ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

প্রথম পরীক্ষায় ‘ইসি সফল’, মনে করছে আ. লীগ

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৬ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২২
প্রথম পরীক্ষায় ‘ইসি সফল’, মনে করছে আ. লীগ

ঢাকা: কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচন শতভাগ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) তাদের অধীনে অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচন সুষ্ঠু পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালনা করে সফলতা দেখাতে পেরেছে বলেও মনে করছেন দলটির নেতারা।

 

বর্তমান ইসি গঠিত হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। কাজী হাবিবুল আউয়ালকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) করে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। কুসিক নির্বাচনসহ কয়েকটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন ছিল এই কমিশনের অধীনে প্রথম ভোট। দায়িত্ব নেওয়ার পর কুসিকের এই নির্বাচনকে নতুন ইসির জন্য প্রথম পরীক্ষা হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। গত ১৫ জুন অনুষ্ঠিত এই ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ ছিল। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তেমন কোনো বিশৃঙ্খল ঘটনা ঘটেনি বা এ ধরনের কোনো অভিযোগও ওঠেনি।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের মতে, বর্তমান ইসি গঠনের পর তারা এই প্রথম দায়িত্ব পান কুসিক নির্বাচন পরিচালনা করার। ইভিএমের (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) মাধ্যমে এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। একটি অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, শতভাগ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ এই নির্বাচন সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে তারা সেই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পেরেছে। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে তারা কৃতকার্য হয়েছে বলেও মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতারা ।    

তবে নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর বিজয়ী আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী (বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত) সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু ফলাফল প্রত্যাখান করেন। বিএনপি নেতারাও এই নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কালকের (১৫ জুন) কুসিক নির্বাচন তো আপনারা নিজেরাই দেখেছেন, দ্বিতীয়বার আমি বলতে চাই না। এটা আমরা বহু আগে থেকেই জানি যে এমন হবে। যে কারণে বলে দিয়েছি আমরা কোনো নির্বাচনেই যাচ্ছি না- খুব পরিষ্কার করে বলেছি।

বিএনপির এই বক্তব্যকে হীন রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থে দূরভিসন্ধিমূলক বলে অভিহিত করছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। যেনতেন প্রকারে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করাই বিএনপির দলীয় চরিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও তারা মন্তব্য করেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) এক বিবৃতিতে বলেন, বিএনপি দলীয়ভাবে নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। আবার নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে হীন রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থে দূরভিসন্ধিমূলক মন্তব্য করে। আজ যেনতেন প্রকারে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করাই বিএনপির দলীয় চরিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় সরকার পর্যায়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু ছিল। যা সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। নির্বাচন কমিশন কুসিকে একটি অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিলেও মির্জা ফখরুল ইসলামসহ বিএনপি নেতারা এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য অবাস্তব, কাল্পনিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিরূপ মন্তব্য করেছে।

এদিকে পরাজিত হওয়ার পর মেয়র প্রার্থী সাক্কুর ফল প্রত্যাখানকে স্বাভাবিক বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণি পর্যায়ের ওই নেতারা। বিএনপির বহিষ্কৃত যে দুই জন প্রার্থী ছিল তারা নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন এবং অল্প ভোটে পরাজয়ের পর এক জন প্রার্থীর ফল প্রত্যাখান করা স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবেই তারা দেখছেন।  

কুসিক নির্বাচন এবং নতুন ইসির প্রথম দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে শতভাগ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন হয়েছে। বিএনপির দুইজন প্রার্থী যদিও তাদের বহিষ্কার করেছে দল, তারাও বলেছে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে। আমি মনে করি বর্তমান ইসি প্রথম দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে কৃতকার্য হয়েছে। ইভিএম এর মাধ্যমে সঠিকভাবে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। বিএনপির ২ জন প্রার্থী তারা অনেক ভোট পেয়েছে।

কজী জাফরুল্লাহ আরও বলেন, আমাদের সফলতা আমরা একজন প্রার্থী দিতে পেরেছিলাম, বিদ্রোহী ছিল না। সাক্কু অল্প ভোটে হেরেছেন। হেরে যাওয়ার পর এ কথা (ফল প্রত্যাখান) বলা স্বাভাবিক।    
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২২
এসকে/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।