ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

আলোচনা সভায় বক্তারা

সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার সুবিধা সবাই যেন পায়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৭ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২২
সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার সুবিধা সবাই যেন পায় ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালুর ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো না করে সবার মতামত নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার সুবিধা যেন সবাই পায় সেদিকও গুরুত্ব দিতে পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

চলতি সরকারের শেষ বছরে সর্বস্তরের মানুষ ও আর্থিক বিষয় জড়িত এমন উদ্যোগ যদি নতুন কোনো সরকার আসে তাহলে তাদের জন্য বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে যাবে বলেও তারা উল্লেখ করেন।

বুধবার (১ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সার্বজনীন পেনশন ও কর ন্যায্যতা শীর্ষক প্রাক বাজেট আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। কোস্ট ফাউন্ডেশন এ আয়োজন করে।

আলোচনায় ড. কাজী খলিকুজ্জমান বলেন, আমরা চাই সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা দ্রুত হোক, কিন্তু সুন্দর হোক। নির্দিষ্ট একটা সময় নির্ধারণ হোক; যে এই সময়ের মধ্যে আইনটি করা হবে। এ সময়ের মধ্যে সবার পরামর্শের ভিত্তিতে যা যা করা দরকার তা করা হবে। কারণ, আমরা দেখেছি শিক্ষানীতি ২০১০ সালে করা হলেও এটি এখনও শুরু হয়নি।

তিনি বলেন, সার্বজনীন পেনশনের ক্ষেত্রে সার্বজনীনতা নিশ্চিত করতে হবে। ১৮ থেকে ৬০ বছরের যারা চাঁদা দেবে তারা পেনশন পাবেন। কিন্তু যারা চাঁদা দিতে পারবেন না তাদেরও আওতাভুক্ত কীভাবে করা যায় সেটাও ভাবতে হবে।

সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পরামর্শ দিয়ে ড. কাজী খলিকুজ্জমান বলেন, আইন এমনভাবে হতে হবে যাতে পিকে হালদার তৈরি না হয়। ব্যবস্থাপনা যাতে সুন্দর হয় সেটা দেখতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের ট্যাক্স নেট বাড়াতে হবে। কিন্তু ট্যাক্স দিয়ে নাগরিকরা যেন সেবা পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে৷ কারণ, উন্নত বিশ্বে নাগরিকরা ট্যাক্স দেন, রাষ্ট্র তাদের সেবা দেয়। কিন্তু আমাদের এখানে ট্যাক্স দেয়ার পর সেবা পাবে কিনা তা নিশ্চিত না! কারণ ট্যাক্সও দিচ্ছে আবার সন্তানের স্কুলের টিউশন ফিও এখানে দিতে হচ্ছে। ট্যাক্স দেওয়ার পর ডাক্তার দেখানোর পর তাকে ক্লিনিকে যাওয়ার জন্য বলা হয়।

কর ব্যবস্থার সঙ্গে পেনশনকে যুক্ত করা হলে দেশে করদাতার সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়বে এমন মন্তব্য করে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, এখন দেশে কর প্রদানকারী ট্যাক্সের বিপরীতে সরাসরি কোনো লাভ হয় না। পেনশন পাওয়ার গ্যারান্টি থাকলে দেশে করের ভিত্তি শক্তিশালী হবে। প্রত্যেক করদাতার নামে পেনশন হিসাব স্বয়ংক্রিয়ভাবে খোলা যেতে পারে। এবং করদাতার প্রদত্ত একটি অংশ (৫-১০ শতাংশ) পেনশন হিসেবে জমা হবে।

তিনি আরও বলেন, আগামী অর্থবছর থেকে করের অর্থ থেকে পেনশন তহবিল গঠন শুরু হোক। প্রতিবছর সরকার প্রাপ্ত ভ্যাটের ৫ থেকে ১০ শতাংশ সরকার পেনশন তহবিলে জমা দেবে। এটা এনবিআর সংরক্ষণ করবে। সরকার এ টাকা বিনিয়োগ করবে এবং মুনাফার অর্থ পেনশন তহবিলে জমা হবে।

তোফায়েল আহমেদ আরও বলেন, সার্বজনীন পেনশন একটি জটিল প্রক্রিয়া। তাই সুনির্দিষ্ট কিছু ধাপ স্থির করে অন্তত ৫ বছর সময় নিয়ে একটি রোডম্যাপ করা উচিত। এখানে টেকসই তহবিল, ভালো আইনি কাঠামো ও দক্ষ প্রশাসনিক সংগঠন প্রয়োজন।

আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলিকুজ্জমান আহমেদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০২২
এমএমআই/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ