ঢাকা, শনিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বাজারে বাহারি ফল, ক্রেতা কম

মাছুম কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৬ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২২
বাজারে বাহারি ফল, ক্রেতা কম

ঢাকা: চলছে মধু-মাস জ্যৈষ্ঠ। মাসটি এলেই কবি জসিমউদদীনের সেই ছড়াটি মনে পড়ে— ‘ঝড়ের দিনে মামার দেশে আম কুড়াতে সুখ, পাকা জামের মধুর রসে রঙিন করি মুখ।

বর্তমানে রাজধানীর বাজারগুলো দেশি-বিদেশি, মৌসুমি ও বারোমাসি ফলে সয়লাব। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস, লটকন, সফেদা, ঢেউয়া বিক্রি হচ্ছে রাজধানী জুড়ে। কলা, পেয়ারা, পেঁপের মতো বারোমাসি ফল আছেই, রয়েছে বাহারি নাম ও স্বাদের বিদেশি ফলও। এর মধ্যে চেরি, কাঠ লিচু, রাম্বুটান, কিউই, ড্রাগন, স্ট্রবেরির মত ফলগুলো দেখা গেছে।

রোববার (১১জুন) রাজধানীর বাদামতলী, কারওয়ান বাজার, পুরানা পল্টন, মহাখালী কাঁচা বাজারের ফলের বাজার, আড়ত ও খুচরা দোকান-গুলোয় ঘুরে এসব ফলের দেখা মিলেছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ফলের আড়তগুলো ঘুরে দেখা গেছে, ড্রাগন ফল ২০০-২২০ টাকা, কমলা ২০০, থাইল্যান্ডের রাম্বুটান ৭৫০-৮০০ টাকা, নিউজিল্যান্ডের কিউই ৬০০-৭০০, পিয়ার ফল ৩০০, রাম্বুটান ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছ। বিক্রেতারা জানালেন, বিদেশি এসব ফল এখন দেশের মাটিতেও চাষ হচ্ছে।

বাজারে দেখা গেছে নানা জাতের সুস্বাদু আম। এরমধ্যে আম্রপালি, হিমসাগর, হাঁড়ি-ভাঙা এবং ন্যাংড়া আম বেশি দেখা গেছে। কারওয়ান বাজারের পাইকারি ফলের ব্যবসায়ী, জাকির এন্টারপ্রাইজের মালিক জাকির হোসেন জানান, এসব আমেরও নানা উপজাত রয়েছে৷ প্রকার ও আকৃতি ভেদে হিমসাগর আম ৬০-৭০ টাকা কেজি, হাড়ি-ভাঙা আম ৪৫-৬০ টাকা আম্রপালি ৫০-৬০ টাকা, ন্যাংড়া আম প্রতি কেজি ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তিনি জানান, এসব আম তারা রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রংপুর ও দিনাজপুর এলাকা থেকে নিয়ে আসেন। দৈনিক প্রায় ৩০-২৫ হাজার টাকা বিক্রি হয় তার দোকানে। মৌসুমি ফলই বেশি বিক্রি করেন তিনি।

সিরাজ নামে একজন খুচরা লিচু বিক্রেতা জানান, বিচি ছাড়া বোম্বাই জাতের লিচুর স্বাদ ও রঙ ভালো। প্রতি ১০০ লিচু ৩২০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু বিকিকিনি খুব সুবিধার নয়। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। ফলে যোগান থাকা সত্ত্বেও ভালো চাহিদা নেই।

পুরানা পল্টন এলাকার ফল দোকানি সুজন বসেছেন লটকন, জাম, বাঙ্গির মতো অধিক পরিচিত ফল নিয়ে। জানালেন, বাঙ্গি প্রতিটি ৭০-৮০ টাকা, জাম ১৪০-১৭০ টাকা, লটকন ১৮০ টাকা করে কেজি বিক্রি করেন তিনি। প্রতিদিন গড়ে ৮-১০ হাজার টাকা বিকিকিনি হয় তার।

বাদামতলী এলাকায় বিক্রেতা অহিদ পাইকারি ও খুচরায় কাঁঠাল বিক্রি করেন। তিনি জানান, পাইকারি কাঁঠাল ৬০-৯০ টাকা করে বিক্রি হয়। আসে টাংগাইল থেকে। প্রতিদিন গড়ে ২০-২৫ হাজার টাকা বিকিকিনি তার। তবে, বাজারে যোগান অনুযায়ী বিগত বছরগুলোর মতো চাহিদা নেই।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব তো আছেই, এরমধ্যে কিছুদিন আগে প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করা হয়েছে। তার প্রভাব পড়েছে নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্যে। যে কারণে এ বছর আগের মতো বিকিকিনি নেই।

বিক্রেতারা বলেন, মানুষের কাছে ফল কেনা কিছুটা বিলাসিতা। যেখানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতেই হিমশিম খাচ্ছেন নিম্ন-মধ্যবিত্তরা, সেখানে ফলের পেছেনে টাকা খরচ করা কিছুটা দুষ্কর।

তবে, পরিবহন খরচ কমলে ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে স্থিতিশীলতা এলে বেচা-কেনা বাড়বে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন ফল বিক্রেতারা।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, ১২ জুন, ২০২২
এমকে/এমতে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।