লন্ডন: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, সরকার যদি অবলম্বে নির্বাচন না দেয় তবে জনগণ রাজপথে নেমে তা আদায় করবে। তখন আর সরকারের পালাবার পথ থাকবে না।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় লন্ডন সফররত খালেদা জিয়া নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সরকারের বিরুদ্ধে হত্যা, গুম ও বিএনপি নেতাদের হয়রানির অভিযোগ তুলে খালেদা জিয়া বলেন, ‘শেখ হাসিনা জানেন নির্বাচন দিলে তার দল পরাজিত হবে এবং ক্ষমতাচ্যুত হলে নিজের পরিবারের দুর্নীতির কারণে পার পাবেন না। আর একারণেই নির্বাচন দিচ্ছেন না তিনি। ’
ক্ষমতায় গেলে এসব দুর্নীতি, হত্যা ও গুমের বিচার হবে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ধৈর্য ধরে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যান, সবকিছুরই হিসেব নেওয়া হবে।
শেখ হাসিনার সরকার পদ্মাসেতু করতে পারবে না দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘দুর্নীতির কারণে বিশ্বব্যাংক এই সেতুর প্রজেক্ট থেকে সরে গিয়েছে, এই সরকার পদ্মাসেতু করতে পারবেনা। ’
‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দু’টো পদ্মাসেতু করা হবে,’ ঘোষণা দেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
এর আগে চরম বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে বড় ছেলে ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ছেলের বৌ জোবায়দা রহমানকে সঙ্গে নিয়ে লন্ডনে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় শুরু করেন বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া।
বাঙালি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটস এলাকা থেকে দূরে ইলফোর্ডের ফেয়ারলপ ওয়াটার কাউন্টি পার্কের একটি হলে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে এ শুভেচ্ছা বিনিময় শুরু হয়।
অনুষ্ঠান শুরুর পরপরই কর্মীদের চরম হুড়োহুড়ি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে বারবার বন্ধ করতে শুভেচ্ছা বিনিময়ের এই অনুষ্ঠান।
স্থানীয় সময় বেলা ৫টায় অনুষ্ঠান মঞ্চে আসার কথা থাকলেও তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমানকে নিয়ে খালেদা উপস্থিত হন সন্ধ্যা ৭টায়।
এ সময় মঞ্চে ফুল দিয়ে নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শুরু করেন। কিন্তু কার আগে কে দেবে এই প্র্রতিযোগিতায় শুরু হয় হুলস্তুল কাণ্ড।
মঞ্চে শুধু খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান থাকার কথা থাকলেও হুড়মুড় করে নেতা-কর্মীদের অনেকেই উঠে যান। এতে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে পুরো শুভেচ্ছা বিনিময় পর্ব।
মূলত যুক্তরাজ্য বিএনপির বিবদমান দু’গ্রুপের রেশারেশির কারণে এঘটনা ঘটেছে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।
বিশৃঙ্খলা বন্ধ করার জন্যে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান মাইকে বারবার অনুরোধ জানালেও কেউই তার কথায় কর্ণপাত করছিলেন না।
এমন অবস্থায় কর্মীদের হাত থেকে ফুল গ্রহণ কয়েকবারই বন্ধ করতে হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে। বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় শেষ পরযন্ত ক্ষুব্ধ দিলীয় চেয়ারপারসনের নির্দেশে শুভেচ্ছা বিনিময় বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৫
এমএ/