ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

কেন আমরা কারো নাম ভুলে যাই

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৬
কেন আমরা কারো নাম ভুলে যাই

কারো সঙ্গে নতুন পরিচয়ের পর তার নাম ভুলে যাওয়ার ঘটনা অহরহই ঘটে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, নামটি এক্ষেত্রে কেবল অনেক তথ্যের একটি সামান্য অংশে পরিণত হয়, যার সঙ্গে কথোপকথন বা অন্যকিছুর সংযোগ থাকে না।

মনোবিজ্ঞানী টম স্ট্যাফোর্ড বলছেন, নাম ভুলে যাওয়া আমাদের স্মৃতিশক্তির সাধারণ একটি ব্যর্থতা। কিন্তু এ সমস্যা উত্তরণের উপায় আছে।

ড্যান নামে একজন তাকে প্রশ্ন করেছিলেন, আমরা প্রথম দেখার পর কারো নাম কেন ভুলে যাই? আমি একজন ব্যক্তি সম্পর্কে অন্যান্য বিস্তারিত সব ধরনের তথ্য মনে রাখতে পারি, কিন্তু সম্পূর্ণরূপে তার নাম ভুলে যাই। এমনকি সুদীর্ঘ ও গভীর কথোপকথনের পরও। এটি সত্যিই লজ্জাজনক।

তিনি বলেন, এ প্রশ্নের উত্তর স্মৃতিশক্তির প্রকৃতি সম্পর্কে মৌলিক শেখার সঙ্গে জড়িত। এটি কারো সঙ্গে অনেকক্ষণ আলাপের পরও শুধুমাত্র তার নাম ভুলে যাওয়ার অস্বস্তিকর পরিস্থিতি এড়াতেও সাহায্য করবে।

আমাদের মস্তিস্কে বিভিন্ন ধরনের তথ্যকে আলাদা আলাদা ফোল্ডারে রেখে একটি সহজ ফাইলিং সিস্টেমে একটির পাশে একটি সাজানো থাকে না। সেখানে ‘নাম’ লেবেলে এঁটে একটি রঙিন-উজ্জ্বল ফোল্ডারও রাখা হয়নি, যা দিয়ে আমরা নাম মনে রাখতে পারি। স্মৃতিশক্তি নানা ঘটনায় বিভিন্ন উদ্দেশ্যে তৈরি হয়।

যে কারণে আমরা কারো নাম ভুলে যাই, সেটি হচ্ছে- আমাদের স্মৃতি একটি আশ্চর্যজনক বিষয়। কিন্তু আমরা যখন কোনো নতুন তথ্য সংযোগ করতে চাই, তখন এটি সাড়া দিলেও আমরা স্মরণে রাখতে চাইলে তা করে না।

কারো সঙ্গে প্রথমবার দেখা হওয়ার পর তার নাম মনে রাখার বিভিন্ন উপায় আছে।

প্রথমত, কারো নাম জানতে পারলে এর সঙ্গে মিল আছে, এ ধরনের তথ্যের সংযোগ ঘটাতে হবে, যদি সেই তথ্য তুচ্ছও হয়। তার সঙ্গে কথোপকথনের সময় তার কাজ, শখ এবং পরিবার বা অন্য তথ্যও স্মৃতিতে সংযোগ করে রাখা যেতে পারে।

‘যেমন- আপনি একজন নীল শার্ট পরা ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছেন, যিনি মাছ ধরা পছন্দ এবং গাড়ি বিক্রির কাজ করেন। এখন যদি একটি তথ্য মনে রাখতে পারেন (‘গাড়ি বিক্রি’), তবে আপনি অন্যগুলোও ধারাবাহিকভাবে মনে করতে থাকুন (‘গাড়ি বিক্রি, কিন্তু এটা ছেড়ে দিতে চান’, ‘এটা মাছ ধরার সরঞ্জাম বিক্রি ছেড়ে দিতে চান’, মাছ ধরতে ভালোবাসেন’ ইত্যাদি)’।

এসব সংযোগ অন্যান্য স্মৃতির সঙ্গে জড়িত হয়ে জোরদার হবে, স্মৃতিশক্তির কিছু মৌলিক নীতি ব্যবহার করে নাম মনে রাখতে সহায়তা করবে।

নাম মনে রাখার ক্ষেত্রে কোনো নাম জানলে পুনরাবৃত্তি ও অনুশীলন করতে হবে। অনুশীলন শেখার একটি সুবর্ণ সুযোগ। আরো অনুশীলনে শক্তিশালী স্মৃতি নির্মিত হয়। কারো নাম মনে রাখতে তার আচার-ব্যবহার, শারীরিক ভঙ্গি, কথোপকথনের বিষয়ও কাজে লাগতে পারে।

দ্বিতীয়ত, একজনের নাম জানলে জানা থাকা একই ধরনের অন্য নামগুলোর সঙ্গে সংযোগ করিয়ে রাখা যেতে পারে।

‘এ সংযোগ সম্পূর্ণভাবে অর্থহীন হলেও কোনো বিষয় নয়। শুধু এটিই জরুরি যে, আপনার স্মৃতি নামের তালিকার কিছু সংযোগ খুঁজে পেয়েছে। যেমন, হয়তো আপনি জেমস নামের কারো সঙ্গে আলাপ করলেন। এখন আপনার স্কুল জীবনের জেমস নামের বন্ধুর কথা স্মরণ করুন। যদিও এই জেমস একটি নীল জামা পরা, আর বন্ধু জেমস শুধুমাত্র কালো জামা পরতেন। তাই তিনি নীল পরতে চাইতেন না- এটি একটি অর্থহীন সংযোগ। কিন্তু এটা আপনাকে নাম মনে রাখতে সাহায্য করতে পারে’।

পরিচিতদের মধ্যে না থাকলেও মন থেকে আসা নামও এক্ষেত্রে কাজে দেবে।

সংযোগ স্থাপন বিদঘুটে বা অদ্ভুত হলেও অসুবিধা নেই। তা স্মৃতিশক্তির মিলনস্থলে একটি ওয়েব তৈরি করতে সাহায্য করবে। এ ওয়েবে নতুন বন্ধুর নামও থাকবে এবং তাকে অন্য কারো সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে গেলে তা মনে পড়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ০১০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৬
এএসআর/এসএনএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।