ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

নির্ব‍াচনে খালেদা না এলেও বিএনপি নামের একটি দল আসবে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৪ ঘণ্টা, মে ৬, ২০১৭
নির্ব‍াচনে খালেদা না এলেও বিএনপি নামের একটি দল আসবে

ঢাকা: আগামী নির্বাচনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি না এলেও বিএনপি নামেই নতুন রাজনৈতিক দলের অংশ নেওয়া অনেকটাই নিশ্চিত বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান। 

তিনি বলেন, ‘বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মীই নির্বাচনে অংশ নিতে চান। এ অবস্থায় বিএনপি যদি নির্বাচনে না আসে, তাহলে দলটি ভেঙে একটি বড় অংশ বের হয়ে যাবে।

তারা বিএনপি নামেই শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে’।  

শুক্রবার (০৫ মে) বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।  

নির্বাচনে অংশগ্রহণে বিএনপির বিভিন্ন দাবি ও শর্ত সম্পর্কে আওয়ামী লীগের অবস্থানও তুলে ধরেন আব্দুর রহমান।


আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় বলে বিএনপির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি তাদের কাল্পনিক অভিযোগ। এই সরকারের অধীনেই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। তার প্রমাণ, বিগত সময়ে অনুষ্ঠিত ৫টি সিটি করপোরেশন ও সর্বশেষ কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। মানুষ যদি তাদের ভোট নাই দিতে পারতেন, তাহলে বিএনপির প্রার্থীরা কি করে বিজয়ী হয়েছেন?’ 

‘এ ধরনের রাজনৈতিক কথা বলে তারা নির্বাচন কমিশনকে মানসিক চাপে ফেলে বাড়তি সুযোগ নিতে চাচ্ছেন। কিন্তু এটি করে কোনো লাভ হবে না। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষই হবে। সেই নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসেবেও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই থাকবেন’।  

বিএনপির সহায়ক সরকারের দাবি প্রসঙ্গে আব্দুর রহমান বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, কাল্পনিক ও সংবিধান বহির্ভুত দাবি এবং নতুন অজুহাত। এখন পর্যন্ত তারা সহায়ক সরকারের রূপরেখা দিতে পারেননি। এটি বলতে কি বোঝায়, সেটা তারা নিজেরাও এখন পর্যন্ত বোঝেননি, জানেন না। এ ধরনের কোনো ধারণা গ্রহণের সুযোগও আমাদের নেই। সংবিধানকে অবমূল্যায়ন বা সংবিধানের বিরুদ্ধাচারণ করে কোনো দাবি মানার অর্থই হলো- সংবিধানকে ছোট করে দেখা, অসম্মান প্রদর্শন করা’।

আব্দুর রহমান বলেন, ‘বিএনপির যদি সিদ্ধান্ত থাকে, আগামী নির্বাচনে না আসার- সেটি আলাদা বিষয়। তবে আমি মনে করি, বাংলাদেশে নিবন্ধিত অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই নির্বাচনে আসবে। ফলে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রাজনৈতিক দলকে নিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে’।  

‘বিএনপি নিজেকে আগামী নির্বাচনের অপরিহার্য দল মনে করলে তা হবে বোকামি। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি না এলেও বিএনপি নামে একটি রাজনৈতিক দল যে নির্বাচনে আসবে, সে ব্যাপারে আমি অনেকটাই নিশ্চিত। সেক্ষেত্রে বিএনপির একটি বড় অংশ বের হয়ে আসবে এবং সেই অংশটি নির্বাচনে অংশ নেবে’।  
 

তাহলে কি বিএনপি ভেঙে যাবে- জানতে চাইলে রহমান বলেন, ‘সে সম্ভাবনা তো আছেই। কারণ, বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মীই চান, নির্বাচনে অংশ নিতে। শুধুমাত্র খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান আসতে চান না। নির্বাচনে না এসে তারা ক্ষমতায় যাওয়ার ভিন্ন পথ খুঁজছেন’।  

বিএনপি অংশ না নিলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে কি-না- জানতে চাওয়া হলে আব্দুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচন যদি অংশগ্রহণমূলক হয়, যদি উৎসবমুখর পরিবেশে হয়, তাহলে সে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে কেন?’ 

‘পার্টিকুলার একটি রাজনৈতিক দল না এলে গোটা জাতির কাঙ্খিত ও প্রত্যাশিত যে নির্বাচন, ২০১৯ সালেই যদি বন্ধ থাকে, না হয়, তাহলে তো সংবিধান বহির্ভুত শক্তি ক্ষমতা দখল করবে। তাহলে কি বিএনপি সেই শক্তিকেই উস্কানি দেবে?’  


বিএনপির লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একটি ফৌজদারি মামলা ও অভিযোগ যদি আমলযোগ্য হয়, সে মামলা প্রত্যাহারের দাবি তো অযৌক্তিক। সে দাবি তো মানার কোনো সুযোগ নেই’।  

‘গত নির্বাচনে না গিয়ে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করে তারাও তো হিসাব-নিকাশ মিলিয়েছে, কতোটুকু লাভবান হয়েছে, কতোটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারপরও নাশকতা তো নাশকতাই। সেক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আছে, বাংলাদেশের জনগণ আছেন। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সে নাশকতাকে কঠোরভাবে দমন করা হবে’।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৩ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০১৭ 
এসকে/এএসআর
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।