রাজশাহী: রাজশাহী-কলকাতা সরাসরি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের বিষয়ে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) দুপুরে ঢাকায় রেলভবনে মন্ত্রীর সঙ্গে রাসিক মেয়রের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ডিও লেটারে রাসিক মেয়র লিটন উল্লেখ করেন, রাজশাহী অঞ্চলের মানুষ প্রতিনিয়ত ব্যবসা-বাণিজ্য, উচ্চতর শিক্ষা, দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন বিশেষ করে উন্নত চিকিৎসার প্রত্যাশায় ভারত যান। রাজশাহী থেকে সরাসরি ভারতে যাওয়ার কোনো পরিবহন মাধ্যম না থাকায় এ অঞ্চলের মানুষ নানারূপ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এ কারণে এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে রেলযোগে ভারতের সঙ্গে সরাসরি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের দাবি দীর্ঘ দিনের।
এতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রেল যোগাযোগের ইতিহাস বেশ পুরনো। এরই অংশ হিসেবে বলা যায়, দর্শনা বর্ডার হয়ে ভারতের গেদে রেলপথ ব্রিটিশ আমলেই নির্মিত হয়েছে। দর্শনা বর্ডার দিয়ে গেদে হয়ে কলকাতা বর্তমানে বাংলাদেশ-ভারতের মৈত্রী এক্সপ্রেস চলাচল করে। রেলযোগাযোগ বিদ্যমান থাকায় ঢাকা-কলকাতা ও খুলনা-কলকাতার মতো রাজশাহী থেকে কলকাতা যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল সহজতর হবে বলে আমি মনে করি।
রাসিক মেয়র বলেন, রাজশাহী ও ভারতের কলকাতা পর্যন্ত সরাসরি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হলে শস্যভাণ্ডারখ্যাত উত্তরাঞ্চলের মানুষ সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে। কারণে যেকোনো ধরনের চিকিৎসাসেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতই তাদের প্রথম পছন্দ। রেগুলার হেলথ চেকআপ থেকে শুরু করে ক্যান্সার, লিভার, চোখ, নিউরোলজি ও হার্টের চিকিৎসাসহ বিভিন্ন ধরনের সার্জারির জন্য প্রতিদিন বহুসংখ্যক মানুষ রাজশাহী থেকে ভারতের কলকাতা, চেন্নাই, মুম্বাই, নয়াদিল্লি, বেঙ্গালোর, ভেলর, হায়দ্রাবাদের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে যায়। এ অঞ্চল থেকে কাছে ও একই ভাষা-সংস্কৃতি হওয়ার কারণে চিকিৎসা-পর্যটনে কলকাতাই প্রথম পছন্দের স্থান। শুধু তাই নয়, রাজশাহী ও কলকাতা সরাসরি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হলে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে। এর ফলে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও জ্ঞান বিনিময় বৃদ্ধি পাবে এবং উভয় দেশের মানুষ এর ফলে ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে।
রেল ভ্রমণ নিরাপদ, আরামদায়ক ও ব্যয়সাশ্রয়ী হওয়ায় সহজেই এ এলাকার লোকজন রাজশাহী থেকে কলকাতা তথা ভারতে গমন করতে পারবে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ শিল্পায়নের অভূতপূর্ব প্রসার ঘটবে। রাজশাহী তথা উত্তরাঞ্চলের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নেওয়াসহ ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রতিবেশী বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারতের সঙ্গে সরাসরি যাত্রীবাহী ট্রেন যোগাযোগ স্থাপন সময়ের দাবি বলে আমি বিশ্বাস করি। বর্ণিত বাস্তবতার আলোকে রাজশাহী থেকে দর্শনা বর্ডার দিয়ে গেদে হয়ে কলকাতা পর্যন্ত সরাসরি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানান মেয়র।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২২
এসএস/আরবি