ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ভাসানীর স্বপ্নকেই বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২১
ভাসানীর স্বপ্নকেই বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু

ঢাকা: মওলানা ভাসানীর স্বাধীনতার স্বপ্নকেই বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন।

শনিবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মওলানা ভাসানীর ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

‘মওলানা ভাসানী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা’ শীর্ষক সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ ড. মেসবাহ কামাল। সভা পরিচালনা করেন ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য মাহমুদুল হাসান মানিক।

সভাপতির বক্তব্যে রাশেদ খান মেনন বলেন, মওলানা ভাসানীর স্বাধীনতার স্বপ্নকেই বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। ভাসানীর কাছে তাই বাঙালির ঋণ কম নয়। কিন্তু ঋণ স্বীকার করা তো দূরের কথা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে তাকে স্মরণটুকু পর্যন্ত করা হয়নি। জাতীয় পর্যায়ের ন্যূনতম কোনো অনুষ্ঠানে নয় বরং তার মৃত্যুবার্ষিকীর শ্রদ্ধা অনুষ্ঠান রাজনৈতিক মারামারিতে রূপ নিয়েছে। দলীয় অহমিকা ও অন্ধত্ব ছাড়া ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধ সেখানে কাজ করেনি।

তিনি বলেন, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে কমিউনিস্টদের ভুমিকার ইতিহাস স্বীকার করছে। এমনকি ভারতের স্বাধীনতার পঁচাত্তর বছর উৎসবে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি প্রেসিডেন্ট কমিউনিস্টদের সেই ভূমিকার স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়েছেন তেমনি স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে স্বাধীনতা সংগ্রামে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বদানকারী ভূমিকাকেও স্বীকার করা হবে। সেদিন আমরা থাকব না, কিন্তু নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশের ইতিহাসকে সঠিক জায়গায় স্থাপন করবেন।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, যখন কেউ ভাবতেই পারেনি তখন ১৯৪৮ সালেই পূর্ব পাকিস্তান পরিষদে মওলানা ভাসানী পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসনের সুনির্দিষ্ট রূপ তুলে ধরেছিলেন। সেটাই অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল যুক্তফ্রন্টের একুশ দফায় আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী থেকে সোহরাওয়াদী যখন সংখ্যাসাম্য নীতি মেনে নিয়েছিলেন, পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসনকে পায়ে দলে ছিলেন, মওলানা পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রকারী শাসকগোষ্ঠীকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন না পেলে ‘আসসালামু আলাইকুম’ জানাতে দ্বিধা করবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। শেখ মুজিব যখন পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের ৬ দফা রূপরেখা তুলে ধরায় ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বন্দি’ তখন তিনি পল্টনে আয়ুবকে এ মর্মে হুঁশিয়ার করেছিলেন যদি শেখ মুজিবকে মুক্তি দেওয়া না হয় তাহলে বাস্তিল দুর্গের মতো ক্যান্টনমেন্ট ভেঙে মুজিবকে মুক্ত করে আনবেন। সেনা কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু হয়েছিলেন। রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়লেও মওলানা ভাসানী স্বাধীনতার স্বপ্নকে ছাড়েননি।

মেনন বলেন, আওয়ামী লীগ মওলানা ভাসানীকে অস্বীকার করে মস্কোপন্থীরা এখনও তাকে ‘আয়ুবের দালাল’ হিসেবে প্রচার করে, আর পিকিংপন্থীরা তাকে জুড়ে দেয় সাম্প্রদায়িক বিএনপির সঙ্গে, কিন্তু মওলানা ভাসানী ভাস্বর হয়ে আছেন, থাকবেন ‘সাম্রাজ্যবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, দুর্নীতি, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে মজলুম’ মানুষের কণ্ঠস্বর আপসহীন হিসেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২১
আরকেআর/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।