সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে। অবাক হওয়ার পাশাপাশি এ ঘটনায ব্যথিত কেপটাউনের অধিবাসীরা; সামান্য একটি সেলফি দেখে কীভাবে ১৭ বছর পর নিজেদের মেয়েকে চিনতে পারলেন মা-বাবা!
সংবাদমাধ্যম বলছে, জাওয়ানসাইক হাইস্কুলের শেষবর্ষের ছাত্রী তখন মিশি।
একই চেহারার মানুষ এর আগে বহুবার দেখেছে বলে কথাটি প্রথম তেমন গুরুত্ব দেয়নি মিশি। কিন্তু স্কুলের করিডোরে ক্যাসিডির সঙ্গে দেখা হওয়ার পরপরই তার মনে হয়, মেয়েটিকে সে অনেকদিন ধরে চেনে। ধীরে ধীরে ক্যাসিডি ও মিশির মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। তারা একসঙ্গে কোথাও বের হলে যখন কেউ প্রশ্ন করতো তারা বোন কি-না, তার জবাবে দু’জনই মজা করে বলতো, কোনো এক জন্মে হয়তো বোন ছিলাম।
সুন্দরভাবেই যাচ্ছিল তাদের দিন। কিন্তু তাদের একটি সেলফি সৃষ্টি করে বড় বিপত্তি। ক্যাসিডির মা-বাবা ছবিটি দেখার পর মিশির জন্মদিন জানতে চান। নিজেদের মেয়েকে জেনে নিতে বলেন মিশি ১৯৯৭ সালের ৩০ এপ্রিল জন্মেছে কি-না।
১৫ বছরের ক্যাসিডি কিছুটা অবাক হলেও মা-বাবার কথা রাখতে মিশিকে তার জন্মদিনের কথা জিজ্ঞেস করে। মিশিও একই তারিখ বলায় সে হকচকিয়ে যায়।
তার বাবা মোর্ন ও মা কেলেসতে নার্স শরণাপন্ন হন সামাজিক কর্মীদের। মিশির স্কুলে জানাজানি হয়ে যায় বিষয়টি। মিশি কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিল না, সে তার ‘লালিত মায়ের’ চুরি করা সন্তান। প্রবল বিশ্বাস থেকে সে ডিএনএ পরীক্ষা করতে রাজি হয়ে যায়।
রিপোর্ট পেয়ে হতাশ হতে হয় মিশিকে। ডিএনএ পরীক্ষা বলে মিশি ও ক্যাসিডি তারা বোন। একই মা-বাবার সন্তান।
১৯৯৭ সালের ৩০ এপ্রিল কেপটাউনের গ্রুটেশ্যুর হাসপাতাল থেকে জন্মের তিনদিন পর চুরি হয়েছিল মিশি। নার্স পরিচয়ে লেভোনা সলোমন নামে এক নারী চুরি করেন শিশুটিকে।
এ অভিযোগে আটক করা হয় লেভোনা সলোমনকে। আদালত তাকে অপহরণের দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন। তবে মায়ের দণ্ডের খবরে মিশি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। এছাড়া নতুন মা-বাবাকে সে মেনে নিতে পারছে না।
তবে এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না মিশির পালক বাবা মাইকেল সলোমন। আদালতে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন।
এদিকে, মিশি এখনও ১২০ কিলোমিটার দূরের কারাগারটিতে সেই মায়ের সঙ্গে নিয়মিত দেখা করতে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১২১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৯
কেএসডি/টিএ