছুক্ষণ পরই কর্মচারীদের ধস্তাধস্তি ও মারধরে তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করে আনিসুলের পরিবার।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় কর্মচারীরা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। ঘটনার পর হাসপাতালের অ্যাগ্রেসিভ ম্যানেজমেন্ট রুমে তাকে মারধরের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, হাসপাতালে ঢোকার পরই আনিসুল করিমকে ৬ থেকে ৭ জন টেনে-হেঁচড়ে একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মাথার দিকে থাকা দুইজন হাতের কনুই দিয়ে আনিসুল করিমকে আঘাত করছিলেন। এ সময় একটি কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুল করিমের হাত পেছনে বাঁধা হয়। চার মিনিট পর তাকে যখন উপুড় করা হয়, তখনই ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন তিনি। এ ঘটনায় সোমবার রাতে প্রথমে ছয়জনকে আটক করে পুলিশ। পরে আরও একজনকে আটক করা হয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র আনিসুল করিম ৩১ বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। এক সন্তানের জনক আনিসুলের বাড়ি গাজীপুরে। সর্বশেষ আনিসুল করিম বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনারে দায়িত্বে ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২০
এমএমআই/জেআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।