ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বাংলার মানুষকে অজানা ইতিহাস জানানো হবে: মুরাদ হাসান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০১৯
বাংলার মানুষকে অজানা ইতিহাস জানানো হবে: মুরাদ হাসান

ঢাকা: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর থেকে সামরিক বাহিনীতে, মেজর জিয়ার শাসনামলে সশস্ত্র বাহিনীতে কয়টি অভ্যুত্থান হয়েছিল, কতজন নিহত হয়েছিল, এর পেছনে মাস্টারমাইন্ড কে ছিল? কীভাবে তাদের বিচার প্রক্রিয়ায় আনা যায়, তা নিয়ে সংসদীয় কমিটি ও মন্ত্রিপরিষদে আলোচনা হয়েছে। বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করার প্রক্রিয়া চলছে। বাংলার মানুষের কাছে প্রকাশ করা হবে অজানা ইতিহাস।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বেলা ১২টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘নভেম্বর ১৯৭৫: ষড়যন্ত্র, রক্তাক্ত বাংলাদেশ ও প্রতিক্রিয়াশীলতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পর খন্দকার মোশতাক আহমেদ প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতাগ্রহণ করেন।

সেসময় জিয়াউর রহমান সেনাপ্রধান থাকাকালীন বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজন মেজর বঙ্গভবন থেকে সেনাবাহিনীর সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করতেন। পরে বঙ্গভবন থেকে মোশতাকের নির্দেশে পুরান ঢাকার কারাগারে চার নেতাকে এক সঙ্গে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করা হয়।

সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাংবাদিক জায়েদুল আহসান পিন্টু। এসময় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন- মেজর জেনারেল (অব.) মো. আলী সিকদার, সংসদ সদস্য ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক শফিকুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা.কামরুল হাসান খান, সাবেক সংসদ সদস্য মেহেজাবিন খালেদ, লে. কর্নেল (অব.) আবু উসমান চৌধুরী, সম্প্রীতি বাংলাদেমের যুগ্ম সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

আলোচকরা বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর (১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ সাল) সামরিক বাহিনীতে মেজর জিয়ার শাসনামলে সশস্ত্র বাহিনীতে কয়টি অভ্যুত্থান হয়েছিল এবং কতজন নিহত হয়েছিলেন তার সঠিক কোনো তথ্য কোথাও নেই। সশস্ত্র বাহিনীতে ঘটে যাওয়া অভ্যুত্থান, পাল্টা অভ্যুত্থানে নিহত সামরিক ও বেসামরিক সদস্যের তালিকা অবশ্যই থাকার কথা। বর্তমান সরকারের হাতে সুযোগ ছিল এ সংক্রান্ত তথ্য জাতির সামনে তুলে ধরার।

বক্তারা বলেন, ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর সশস্ত্র বাহিনীতে প্রাণহানির দিক দিয়ে সবচেয়ে বড় অভ্যুত্থানের চেষ্টা করা হয়েছিল। পরে সামরিক আদালতের বিচারে কতজনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল তা একেবারেই অন্ধকারে। সেদিন বিমান বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছিল। এরপর ৭ অক্টোবর থেকে সামরিক ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে কয়েকশ’ সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও ফায়ারিং স্কোয়াডে হত্যা করা হয়েছিল অনেককে। আর বিদ্রোহ দমনে গুলি করে হত্যা করে অসংখ্য সৈনিক, যাদের পরিবার-পরিজনকে মরদেহ দেওয়া হয়নি। এমনকি মৃত্যুর খবরটিও জানানো হয়নি।

সবগুলো অভ্যুত্থান চেষ্টাই হয়েছে জেনারেল জিয়ার শাসনামলে। যার দু’একটি জিয়া নিজেই উস্কে দিয়েছিলেন। এই সুযোগে কথিত অভ্যুত্থান দমন করেছে খুবই নিষ্ঠুরভাবে। ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত সশ্রস্ত্র বাহিনীতে ৪শ’ থেকে ৫শ’ সদস্যকে ফাঁসি দেওয়া হয়।

তারা বলেন, ইতিহাসের সত্য উদঘাটনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দলিল-দস্তাবেজ আর প্রকৃত ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্যে বেরিয়ে আসতে পারে প্রকৃত ইতিহাস। একইসঙ্গে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের দাবি অনুযায়ী ট্রুথ কমিশন গঠন করে প্রকৃত সত্য সবাইকে জানানো হোক।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৯
পিএস/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।