ঢাকা, শনিবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

উন্নত জাতের সয়াবিন আবাদে লাভবান হচ্ছেন কৃষক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২২
উন্নত জাতের সয়াবিন আবাদে লাভবান হচ্ছেন কৃষক

লক্ষ্মীপুর: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্পমেয়াদী নতুন জাতের সয়াবিন চাষে হেক্টর প্রতি প্রায় ৩ টন উৎপাদন সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ড. মো. গিয়াস উদ্দিন মিয়া। উন্নত জাতের এ সয়াবিন চাষে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন বলে জানান তিনি।

 

তিনি বলেন, বিইউ-১ ও বিইউ-২ জাতের সয়াবিন প্রদর্শনী পরিদর্শনে বোঝা যায়, বিইউ-১ জাতের সয়াবিনের আবাদের ৯৫ দিনের মধ্যে ফসল হারভেস্ট করা যায়। নতুন জাতের বিইউ-২ জাতের আবাদকৃত সয়াবিনে ১০দিন বেশি সময় লাগলেও উচ্চ ফলনশীল। উন্নত এ জাতের সয়াবিন উৎপাদনে বছরে হেক্টর প্রতি ১.৫৬ মেট্রিক টন থেকে ২.৩৮ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। এছাড়াও জীবনকাল প্রায় ২৫ থেকে ৩০ দিন কমেছে। এতে প্রোটিন অনেক বেশি। এতে ৫৬ শতাংশ বেশি প্রোটিন রয়েছে। যা অন্য কোনো শাক সবজিতে পাওয়া যায় না।  

সোমবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার খায়েরহাট এলাকায় ‘উন্নত জাতের ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সয়াবিন চাষ ও সম্প্রসারণ বিষয়ক সেমিনার ‘কৃষক সমাবেশ ও মাঠ দিবস’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান উপাচার্য।  

‘সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া’ নামক একটি এনজিও সংস্থা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।  

গিয়াস উদ্দিন বলেন, সারাবিশ্বে সয়াবিন একটি রয়েল ক্রপ। উৎপাদিত এ সয়াবিন তেল থেকে শুরু করে মানুষের খাবার, পশুর খাবারসহ এমন কোনো কিছুতে নেই সয়াবিনের ব্যবহার হয় না। নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার উপকূলীয় এ অঞ্চলগুলোতে আমন ও আউশের মাঝামাঝি সময়ে জমি খালি পড়ে থাকতো। কিন্তু বর্তমানে ওই সময়গুলোতে উন্নত জাতের সয়াবিন আবাদ করে কৃষক বেশ লাভবান হচ্ছেন। সয়াবিন চাষে কৃষকের বাড়তি দেখভাল করতে হয় না। যা চাষে লবণ সহিষ্ণু পরীক্ষিত।  

তিনি আরও বলেন, সয়াবিন উৎপাদন বাংলাদেশর জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল। এক সময় কৃষকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু বর্তমানে নতুন দুই জাতের সয়াবিনে বেশি উৎপাদন আসায় কৃষকরাও আগ্রহী হয়ে উঠছে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে জলাবদ্ধতায় এখানকার চাষিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ থেকে রক্ষা পেতে কৃষি জমির পাশে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করতে জেলা প্রশাসকের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।  

বক্তারা জানান, সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া সংস্থাটি উচ্চ ফলনশীল এ সয়াবিন বাজার ব্যবস্থাপনার সহজিকরণের লক্ষে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সমন্বয় করে কাজ করছে।  

এনজিও সংস্থাটি লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর ও নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার ৩৫ হাজার ৮৭০ জন চাষির মাধ্যমে ৩১ হাজার ২৩৫ হেক্টর জমিতে উন্নত জাতের সয়াবিন চাষ নিশ্চিত করেছেন। লবণ সহিষ্ণু জাতের বিস্তারের মাধ্যমে এনজিও সংস্থাটি উপকূলের এক লাখ চাষির মাঝে সয়াবিনের বিস্তার করবে। যা প্রতি বছর দুই লাখ মেট্রিক টন সয়াবিন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।  

জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিইউ-১ ও বিইউ-২ জাতের সয়াবিনের উদ্ভাবক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল করিম, সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার কান্ট্রি ম্যানেজার সেলিম রেজা হাসান, নোয়াখালী কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মূখ্য বৈজ্ঞানিক ড. মো. মহী উদ্দিন চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পী ও সলিডারিডাড এর জেলা সমন্বয়ক প্রদীপ কুমার প্রমুখ।  

এর আগে উন্নত জাতের সয়াবিন প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন আগত অতিথিরা। অনুষ্ঠানের শেষে সয়াবিনের তৈরি বিভিন্ন খাবার সামগ্রী ও উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত প্রযুক্তি মেশিনের স্টল পরিদর্শন করেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।