ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অফবিট

আমাদের শঙ্কর প্রজাতির মানুষ!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৬
আমাদের শঙ্কর প্রজাতির মানুষ! ছবি: সংগৃহীত

গত পাঁচ বছরে আধুনিক মানুষ হোমো স্যাপিয়েন্স এবং আমাদের প্রথম পূর্বপুরুষদের মধ্যে পৃথক শঙ্কর প্রজননের ঘটনার অনেকগুলো প্রমাণ পাওয়া গেছে।

গত পাঁচ বছরে আধুনিক মানুষ হোমো স্যাপিয়েন্স এবং আমাদের প্রথম পূর্বপুরুষদের মধ্যে পৃথক শঙ্কর প্রজননের ঘটনার অনেকগুলো প্রমাণ পাওয়া গেছে।

রোমানিয়ায় ৪০ হাজার বছর আগের একটি মানুষের মাথার খুলির জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হয়েছিল ২০০৩ সালে।

ব্যাপক গবেষণা শেষে গত বছরের জুনে গবেষকরা জানান, এ খুলি আধুনিক মানুষের মতো দেখায়, কিন্তু এ ধরনের বড় গালের হাড়ের কয়েকটিতে সেকেলে বৈশিষ্ট্যগুলো অপরিবর্তিত রয়েছে।

তার মানে এটি আমাদের প্রজাতি হোমো স্যাপিয়েন্সের সঙ্গে সমসাময়িক হোমো নিয়ান্ডারথ্যালেন্সিস্‌ বা নিয়ান্ডারথালের মিশ্রণে  জন্ম নেওয়া একটি শঙ্কর প্রজাতি। রোমানিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পেস্তেরা কিউ ওয়েসে গুহায় পাওয়ায় ওই মানুষদের নামকরণ করা হয়েছে ওয়েসে ২।

বিরল এ শঙ্করায়নের ঘটনার পক্ষে বিজ্ঞানীরা যুক্তি দেখান যে, স্যাপিয়েন্স ও নিয়ান্ডারথালরা একই সময়ে ইউরোপে একসঙ্গে বসবাস করায় তাদের মধ্যে ইন্টারব্রিড ঘটেছে।

ওয়েসের মাথার খুলি উদ্ধার শঙ্করায়নের প্রমাণ- দাবি বিজ্ঞানীদেরইউরোপে মানব বসতির প্রথম ৫ হাজার বছরের মধ্যেই ওয়েসেদের জন্ম বলেও বিশ্বাস করেন বিজ্ঞানীরা। তারা এর সপক্ষে বলেন, আধুনিক মানুষেরা প্রথম আফ্রিকা ত্যাগের পর নিয়ান্ডারথালদের সংস্পর্শে আসে এবং তুলনামূলকভাবে আরামদায়ক জীবনযাত্রা পায়। ফলে তখনও সমবৈশিষ্ট্যপূর্ণ দুই সহোদর প্রজাতির মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট থাকায় মিলন ঘটেছে ওই সময়কালের মধ্যেই। এর পরের ধাপেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার সৃষ্টি হলে আমাদেরকে জায়গা ছেড়ে দিয়ে চিরতরে হারিয়ে যায় নিয়ান্ডারথালরা।    

উপরন্তু ওয়েসে ২ দলের যে সদস্যটির মাথার খুলি খুঁজে পাওয়া যায় তার নিয়ান্ডারথাল পূর্বপুরুষ তার মৃত্যুর মাত্র ২০০ বছর আগে বাস করতো।

ওয়েসেদের চোয়ালের হাড়ে পাওয়া গেছে নিয়ান্ডারথাল বৈশিষ্ট্যগবেষকরা জেনেটিক গবেষণা ও অঙ্গ ব্যবচ্ছেদবিদ্যা থেকে নিশ্চিত হন যে, ওয়েসে মানুষের চোয়ালের হাড়ে কিছু স্পষ্ট নিয়ান্ডারথাল বৈশিষ্ট্য ছিল। সে সময়কার অন্য মানুষের নমুনার সঙ্গে এর মস্তকের তুলনাও করেন বিজ্ঞানীরা। তখন দেখতে পান, আধুনিক মানুষের খুলির একই বৈশিষ্ট্যের চেয়ে বরং নিয়ান্ডারথালদের বৈশিষ্ট্যই বেশি পেয়েছিল সে। এমনকি তার অধিকাংশ জিনোমই নিয়ান্ডারথাল ছিল। ওয়েসে ২ তার ডিএনএর ৬ থেকে ৯ শতাংশ নিয়ান্ডারথালদের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিল।

ওয়েসে তাই পৃথক অন্য কোনো আধুনিক মানুষের তুলনায় নিয়ান্ডারথালদের সঙ্গেই বেশি ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত ছিল।

আমাদের দূরবর্তী পূর্বপুরুষ এবং নিয়ান্ডারথালসহ অন্যান্য হোমিনিন প্রজাতির ইন্টারব্রিডে এ শঙ্করীকরণের ঘটনা আমাদের বিবর্তনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকতে পারে বলেই বিশ্বাস করেন বিজ্ঞানীরা।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৬
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।