ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ফ্যাসিস্ট সিস্টেমের বিরুদ্ধে ডেমোক্রেটিক পার্টির সংগ্রাম সহজ নয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৬
ফ্যাসিস্ট সিস্টেমের বিরুদ্ধে ডেমোক্রেটিক পার্টির সংগ্রাম সহজ নয়


 
ঢাকা: ফ্যাসিস্ট সিস্টেমের বিরুদ্ধে ডেমোক্রেটিক পার্টির সংগ্রাম সহজ নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
 
শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে তার উত্তরার বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।


 
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ফ্যাসিস্ট একটা সিস্টেম, তার বিরুদ্ধে ডেমোক্রেটি পার্টির সংগ্রাম কঠিন। এটা এতো সহজ কাজ নয়। বিশেষ করে যেখানে একটা সামগ্রিক আগ্রাসন আছে। মিডিয়া দখল, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দখল, বিচার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ। তবে নিশ্চই একদিন মানুষ ঘুরে দাঁড়াবে। এই অবস্থার পরিবর্তন করবে।  
 
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে বি রাজনীতিকরণ করছে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ১/১১ সরকার বি রাজনীতিকরণ করেছে বলে আমরা তাদেরকে দোষ দেই। আওয়ামী লীগ তো এখন বি রাজনীতিকরণ করছে। তারা তো অন্য রাজনৈতিক দলকে কথা বলতে দিচ্ছে না। রাজনৈতিক নেতাদের হেয় প্রতিপন্ন করছে। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে।
 
গোটা দেশে অশান্তি-অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনী যখন পাস হয়, তখনই আমরা বলেছিলাম, একটা বিষবৃক্ষ পবন করা হলো। এটা সারা দেশে অস্থিতিশীলতা, অনিশ্চয়তা, সহিংসতা সৃষ্টি করবে। কারণ, আমাদের যে রাজনৈতিক সাংস্কৃতি, সেই সাংস্কৃতিতে মানুষ একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। নির্বাচনটা এখানে উৎসবের মত। এর মধ্য দিয়ে তারা মতামত প্রকাশের সুযোগ পায়।
 
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই অধিকার থেকে বাংলাদেশের মানুষ আজ বঞ্চিত। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন মানুষের সেই অধিকার কেড়ে নিয়েছে। মূল সংকট এখানেই।
 
সরকার উল্টো পথে চলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এতে শুধু বিএনপি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না, গোটা জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দেশে একটা শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। যে শোলাকিয়ায় লাখ লাখ মানুষ ঈদের নামাজ পড়তে যেত, সেখানে এক হাজার লোক নামাজ পড়তে যায়নি।
 
জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পদক কেড়ে নেওয়া ও কবর সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণায় সরকারের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমান তাদের কাছে বড় একটা সমস্যা। কারণ, যখনই নিরপেক্ষ ও নির্মোহ ইতিহাস রচিত হয়, তখনই দেখা যায় স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষনাটা সত্যিকার অর্থেই জিয়াউর রহমানের কাছ থেকে এসেছিল।
 
এমনকি ইন্ডিয়ান আর্কাইভসের হিস্টোরিতে পরিষ্কার উল্লেখ আছে- জিয়াউর রহমানের ঘোষণাটা ইলেক্ট্রিফাইন মেসেজের মত কাজ করেছে। এই ঘোষণা সমগ্র জাতিকে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। দ্যাট ইজ আওয়ার পয়েন্ট। আমরা তো কাউকে খাটো করতে চাই না। দীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য শেখ মুজিবুর রহমান আন্দোলন করেছেন। আওয়ামী লীগ আন্দোলন সংগ্রাম করা একটি দল। এটা তো আমরা অস্বীকার করি না।
 
জাতীয় ঐক্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্য’র ডাকে কয়জন আসল? সেটা কোনো ব্যাপার নয়। আমরা মনে করেছি জাতীয় ঐক্য’র ডাক দেওয়া ওই মুহূর্তের জন্য প্রয়োজন ছিল। তাই খালেদা জিয়া জাতীয় ঐক্যর ডাক দিয়েছেন। সরকারকেও তিনি ডাক দিয়েছেন। সে ডাকে তো সারা দেয়-ই নি, উল্টা এখন বলছে, বিএনপির সঙ্গে ঐক্য হবে না।
 
সরকারের উদ্দেশ্যে ফখরুল বলেন, বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করতেই হবে। তুমি যদি জনগণের কাছে থাকতে চাও, জনগণকে নিয়ে সমস্ত সমস্যা মোকাবেলা করতে চাও, জঙ্গিবাদকে দমন করতে চাও অবশ্যই বিএনপিকে নিয়ে ঐক্য করতে হবে।
 
আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অবস্থান ব্যাখা করেত গিয়ে ফখরুল বলেন, মধ্যবর্তী নয়, আমরা তো এখনই নির্বাচন চাই। তবে সেই নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে। এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এ ব্যাপারে তারা একমতও হয়েছিল। এখন তারা সেই জায়গা থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে গেছেন। বিভিন্ন ইস্যু তৈরি করে কীভাবে বিরোধী দলকে ধ্বংস করা যায়, নিশ্চিহ্ন করা যায়, সেই কাজটি করছেন।
 
আগামী দিনের আন্দোলন সংগ্রাম সম্পর্কে তিনি বলেন, আন্দোলনের কৌশল এবং প্যাটার্ন চেঞ্জ হয়েছে। আপনারা হয়তো দৃশ্যমান কিছু দেখতে পারছেন না। আমরা কাজ করছি। সব কিছু গুছিয়ে পুনরায় গণসংযোগে নামব। সেখানে ম্যাডামসহ দলের সিনিয়র নেতারা থাকবেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৬/আপডেট ১৪৩৪
এজেড/বিএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।