ঢাকা: টিভি ও গাড়ির পার্টস ব্যবসার আড়ালে দেশে মাদকের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন দুই সহোদর আহাদ (২২) এবং আশিক (২৪)। অবৈধ এসব মাদক সিএন্ডএফের মাধ্যমে বিদেশ থেকে আনার পরে সেগুলো ঢাকার মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর, রাজধানীর বংশাল ও ওয়ারীতে তাদের ওয়্যার হাউসে রাখতেন।
রোববার (২৪ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
এর আগে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার (২৩ জুলাই) নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানাধীন চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী মহাসড়কে স্থাপিত অস্থায়ী চেক পোস্টে দুটি কন্টেইনার টেইলারে তল্লাশি করে গার্মেন্টস পণ্যের আড়ালে অভিনব কায়দায় শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ৩৭ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৩৭ হাজার বোতল বিদেশি মদ ও কোটি টাকা মূল্যের দেশি ও বিদেশি মুদ্রাসহ সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা আব্দুল আহাদসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১।
অভিযানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোট ৩৬ হাজার ৮১৬ বোতল বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মাদকের সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মোট ৩১ কোটি ৫৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা ভ্যাটসহ সর্বমোট মূল্য ৩৬ কোটি ৮৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
এই অবৈধ চালান আমদানী কারবারের সঙ্গে জড়িত রাজধানীর ওয়ারীতে একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নগদ দেশি এবং বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়। যার পরিমাণ নেপালী রুপি ১৫ হাজার ৯৩৫, ইন্ডিয়ান রুপি ২০ হাজার ১৪৫, চায়না ইওয়ান ১১ হাজার ৪৪৩, ইউরো ৪ হাজার ২৫৫, থাই বার্থ ৭ হাজার ৪৪০, সিংগাপুর ডলার ৯ এবং মালয়েশিয়ান রিংগিট ১৫। অভিযানে গ্রেফতার হয় মো. নাজমুল মোল্লা (২৩) ও মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে সাইফুল (৩৪)।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, অভিযানের ধারাবাহিকতায় রোববার সকালে বিমানবন্দর এলাকা থেকে চক্রের অন্যতম হোতা আব্দুল আহাদকে (২২) গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আহাদ মাদক আমাদানি ও বিপননের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্বীকার করেছে।
তিনি বলেন, এই মাদক সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা গ্রেফতারকৃত আহাদ (২২) এবং মিজানুর রহমান আশিক (২৪) সম্পর্কে সহোদর এবং এই সিন্ডিকেটের মূলহোতা উভয়ের বাবা মো. আজিজুল ইসলাম। তারা এক বছর ধরে এই অবৈধ কারবারের সঙ্গে জড়িত। তারা সিএন্ডএফের যোগসাজশের মাধ্যমে এই অবৈধ মাদক আমদানি কার্যক্রম করত। এই অবৈধ মাদক আমদানির ক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন কোম্পানির কাগজপত্র ব্যবহার করতেন। এই চক্রটি দেশে টিভি ও গাড়ির পার্টস ব্যবসার আড়ালে অবৈধ মাদকদ্রব্য বিপনন নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। অবৈধ মাদক বিদেশ থেকে আনার পরে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর, রাজধানীর বংশাল ও ওয়ারীতে তাদের ওয়্যার হাউসে রাখতেন। সেখান থেকে বিভিন্ন কৌশলে এসব মাদক অন্যান্য মাদক কারবারীদের কাছে বিক্রি ও সরবরাহ করে আসছিলেন।
তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, জুলাই, ২৪, ২০২২
এসজেএ/এমএমজেড