ফরিদপুর: ফরিদপুরের সালথায় মোবাইলের মেমোরি কার্ড বেচা-কেনা নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় অর্ধ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। পুলিশ প্রথমে লাঠিপেটা ও পরে সর্টগানের ২১টি গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের দাড়িয়াকান্দি গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গট্টি ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ মাতুব্বরের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য নুরুদ্দীন মাতুব্বরের বিরোধ চলে আসছিলো। গত সোমবার বিকালে মোবাইলের মেমোরি কার্ড বেচা-কেনা নিয়ে ওয়াদুদ মাতুব্বরের সমর্থক টুকু সর্দারের সঙ্গে নুরুদ্দীন মাতুব্বরের সমর্থক লাল মিয়ার কথাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরই সূত্র ধরে মঙ্গলবার ভোরে উভয়পক্ষের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
সংঘর্ষে আহত আলী মাতুব্বর জানান, উভয়পক্ষের সমর্থকরা দেশিয় অস্ত্র ঢাল, কাঁতরা, সড়কি, ভেলা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষ চলাকালে উভয়পক্ষের ১৫টি বসতবাড়িতে হামলা ও ভাংচুর করা হয়। এ সময় পুরো গ্রাম রণক্ষেত্র পরিণত হয়। পুলিশ প্রথমে লাঠিপেটা ও পরে সর্টগানের ২১টি গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সাড়ে ৬টা থেকে সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত টানা ৩ ঘন্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের আলী মাতুব্বার, দুলাল মাতুব্বর, খালেক মোল্লা, রাসেল শেখ, মজিবর রহমান, আফছার উদদীন, কামাল, শুকুর, জামাল, আবুল হোসেন, বাতেন, কবির, শাহজাহান, চান মিয়া, মফি শেখ ও সুমনসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
আহতদের মধ্যে ২০ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ডি এম বেলায়েত হোসেন বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শর্টগানের ২১টি গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এলাকার পরিবেশ এখন শান্ত।
সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ফরিদ শেখ (৩২), মঙ্গল মোল্লা (৩৮), মো. রাশেদ (৩৮), মো. ইচাহাক (৩২), ওহিদ খান (২২), মো. আর্শেদ (৩৫), মো. রাকিবুল (২৮), নবীন শেখ (৩০), বাবুল মাতুব্বর (২৫), অপু শেখ (১৮), ছালাম মাতুব্বর (৫০) ও বতু শেখ (২৫) নামে ১২ জনকে আটক করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে নগরকান্দা উপজেলার কোদালিয়া শহীদনগর ইউনিয়নের ঈশ্বরদী গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় ১৪টি ঘর ভাংচুর-লুটপাট হয়।
ছাগলে গাছ খাওয়াকে কেন্দ্র করে আপন দুই ভাই কালাম শেখ ও হালিম শেখের মধ্যে তর্ক বির্তক হয়। এক পর্যায়ে গ্রামের লোক দুইপক্ষ হয়ে দেশীয় অস্ত্র ঢাল, সড়কি, রামদা ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এ সময় ১৪টি ঘর ভাংচুর ও লুটপাট হয়। আহত হন উভয়পক্ষের ১০ জন। পরে নগরকান্দা থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতদের নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফসারউদ্দিন জানান, এ ব্যাপারে কোনো পক্ষই থানায় কোনো অভিযোগ করেনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৫
এএসআর