ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

বিপন্নপ্রায় চিতা রক্ষায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০১৬
বিপন্নপ্রায় চিতা রক্ষায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ!

আফ্রিকা থেকে মধ্যপ্রাচ্যে অবৈধ পাচার বাণিজ্যের শিকার হয়ে বিপন্নপ্রায়চিতা। পাচার করে এনে চিতার অঙ্গচ্ছেদ করে ব্যবসা করা হয়, পোষাপ্রাণী হিসেবে ব্যবহার করা হয় এমনকি পাচারকালেও মারা যায় অনেক চিতা।



ফলে ‘বড় বিড়াল’ খ্যাত এই প্রাণীটিকে রক্ষায় অবৈধ চিতা পাচার বাণিজ্য দমনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ কাজে আফ্রিকান দেশগুলোর সঙ্গে যোগ দিয়েছে আরব দেশগুলোও।
 
সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে আফ্রিকা থেকে মধ্যপ্রাচ্যে পাচার হয়ে যাওয়া চিতা শাবকদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেছে বিবিসি। সেখানে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকেও চিতা বাণিজ্যে ভয়ঙ্করভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। রীতিমতো বিজ্ঞাপন দিয়ে সেখানে ব্যয়বহুল চিতা কেনা-বেচা চলছে।

নতুন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তাই অবৈধ এ বাণিজ্যে সামাজিক মিডিয়ার ব্যবহার বন্ধের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এতে করে নতুন মালিকদের ব্যয়বহুল কেনার পাশাপাশি ক্রেতা-বিক্রেতার সংযোগ, বিজ্ঞাপন প্রদর্শন বন্ধ করতে সক্ষম হবেন তারা।

সংশ্লিষ্ট দেশগুলো এক সম্মেলনে বিপন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণীর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ ও চিতার বাজার সীমিত করতে নতুন পদক্ষেপে সম্মত হয়েছে। চিতার আবাসস্থল দেশগুলোর সঙ্গে চিতা বাণিজ্যের রুট দেশগুলো এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি সামাজিক মিডিয়ায় এ বাণিজ্য মোকাবেলার একটি সমন্বিত পদ্ধতির বিষয়ে বৃহত্তর সহযোগিতা গড়ে তুলবে।
 
হ্রাস পাওয়া একটি প্রজাতি রক্ষায় এটিকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করে নতুন পরিকল্পনাটিকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরাও।

সাম্প্রতিক বছরগুলো স্তন্যপায়ী প্রাণীর জন্য একটি কঠিন সময় ছিল। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে চিতা পোষা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। এ ফ্যাশন ও লোভের শিকার চিতার জন্য বিশ্বের দ্রুততম জমির পাশাপাশি আফ্রিকার প্রাকৃতিক অনেক আবাসস্থলও নষ্ট এবং টুকরো টুকরো হচ্ছে।
 
বিভিন্ন প্রজাতির মাত্র সাত হাজারের কম চিতা টিকে আছে ২৯টি দেশের বিভিন্ন এলাকায়। আইইউসিএনও তার লাল তালিকায় চিতাকে অরক্ষিতপ্রাণী হিসেবে বর্ণনা করেছে। সংস্থাটি বলছে, ১৯০০ সাল থেকে চিতার সংখ্যা কমে গেছে ৯০ শতাংশ।
 
চিতার সব ধরনের বাণিজ্য নিষিদ্ধ হলেও ফ্যাশন, প্রযুক্তি এবং লোভেরকারণে চিতা শাবক পাচার বাণিজ্য বেড়েই চলেছে। মধ্যপ্রাচ্যের গন্তব্যে পাচারের সময় সম্প্রতি ডজনখানেক বন্যচিতা উদ্ধার করা হয়, যখন গাদাগাদি করে বদ্ধ পরিবেশে তাদের জাহাজে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
 
লন্ডনের জুলজিক্যাল সোসাইটির সারাহ ডুরান্ট বলেন, ‘পোষাপ্রাণী হিসেবে একটি বড় বিড়াল থাকা তরুণদের মর্যাদা, পৌরুষ বা সাহস প্রদর্শনের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে যাওয়ায় তারা চিতা কিনে থাকে। এছাড়া তরুণীরা ফ্যাশন হিসেবে একটি পশুশাবক কেনার চিন্তা করায় এ বাণিজ্য বেড়ে যায়। তারাও অসাবধানতাবশত এর চাহিদা তৈরি করে দেয়’।
 
‘অথচ চিতা এমন একটি বন্যপ্রাণী যারা বন্দি অবস্থায় ভালো থাকতে পারে না। সে অবস্থায় অধিকাংশ চিতা শাবকই মারা যায়’।
 
চিতা সংরক্ষণ তহবিলের তথ্য মতে, গত এক দশকে ১ হাজার ২০০ চিতাশাবকদের আফ্রিকার বাইরে পাচার হয়েছে। তাদের মধ্যে ৮৫ শতাংশই এ বাণিজ্য ভ্রমণকালে মারা যায়।
 
ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন ফান্ডের নিক মিচেল বলেন, ‘সামাজিক মিডিয়া প্লাটফর্মে নানাভাবে চিতা বাণিজ্য চলছে। ফলে এটি মোকাবেলায় সমন্বিত পদ্ধতিতে কাজ করা হচ্ছে। এটি আমাদের সচিবালয়ে আছে এবং ১৮০টি দেশের অনুমোদন রয়েছে’।
 
‘এ পদ্ধতি সম্পর্কে দক্ষিণ আফ্রিকা ও আরব দেশগুলোর সমর্থন, সমস্যার স্বীকৃতি এবং তা মোকাবেলা করার চেষ্টা রয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত পাচার প্রতিরোধে নতুন যে আইন করেছে, আশা করা যায়, চিতার চাহিদা ওপরও তা উল্লেখযোগ্য প্রভাব বিস্তার করবে’।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০১৬
এএসআর/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।