ঠাকুরগাঁও: প্রায়ই ঠাকুরগাঁওয়ের গ্রামে গ্রামে মেছোবাঘ, বনবিড়াল, শিয়াল, বাগডাশা, খাটাশ বা অন্য কোনো জংলি প্রাণীর উৎপাত বেড়ে যায়। ধরে ধরে খেয়ে ফেলে বাড়ির পোষা হাঁস-মুরগি।
এমন হলেই ডাক পড়ে জেলার আদিবাসীদের। খবর পেলেই তারা দল বেধে ওই গ্রামে বা বাড়িতে গিয়ে খড়ের পালা, ঘরবাড়ি বা আশপাশের জঙ্গল থেকে খুঁজে বের করেন বিভিন্ন ধরনের শিকারি প্রাণী।
সম্প্রতি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ২২ নম্বর সেনুয়া ইউনিয়নের মিয়াজী পাড়ায় একদল আদিবাসীকে শিকারি প্রাণীর (যেসব প্রাণী হাঁস-মুরগি শিকার করে) খোঁজে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায়।
তাদেরই একজন মাগু। তিনি জানান, প্রতি বছরই এসময়ে তারা শিকারি খুঁজে বেড়ান। গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষের ঘরে ঘরে শিকারি খোঁজেন। নিজেরা যেমন শিকারি খুঁজতে যান, তেমনি তাদের শিকারি ধরতে ডাকাও হয়।
গ্রামের অনেক মানুষ জানান, তাদের বাড়ির খরের ঘরে বনবিড়াল এসে প্রতিদিনই কারো না কারো হাঁস-মুরগি ধরে খেয়ে ফেলছে। ফলে অনেকে ঠিকমতো হাঁস-মুরগি পালন করতে পারেন না। স্থানীয় আদিবাসীদের খবর দিলে বা নিজেদের মতো তারা দল বেধে এসে বিভিন্ন ঘরে ও আশপাশে অভিযান চালিয়ে শিকারি প্রাণী ধরেন। তারা অনেকে মিলে সহজেই খড়ের গাদা বা ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে থাকা শিকারি প্রাণী ধরতে পারেন। এমনকি বড় ইঁদুরের উপদ্রব বাড়লেও ডাকা হয় তাদের। তারা এসে বনবিড়াল, শিয়াল বা ইঁদুরসহ অন্যান্য প্রাণী ধরে নিয়ে রান্না করে পরিবার নিয়ে খাওয়া-দাওয়া করেন।
শিকারি ধরতে আশা পেলেক জানান, তীর-ধনুক নিয়ে আমরা প্রতিদিন কোথাও না কোথাও শিকারি খুঁজে বেড়াই। প্রতিদিন কোনো না কোনো শিকার ধরি। খেক শিয়াল, বিড়াল, ইঁদুর- এগুলো শিকার করে পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দ করে খাওয়া-দাওয়া করি। তবে আমরা যেখানেই শিকার ধরতে যাই, একসঙ্গে ১০-১২ জন মিলে যাই।
২২ নম্বর সেনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আজিজুর রহমান বলেন, আমাদের এলাকার আদিবাসীরা এভাবে শিকার ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। অনেকে ধানের সময় ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহ করেন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই পেশা বদল করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২১ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০২২
এসআই