ঢাকা: দলীয় মনোনয়ন ও প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন হওয়ায় আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না জামায়াত।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আদালতের আদেশে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ হওয়ায় দলটি আর নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত নয়।
তাই স্থানীয় নির্বাচনে দাড়িপাল্লা প্রতীকে কোনো প্রার্থী নির্বাচনের সুযোগ পাবেন না। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যে কেউ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন।
ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা সূত্র জানায়, বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪০টি। ২০১৩ সাল থেকে জামায়াতকে অনিবন্ধিত হিসেবে গণ্য করছে ইসি।
কেননা, রিট পিটিশন নম্বর ৬৩০/২০০৯ এর ওপর ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের দেওয়া রায়ে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইসি জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে।
এর আগে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব মওলানা সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ জামায়াতের নিবন্ধন নিয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন।
কয়েক দফা শুনানির পর হাইকোর্ট ২০১৩ সালের ১ আগস্ট এক রায়ে, ‘জামায়াতকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দেওয়াকে আইন বহির্ভূত ও আইনগত অকার্যকর মর্মে ঘোষণা করা হয়।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বাংলানিউজকে বলেন, ‘বর্তমানে যেসব দলের নিবন্ধন আছে, কেবল সেসব দলই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। ’
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনের যে আইনগুলো সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে, সেগুলোতে রাজনৈতিক দলের সংজ্ঞায় ইসিতে নিবন্ধিত দলকেই বোঝানো হবে। তাই নির্বাচনের আগে নতুন করে কোনো অনিবন্ধিত দলকে নিবন্ধিত হওয়ার জন্য বা নির্বাচনের অংশ নেওয়ার বিষয়ে কোনো ধরনের চিঠি দেওয়া হবে না। ’
ইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অবশ্যই ইসিতে নিবন্ধিত হবে। এরপরও অনেক দল আছে যাদের নেতারা স্থানীয় পর্যায়ে বেশ জনপ্রিয়। তাদের সুযোগ না দিলে অনেক সময় মামলা বা রিট দায়ের করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আইনি জটিলতার মুখোমুখিও হতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।
এ প্রসঙ্গে ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। তাই এ দলটি আর কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। ’
নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় জামায়াত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি। তবে চতুর্থ উপজেলা পরিষদ ও ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিভিন্ন পদে প্রার্থী দিয়েছিলো দলটি।
মামলা করে পদে থাকা দিন শেষ:
এদিকে নির্বাচিত স্থানীয় সরকারের মেয়াদ শেষ হলে, অনেকেই মামলা করে বছরের পর বছর স্বীয় পদে আসীন থাকেন। কিন্তু স্থানীয় নির্বাচনগুলোর আইন সংশোধন হওয়ার পর এ সুযোগ আর থাকছে না।
নির্বাচন কমিশনার শাহ নেওয়াজ বলেন, আইন সংশোধন হওয়ার পর থেকে কেউ আর মোকদ্দমা করে পদ ধরে রাখতে পারবেন না। মেয়াদ শেষ হলেই সংশ্লিষ্ট পদধারীকে পদ ছাড়তে হবে।
‘সেই পদে নির্বাচন না করা গেলে প্রয়োজনে প্রশাসক নিয়োগ করা হবে। আইনের সংশোধনীতে এ বিধানটিই আনা হচ্ছে,’ যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৫
ইইউডি/এমএ