ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রবাসে বাংলাদেশ

করোনার টিকা দেওয়ার দৌড়ে এগিয়ে পর্তুগাল

শাহ মোহাম্মদ তানভীর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১
করোনার টিকা দেওয়ার দৌড়ে এগিয়ে পর্তুগাল

পর্তুগাল: দক্ষিণ-পশ্চিম আইবেরীয় উপকূলের দেশ পর্তুগাল। দেশটিতে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে মোট জনসংখ্যার শতকরা ৮১ ভাগকেই সম্পূর্ণভাবে টিকা দিতে সক্ষম হয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ডিজিএস'র সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী পর্তুগালে ১০ মিলিয়নের বেশি জনসংখ্যার বসবাস, এরমধ্যে ৮ দশমিক ২ মিলিয়ন মানুষকে সম্পূর্ণ ডোজ টিকা প্রয়োগ করতে সক্ষম হয়েছে।

রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, সারাবিশ্বে পর্তুগাল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত দেশ দুটি সমান হারে তাদের নাগরিকদের সম্পূর্ণ ডোজ টিকা দিতে পেরেছে, যা যৌথভাবে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ পর্তুগাল ২০২০ এর শুরুতে বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ করোনাভাইরাসের  বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং দেশটির সরকার তখন করোনার টিকা প্রয়োগের ক্ষেত্রে জোড়দান করেছিল। বর্তমানে ৬৫ বছরের উপর বয়স্ক এবং ১২-১৭ বছর বয়সী যুবকদের ও  সম্পূর্ণ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। বৈধ-অবৈধ অভিবাসীরা যারা টিকা নেননি তাদের ক্ষেত্রে সাক্ষাতকার নিয়ে টিকা কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। যে কেউ দেশটির যেকোনো টিকা কেন্দ্রে গেলেই  মিলছে ভ্যাকসিন।

এদিকে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার করার বিধিনিষেধ ও তুলে নিতে যাচ্ছে। তবে রেস্টুরেন্ট কিংবা জিম সেন্টারে যেতে হলে দেখাতে হবে করোনার ডিজিটাল সার্টিফিকেট।

বুধবার পর্তুগালের ভ্যাকসিন টাস্ক ফোর্সোর প্রধান, ভাইস অ্যাডমিরাল হেনরিক ডি গাউভিয়া ই মেলো, পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের একটি টিকা কেন্দ্রে পরিদর্শন করার পর সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমরা বিশ্বের মধ্যে টিকা প্রয়োগে কত নম্বরে আছি এক, দুই কিংবা তিন তা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন নই। আমাদের লক্ষ থাকতে হবে টিকার মাধ্যমে ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে রাখা।  

তিনি আরো বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলির সঙ্গে তাল মিলিয়ে একই গতিতে টিকা দিতে শুরু করেছিল আমাদের দেশ, কিন্তু টিকাবিরোধী আন্দোলন ইউরোপীয় অন্য দেশগুলোতে বৃদ্ধি পাওয়ায় এদিক দিয়ে আমরা কম সময়ে টিকা প্রয়োগ করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা ধনী দেশগুলোতে অতিরিক্ত টিকা দিচ্ছি, যেখানে দরিদ্র দেশগুলোতে শূন্য টিকা প্রয়োগ করা হয়, আমি এর সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত হতে পারছিনা কেবল এটা কোনো নৈতিকতার এবং যুক্তিবাদী মনোভাবের মধ্যে পড়েনা।

উল্লেখ্য, পর্তুগালে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে প্রথম কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন বা টিকা দেওয়া হয়। পোর্তোর সান জাও হাসপাতালে চিকিৎসক অ্যান্তনিয় সারমেন্তে সর্বপ্রথম পর্তুগিজ হিসেবে করোনাভাইরাসের টিকা নেন। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে কোভিড-১৯-এর টিকা প্রদান কার্যক্রম জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয়। পর্তুগাল সরকার ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বেশ কয়েকটি ধাপে টিকা দেওয়ার ঘোষণা দেয়। সর্বপ্রথম ধাপে ৫০ বছরের অধিক বয়স্ক হার্ট, ডায়াবেটিস ও কিডনির জটিলতায় ভোগা নাগরিকদের টিকা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে এ সময় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সেবার জড়িত ব্যক্তিরা কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণের সুযোগ পান। দ্বিতীয় ধাপে ৬৫ বছরের বেশি বয়সী ১.৮ মিলিয়ন পর্তুগিজ মেডিক্যাল নম্বরধারী জনগণ করোনাভাইরাসের টিকা লাভ করেন। একই সঙ্গে ৫৫-৬৪ বছর বয়সী নয় লাখ মানুষ যাদের হার্ট, কিডনি, লিভার, ব্লাড প্রেসার কিংবা অন্যান্য জটিল শারীরিক সমস্যা আছে তারা টিকা নেন।

এদিকে করোনা মোকাবিলা থেকে শুরু করে টিকা কার্যক্রম পর্যন্ত পর্তুগালের পুলিশ বাহিনী, চিকিৎসক ও অন্য পেশাজীবীরাও জনগণকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করেে যাচ্ছে। তারই ফলশ্রুতিতে পর্তুগাল করোনাভাইরাসে মোকাবিলায় ইউরোপের অন্যতম সফল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।