ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনায় জনতার ঢল নামানোর ঘোষণা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০১৫
প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনায় জনতার ঢল নামানোর ঘোষণা

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গণসংবর্ধনায় জনতার ঢল নামিয়ে ঐতিহাসিক জনসমাগম ঘটানোর ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোট। এ ঐতিহাসিক জনসমাগমের মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের আন্তর্জাতিক প্রভুদের ষড়যন্ত্রের দাঁত ভাঙা জবাব দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।



শুক্রবার (২ অক্টোবার) প্রধানমন্ত্রীর গণসংবর্ধনার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ১৪ দলের সঙ্গে পেশাজীবীদের যৌথ সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

সভায় দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষকে প্রধানমন্ত্রীর এ গণসংবর্ধনায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

দেশের জনগণের জন্য বয়ে আনা বিশাল অর্জনের জন্য ১৪ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে জাতীয় পতাকা হাতে শনিবার (৩ অক্টোবর) রাজপথে দাঁড়ানোর আহ্বানও জানানো হয়েছে।

সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত যৌথ সভায় ১৪ দলের নেতৃবৃন্দসহ পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, কৃষিবিদ, ডিপ্লোমা প্রকৌশলী, আইনজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষক নেতৃবৃন্দ, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, সংস্কৃতি কর্মী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, নারী সংগঠন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ পুরস্কার এবং আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের দেওয়া ‘আইসিটি অ্যাওয়ার্ড’ প্রাপ্তিতে তাকে এ সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ নেওয়া এবং তথ্য-প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ ব্যাপক সফলতা অর্জন করার স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীকে এ দু’টি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশের জন্য এ বিশাল অর্জন বয়ে আনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। সংবর্ধনার প্রস্তুতি নিতে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা দল ও ১৪ দলীয় জোটের সর্বস্তরের নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে যোগদান শেষে শনিবার (৩ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরছেন। দুপুর দেড়টায় শেখ হাসিনা ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন পর্যন্ত জনসমাগম ঘটিয়ে তাকে স্বাগত জানানো ও সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে ১৪ দলের এ যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মোহাম্মদ নাসিম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ অর্জন গোটা জাতির অর্জন। সবাইকে দলীয় সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানোর অনুরোধ করছি।

সভায় দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমরা জনতার ঢল নামিয়ে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের আন্তর্জাতিক প্রভুদের ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে চাই। এ সময় তিনি দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধরিত্রী কন্যা আখ্যায়িত করছি। পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব বিশ্বের বড় বড় দেশগুলোর হলেও তারা এ দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসছে না। প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে এ দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন।

মেনন আরও বলেন, আমরা দেশের তরুণ সমাজকে সেভাবে আকৃষ্ট করতে পারিনি। এ তরুণ সমাজকে জঙ্গিগোষ্ঠী বেশি আকৃষ্ট করছে। তরুণদের এ ভুল পথ থেকে ফিরিয়ে এনে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে। তরুণ সমাজকে তথ্যপ্রযুক্তির দিকে আকৃষ্ট করা শেখ হাসিনার বিরাট সফলতা।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ সফলতার জন্য সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে আমরা সংবর্ধনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী কী কী সফলতার জন্য পুরস্কার দু’টি পেয়েছে তা জাতিকে জানাতে অল্প কথায় লিফলেট আকারে প্রচার করতে হবে।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরীফ নুরুল আম্বিয়া, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়য়া, গণতন্ত্রী পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুর রহমান সেলিম, ক্রীড়া সংগঠক হারুন অর রশিদ, নারী নেত্রী রোকেয়া কবিরসহ পেশাজীবী নেতারা।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে সুশৃঙ্খল করতে বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত ৮টি রুটে বিভক্ত করা হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্যদের নেতৃত্বে ১৪ দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এসব রুটে দাঁড়িয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। এর মধ্যে সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, জাহিদ আহসান রাসেল ও ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা’র নেতৃত্বে বিমানবন্দর থেকে খিলক্ষেত; রাশেদ খান মেনন, একেএম রহমত উল্লাহ ও সাবের হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে খিলক্ষেত থেকে কুড়িল ফ্লাইওভার; হাবিবুর রহমান মোল্লা ও সানজিদা খানমের নেতৃত্বে কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে হোটেল রেডিসন; কামাল আহমেদ মজুমদারের নেতৃত্বে হোটেল রেডিসন থেকে কাকলী মোড়; কাকলী মোড় থেকে জাহাঙ্গীর গেট পর্যন্ত দলের সহযোগী সংগঠনগুলো; জাহাঙ্গীর গেট থেকে র‌্যাংগস ভবন পর্যন্ত জাহাঙ্গীর কবীর নানক, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও হাজী মো. সেলিম এবং র‌্যাংগস ভবন থেকে গণভবন পর্যন্ত ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের নেতৃত্বে স্ব স্ব এলাকার দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা অবস্থান নেবেন। এছাড়া ১৪ দল ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্পটে দাঁড়াবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০১৫
এসকে/আরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।