ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

মানুষের কণ্ঠ অনুকরণ করে জলের তলের প্রাণীরাও!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৬
মানুষের কণ্ঠ অনুকরণ করে জলের তলের প্রাণীরাও!

বন্য ও পোষা অনেক প্রাণীকেই মানুষের বক্তৃতা নকল করে বলতে দেখা যায়। কিন্তু যেসব গভীর সমুদ্রের প্রাণী মানুষের সরাসরি সান্নিধ্য পায় না, তারাও মাঝে মাঝেই এটি করে গবেষকদের তাক লাগিয়ে দেয়।

বন্য ও পোষা অনেক প্রাণীকেই মানুষের বক্তৃতা নকল করে বলতে দেখা যায়। কিন্তু যেসব গভীর সমুদ্রের প্রাণী মানুষের সরাসরি সান্নিধ্য পায় না, তারাও মাঝে মাঝেই এটি করে গবেষকদের তাক লাগিয়ে দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ন্যাশনাল মেরিন ম্যামাল ফাউন্ডেশনের গবেষকদের সামনে বেলুগা প্রজাতির একটি তিমি মানুষের কথা বলার মতো করে শব্দ করেছিল। অবশ্য দীর্ঘ প্রশিক্ষণের পরই মানুষের অনুকরণ করতে পেরেছে এই ‘কণ্ঠ শিক্ষার্থী’।    

শুশুক জাতীয় এক ধরনের সামুদ্রিক প্রাণী পরপয়স আরও একধাপ এগিয়ে। তারা শব্দের পাশাপাশি নকল বা অনুকরণ করতে পারে মানুষের আচরণও।  

তিমি, ডলফিন ও পরপয়স স্তন্যপায়ী প্রাণীর পর্যায়ভুক্ত। তবে, সাদা তিমি বেলুগা ও পরপয়সরাই সবচেয়ে বুদ্ধিমান বা চালাক। মানুষকে অনুকরণ করতে ও কণ্ঠস্বর নকল করতে এরা সক্ষম।

নয় বছর বয়সী বেলুগা তিমিটিকে এনওসি নামে ডাকা হয়। গবেষকেরা দেখেছেন, এনওসি যে শব্দ করে, সেগুলোর সঙ্গে মানুষের বলা শব্দের অনেক মিল আছে।

তিমিটির প্রশিক্ষক জাপানের কেনাগাওয়া টোকাই বিশ্ববিদ্যালয়ের টিসুকাসা মুরাইয়ামা তাকে নিজের নাম ‘টিসুকাসা’সহ বেশ কিছু জাপানি শব্দ শেখান। তিনি বলছেন, ‘খেলার ছলে এনওসিকে দুর্বল অনুবাদের কিছু শব্দ শেখানো হয়েছে, যেন সে প্রতিদানের আশা ছাড়াই সেগুলো শিখতে ও বলতে পারে’।

তবে ন্যাশনাল মেরিন ম্যামাল ফাউন্ডেশনের প্রধান স্যাম রিডজওয়ে বলেন, তারা যে শব্দটি শুনতে পেয়েছেন, সেটি পরিষ্কারভাবে নির্দেশ করে যে, এনওসি নিজ চেষ্টায় আলাদা ধরনের শব্দ তৈরি করতে শিখেছে। প্রতিষ্ঠানটির একজন ডুবুরি জানান, তিনি পানির নিচে মানুষের কথা বলার মতো শব্দ শুনতে পেয়েছেন। গবেষণা করে দেখা গেছে, এনওসি এসব শব্দ তৈরি করছে। পরে শব্দগুলো ধারণ করে দেখা গেছে, তিমিটি তিন সেকেন্ড পর পর শব্দ তৈরি করে। এসব শব্দের সঙ্গে মানুষের কথার অদ্ভুত মিল পাওয়া যায়।

গবেষকেরা বলেছেন, এনওসি তার নাসারন্ধ্রের মধ্যে অনবরত চাপ দিয়ে শব্দ তৈরি করছে। স্যাম রিডজওয়ে জানান, তারা পর্যবেক্ষণে দেখতে পান, তিমিটি মানুষের মতো শব্দ করতে স্বরযন্ত্রে বিশেষ পরিবর্তন আনে।

অন্যদিকে পরপয়সের কানকো নেই, ফুসফুসের মাধ্যমে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়। মাথায় এদের একটি ছিদ্র থাকে, এটিই ওদের নাক। শ্বাস গ্রহণ করার সময় এরা মাথাটি পানির ওপর উঠায় এবং ছিদ্র পথে শ্বাস-প্রশ্বাস ক্রিয়া সম্পাদন করে। মুখে এদের ৮০ থেকে ১০০টি দাঁত থাকে। আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের এই প্রাণীরাও নাসারন্ধ্র দিয়ে মানুষের মতো শব্দ উচ্চারণ করে।

‘এসব ‘কণ্ঠ শিক্ষার্থীরা’ তাদের অনেক শব্দ ব্যবহার তাদের প্রজাতির অন্য সদস্যদের সঙ্গে বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য। কণ্ঠ দক্ষতা তাদেরকে বিপরীত লিঙ্গের কাছে আকর্ষণীয় ও তাদের বুদ্ধিমত্তা প্রদর্শন করে। নতুন শব্দ শেখার ক্ষমতা ছাড়াও তাদের বাচালতা নতুনদের ঝাঁকে ঝাঁকে যোগদান করতে অনুপ্রাণিত করে’- বলেন প্রাণী চেতনা বিশেষজ্ঞ আইরিন ম্যাক্সিন পিপারবার্গ।

বাংলাদেশ সময়: ০০৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৬
এএসআর/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।