ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

এক ইউনিয়নে ছাত্রলীগের দুই কমিটি নিয়ে ধোঁয়াশা!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৩
এক ইউনিয়নে ছাত্রলীগের দুই কমিটি নিয়ে ধোঁয়াশা!

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের দুই কমিটি নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে এ নিয়ে।

 

একই দিনে প্রকাশিত ইউনিয়নের দুই কমিটির সভাপতি ভিন্ন দুই ব্যক্তি হলেও সাধারণ সম্পাদক একজন।  

চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু তালেব এবং সাধারণ সম্পাদক এম মাসুদুর রহমান স্বাক্ষরিত দুটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি রোববার (৮ অক্টোবর) রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা গেছে। দুটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেই ভিন্ন ভিন্ন সভাপতির নাম উল্লেখ করে এক বছর মেয়াদের কমিটি ঘোষণা করা হয়।  

এতে দেখা গেছে, একটিতে সভাপতি হিসেবে নাম উল্লেখ রয়েছে আবদুল্লাহ আল মাছুম এবং অন্যটিতে সভাপতি হিসেবে নাম রয়েছে ওই ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মো. আজগর হোসেনের। আর দুটিতেই সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ইমরান হোসেনের নাম রয়েছে।  

যদিও সভাপতি হিসেবে উল্লেখ থাকা দুজনই তাদের কমিটি বৈধ বলে দাবি করেছেন।  

আর এ ধোঁয়াশার বিষয়ে সোমবার (৯ অক্টোবর) রাত পর্যন্ত জেলা ছাত্রলীগ কিংবা চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগ আনুষ্ঠানিক কোন বিবৃতি দেয়নি। তবে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন বলেন, আবদুল্লাহ আল মাছুমের কমিটি বৈধ।  


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৩১ জুলাই চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন দিঘলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এরপর ওই ইউনিয়নের নেতা নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাছ থেকে সিভি চায় থানা ছাত্রলীগ। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে ফেসবুকে চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ভাইরাল হয়। রাতে ওই দুই নেতার স্বাক্ষরে ভিন্ন সভাপতি দিয়ে আরেকটি কমিটি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, আবদুল্লাহ আল মাছুম চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু তালেবের সমর্থক। আবার অন্য আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে থাকা মো. আজগর হোসেন থানা সাধারণ সম্পাদক এম মাসুদুর রহমান সমর্থিত নেতা। ফলে দুই নেতা দুজনকে নিয়ে টানাপোড়েনে পড়েন। এক কমিটির প্রতি সভাপতির সমর্থন থাকলেও অন্য কমিটির প্রতি সমর্থন রয়েছে সাধারণ সম্পাদকের। ফলে আলাদা প্যাডে দুটি কমিটি করে দুই নেতার স্বাক্ষর স্ক্যান করে ওই প্যাডে বসিয়ে দেওয়া হয়। এ নিয়ে এখন থানা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দিয়েছে।  

এদিকে রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে জেলা ছাত্রলীগ চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আজাদ হোসেন ও ছাত্রলীগ কর্মী সাফায়েত হোসেন রবিনকে অব্যাহতি দেয়। দিঘলী ইউনিয়নের পাল্টাপাল্টি কমিটিকে কেন্দ্র করে এ দুজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।  

একটি কমিটির সভাপতি দাবিদার আজগর হোসেন বলেন, চন্দ্রগঞ্জ থানা কমিটির সভাপতি আবু তালেব টাকার বিনিময়ে একক সিদ্ধান্তে আবদুল্লাহ আল মাছুমকে সভাপতি দেখিয়ে কমিটি দিয়েছেন। মাসুম প্রবাসী, তার ছাত্রত্ব নেই। এ কমিটিতে থানা সাধারণ সম্পাদক এম মাসুদুরের সমর্থন ছিল না। তিনি স্বাক্ষরও করেননি। স্ক্যান করে কাগজে স্বাক্ষর দেখানো হয়েছে।  

যদিও এ বিষয়ে জানতে থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম মাসুদুর রহমানের সাথে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করেননি।  

এদিকে আরেক কমিটির সভাপতি দাবিদার আবদুল্লাহ আল মাছুম বলেন, আমাদের কমিটি বৈধ। কমিটিতে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক দুজনের স্বাক্ষর রয়েছে। আমার ছাত্রত্ব নেই, কথাটা মিথ্যা। আমি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্র।  

চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু তালেব বলেন, আবদুল্লাহ আল মাছুমকে দেওয়া কমিটি বৈধ। অন্য যে কমিটি ফেসবুকে প্রকাশ হয়েছে, সেটি বৈধ না। সেখানে থাকা আমার স্বাক্ষরটি জাল। যারা এ কাজটি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে জেলা কমিটি ব্যবস্থা নিচ্ছে।  
 
এ বিষয়ে জানতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম রকির মুঠোফোনে সোমবার রাতে কল দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি।  

সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া বলেন, থানা ছাত্রলীগ কমিটি দিয়েছে। আবদুল্লাহ আল মাছুমের কমিটি বৈধ। অন্য কমিটির বৈধতা নেই। যারা এ কমিটি ছড়িয়েছে, তাদের দুজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৩
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।