ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

সেই চেরনোবিলে ফুলের হাসি

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৯ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৯
সেই চেরনোবিলে ফুলের হাসি

ঢাকা: চেরনোবিল বিস্ফোরণ। বলা হয় এটিই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিপর্যয়। ১৯৮৬ সালের এপ্রিল মাসে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত ইউক্রেনের চেরনোবিলে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি চুল্লিতে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণ থেকে সৃষ্ট আগুন ১০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। সেইসঙ্গে ১৯৪৫ সালে হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়েও ৫০০ গুণ বেশি পারমাণবিক দূষণ ছড়িয়ে পড়ে পরিবেশে। 

২৩৭ জন মানুষ পারমাণবিক বিকিরণের ফলে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং প্রথম তিন মাসে অন্তত ৩১ জন মারা যান। বিস্তীর্ণ জায়গাজুড়ে শক্তিশালী তেজষ্ক্রিয় বিকিরণ ছড়িয়ে পড়ায় ধ্বংস হয় জীববৈচিত্র্য।

পরিবেশ-প্রতিবেশ হয়ে ওঠে বিষময়। এর প্রভাবে পরবর্তী অনেক বছর নানা রোগে আক্রান্ত হন হাজার হাজার মানুষ। এক পর্যায়ে ক্ষতি কমাতে দুর্ঘটনাস্থল ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের চারপাশে প্রায় ৩০ মাইলজুড়ে মানুষের বসবাস নিষিদ্ধ করা হয়- যা এখনো বলবৎ আছে। তবে আশার কথা, সেই চেরনোবিলে হেসেছে ফুল, ছড়াচ্ছে সুবাস।

সম্প্রতি চেরনোবিলের বিপর্যস্ত এলাকায় ফোটা কয়েকটি ফুলের ছবি প্রকাশ করেছে রাশিয়ার একটি ওয়েবসাইট। নানা রঙের এসব ফুলে যেন নতুন করে প্রাণ ফিরতে শুরু করেছে ওই এলাকায়। ফুলের সুবাস ছড়াচ্ছে শান্তির বার্তা।  

রাশিয়াভিত্তিক একটি বার্তা সংস্থার খবর জানানো হয়েছে, পারমাণবিক চুল্লিতে বিস্ফোরণের পর ওই এলাকা থেকে সাধারণ মানুষকে দূরে সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে কিছু মানুষ আদি ভিটে-মাটি বলে সেখানে ফেরেন।  বিস্ফোরণের পর চেরনোবিলের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রচেরনোবিলের এক্সক্লুশন জোন বা পরিত্যক্ত এলাকাটি জীববিজ্ঞানী ও গবেষকদের কাছে হয়ে উঠেছে একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। যারা আসা-যাওয়া করেন, তাদের বেশিরভাগই তেজষ্ক্রিয়তার প্রভাবগ্রস্ত জীববৈচিত্র্য নিয়ে গবেষণা করতে আসেন।  

তাদের মাধ্যমেই সম্প্রতি বিস্ফোরণ এলাকার একটি ডোবা থেকে ধারণ করা সাদা ও হলুদ রঙের শাপলা ফুলের ছবি অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে। ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যে পেজে পোস্ট করা হয়েছে, সেটি হচ্ছে ‘চেরনোবিল র‌্যাডিয়েশন অ্যান্ড ইকোলজিক্যাল বায়োস্পেয়ার রিজার্ভে’র।  

ওই ছবির পোস্টে ভয়ানক বিপর্যয়ের ভূমিতে নানা উদ্ভিদ-গুল্মের জন্মানো ও ফুল ফোটার বিষয়টি নিয়ে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।  

সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, চেরনোবিল বিস্ফোরণের পর ওই শহরটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। পরবর্তী পরিবেশ-প্রতিবেশ আঁচ করতে ১৯৯৮ সালের দিকে বিশেষ প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় কয়েকটি ঘোড়া ওই অঞ্চলে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে ‘পেরজলস্কি’ প্রজাতির এসব ঘোড়া বংশবৃদ্ধি করে। সেই সাফল্যে রোপণ করা হয় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। সেসব রোপিত গাছের ফলাফলও বেশ সন্তোষজনক। এবার ফুলগুলো দিচ্ছে যেন সম্ভাবনার এক নতুন বার্তা।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৪ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৯
এমএ/এইচএ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।