ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

অফবিট

পোকা-মাকড় খেয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন ডিসকভারি আকরাম

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২২
পোকা-মাকড় খেয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন ডিসকভারি আকরাম

পাবনা: পাবনার আলোড়ন সৃষ্টিকারী বিস্বয়কর যুবক আকরাম হোসেন। বিদেশি টিভি চ্যানেলে বিয়ার গ্রিলস এর দুঃসাহসিক বিভিন্ন ভ্রমণ অভিযানে পোকা-মাকড় খাওয়া দেখে অনুপ্রাণীত হয়ে নিজেই খাওয়া শুরু করেছেন পাবনার এই যুবক।

স্থানীয়রা ইতোমধ্যে তার নাম দিয়েছেন ডিসকভারি আকরাম। পেশায় কাঠ মিস্ত্রী হলেও সে নেশা বানিয়েছেন বিভিন্ন পোকা-মাকড় ও কাঁচা খাদ্য খাওয়ার। ২০০২ সালে নিজ বাড়িতে একটি টেলিভিশন কেনেন তিনি। টিভিতে তিনি ডিসকভারি চ্যানেলে বিয়ার গ্রিলসের পোকা-মাকড় খাওয়া দেখে উৎসাহিত হন। তখন থেকেই তার স্বপ্ন বিদেশি চ্যানেলে বিয়ার গ্রিলসের মতো জঙ্গল ঘুড়ে টিভিতে যাওয়া ও নিজেকে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে পরিচিত করা। আর এ কারণে অস্বাভাবিক খাদ্যা খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করেছেন তিনি।
 

দীর্ঘ ২০ বছরের চেষ্টার এই অস্বাভাবিক খাওয়ার অভ্যাসের কথা এখন সবার মুখে মুখে। প্রথমে সে কাঁচা মাছ খাওয়া দিয়ে অভ্যাস তৈরি করেন। পরবর্তীকালে স্থানীয়ভাবে সংগৃহিত ব্যাঙ, ইদুর, কেঁচো, তেলোপোকা, শামুক, কাঁকড়া খাওয়া শুরু করেন তিনি। এখন আকরাম সব ধরনের সরিশৃপ, ব্যাঙ, বিচ্ছু, পোকা মাকড় খাওয়া তার কাছে এটি স্বাভাবিক বিষয়। অনায়েশে সব কিছু কাঁচা খেয়ে ফেলতে পারেন ডিসকভার আকরাম। এই বিস্বয়কর যুবকের খাওয়ার ঘটনা দেখতে তার বাড়িতে প্রতিদিনই হাজির হচ্ছে শতশত উৎসক মানুষ। তার ইচ্ছা এসব খেয়ে তিনি বিশ্বের কাছে একমাত্র বাঙালি হিসেবে পরিচিতি লাভ করবেন। তার এসব খাদ্য অভ্যাস দেখার জন্য দুর দুরান্ত থেকে তার বাড়িতে উৎসুক সাধারণ মানুষ ভিড় করছেন। শতশত মানুষের মধ্যে এই সব পোকা-মাকড় দিব্যি খেয়ে দেখাচ্ছেন তিনি।

ছোট বেলা থেকেই অভাব অনাটনে দিন কেটে তার। সেই কারনে অক্ষর জ্ঞান অর্জন করতে পাড়িনি আকরাম। কাঠমিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালাতে হয়েছে তাকে। ৬ সদস্যর পরিবারে ৪ মেয়ে সন্তন ও স্ত্রী নিয়ে সংসার তার। পোকা-মাকড় খাওয়ার শুরুতে বাড়ির গৃহিনী রাগা-রাগী করলেও এখন মানিয়ে নিয়েছেন। স্বামীর স্বপ্ন পূরণ হলে তাতেই সে খুশি। তাই সরকারি পৃষ্টপোষকা পেলে বাংলার আকরাম হতে পারে বিয়ার গ্রিলসের সেলিব্রেটি।

পাবনা সদরের প্রত্যান্ত চর এলাকা ঘোড়াদহের মৃত জব্বার প্রামাণিকের ছেলে কাঠমিস্ত্রি আকরাম হোসেন। ২০০২ সাল থেকে স্যাটেলাইট চ্যানেল ডিসকভারি দেখে পোকা-মাকড় খাওয়ার ইচ্ছে হয় তার। সেই থেকে একের পর এক পোকা ধরে অবলীলায় খেয়ে থাকেন। ধীরে ধীরে সে এখন সাপ, ব্যাঙ, ইঁদুর, তেলাপোকাসহ বিভিন্ন পোকা-মাকড় খেয়ে আসছেন। তার ইচ্ছা ডিসকভারী চ্যানেলের মত তাকেও দেখবে সারাবিশ্ব। এসব পোকা-মাকড় খাওয়াতে তেমন কোন শারীরিক সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়নি তাকে। বরং সু-স্বাদেই তিনি এসব ভোগ করে থাকেন। তার দাবি দেশে তাকে নিয়ে যদি ডিসকভার চ্যানেল তৈরি করা হতো তাহলে বাংলার মাঠিতে বিয়ার গ্রিলসের মতো একটি অভিনেতা তৈরি হতো।

বিস্বয়কর যুবক ডিসকভার আকরাম বলেন, ‘টিভিতে বিদেশি চ্যানেলে পোকা-মাকড়-সাপ-ব্যাঙ খাওয়া দেখে আমাক (আমাকে) ইচ্ছা হয় আমিও খাবো। আশে পাশে অনেকের কাছে শুনেছি এরা এইসব খায় এরা কারা। তখন বলে এরা বিদেশি। তাহলে আমি ভাবলাম- আমরা কেন পারবো না। বাঙালিরা ক্যান পারবে না। কাচা মাছ খাওয়া দিয়ে শুর করি। এখন আমি সব খাবের পারি কোনো সমস্যা হয় না আমার। দেশের হয়ে বিদেশে গিয়ে নাম করবের চাই। দেশে আমারে নিয়ে যদি বিয়ার গ্রিলসের মতো সিনেমা বানায়, তাহলি দেশের সুনাম হবি। আমাক সবাই চিনবি। ’

ডা. ওমর ফারুক মীর সহকারী পরিচালক (পাবনা জেনারেল হাসপাতাল) পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষ এই ধরনের সাপ, ব্যাঙ, পোকা-মাকড় খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। তবে আমাদের দেশে খুব একটা শোনা য়ায় না। আমাদের দেশের কিছু জাতী গোষ্ঠি আছে যারা কিছু প্রাণীর মাংস খেয়ে থাকে। তবে বিষাক্ত যদি না হয়ে থাকে তবে খেলে কিছু হবে না। আর নিয়ম অনুসরণ না করে খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে শারীরিক সমস্যা হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২২
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।