ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্কুলছাত্র মাইনুদ্দিনের পরিবারকে ট্রেড লাইসেন্স দিলেন মেয়র

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২১
স্কুলছাত্র মাইনুদ্দিনের পরিবারকে ট্রেড লাইসেন্স দিলেন মেয়র নিহত এসএসসি পরীক্ষার্থী মো. মাঈনুদ্দিনের মাকে শান্তনা দিচ্ছেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল

ঢাকা: রামপুরায় বাসচাপায় নিহত এসএসসি পরীক্ষার্থী মো. মাঈনুদ্দিনের পরিবারকে ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছেন ঢাকা উক্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। মাইনুদ্দিনের পরিবার যাতে বৈধভাবে রামপুরায় চা এবং মুদি সদাই বিক্রির ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন সেজন্য সুন্দরভাবে দোকান মালামাল দিয়ে সাজিয়ে দেওয়ার আবদার করেছেন তিনি।

সেই সঙ্গে মাইনুদ্দিনের বড় ভাই মনিরকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি চালক হিসেবে নিয়োগের প্রতিশ্রুতিও দেন ডিএনসিসির মেয়র।

রাজধানীর পূর্ব রামপুরায় তিতাস রোডে বাসচাপায় নিহত এইচএসসি পরীক্ষার্থী মাইনুদ্দিনের বাসায় মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে সমবেদনা জানাতে এসে এই উপহার দেন ডিএনসিসি মেয়র।

তিনি বলেন, মাইনুদ্দিনকে আল্লাহ-তাআলা নিয়ে গেছেন। আমরা সবাই তার জন্য দোয়া করি আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতবাসী করুন। এই সময় আমরা দোয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারব না। মাইনুদ্দিনকে হারানোয় কোনো শান্তনা দেওয়ার ভাষা আমার জানা নেই, তাই শুধু দোয়া করতে পারি।

এ সময় মাইনুদ্দিনের মাকে শান্তনা দিয়ে মেয়র আতিকুল বলেন, কিছু মনে না করলে, আমি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে একটি ট্রেড লাইসেন্স সঙ্গে নিয়ে এসেছি। আপনার আগের যে চায়ের দোকান ছিল সেটি এখন বৈধ হয়ে গেল। এখানে চায়ের দোকান ও মুদি দোকানের একসঙ্গে ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে। এখানে আপনারা যতদিন থাকবেন ততদিন নিশ্চিন্তে দোকান করুন, কেউ কিছু বলবে না।

আর যদি এখানে দোকান না থাকে বা উচ্ছেদ হয় তবে ঢাকার যে কোনো জায়গাতে আমি আপনাদের একটি স্থায়ী দোকানের ব্যবস্থা করে দেব৷

এছাড়া ৫০ হাজার টাকার একটি খাম মাইনুদ্দিনের মায়ের হাতে দিয়ে মেয়র বলেন, আসলে সন্তান হারানোর বেদনার কাছে টাকা কিছুই নয়। তবুও এই পরিস্থিতিতে সামান্য এই টাকা রাখুন, বিপদে-আপদে কাজে লাগবে।

তখনও মাইনুদ্দিনের মা রাশেদা বেগম ও বাবা আব্দুর রহমান ছেলে হারানোর শোকে কাঁদছিলেন। রাশেদা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন মাইনুদ্দিনের লেখাপড়ার খরচ দিতে আমাদের খুব কষ্ট হতো। তারপরও ছেলের পড়ালেখা চালিয়ে আসছিলাম। মাইনুদ্দিন বলতো মা আমি পড়ালেখা করে সরকারি চাকরি করবো, তারপর তোমাদের সব টাকা দিয়ে দেব, আর আমরা সচ্ছলভাবে চলব৷ কিন্তু ছেলের সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না৷ মাইনুদ্দিনের বড়ভাই মনির গাড়ি চালায়।

এ সময় মেয়র আতিকুল বলেন, আপনার বড় ছেলেকে সরকারি চাকরি দেওয়া খুবই কঠিন। কিন্তু আমরা সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি চালক নিয়োগ দেব সামনে। যদি মনিরের ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকে তবে আমি কথা দিচ্ছি তাকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি চালক হিসেবে নিয়োগ দেব।

মেয়র বলেন, আমি একা নই, সব সময় মনে করবেন আমরা আপানাদের সঙ্গে আছি। এলাকার সবাই আপনাদের সঙ্গে আছে।

সড়কে বাসচালক ও বাসমালিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা বাসমালিক আছেন, যারা সড়কে বাস চালান তারা নিজেদের কথা চিন্তা করবেন। যখন বাস চালাবেন, নিজেরা নিজেদের পরীক্ষা করবেন। নিজেদের যেমন নিরাপত্তা দরকার, সড়কেরও নিরাপত্তা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, আমি এবং দক্ষিণের মেয়র মিলে বাস-রুট ফ্রেঞ্চার্স নিয়ে কাজ করছি। আগামী ২৬ ডিসেম্বর মোহাম্মদপুরের ঘাটেরচর থেকে যাত্রাবাড়ী হয়ে সাইনবোর্ড পর্যন্ত একটি বাসরুট চালু করতে যাচ্ছি। এটি পরীক্ষামূলক চলবে।

এরপরও যদি বাস মালিক-চালকরা রগনীতে কোনো শৃঙ্খলা আনতে না পারেন তবে আমরা ঢাকার দুই মেয়র মিলে কীভাবে সড়কে শৃঙ্খলা আনতে হয় তাই আগামী ২৬ ডিসেম্বর দেখাব।

মেয়র আতিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া করে দেবেন, এটা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২১
এসজেএ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।