ঢাকা: বাণিজ্য মেলার শেষ দিনে মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) লোক সমাগম অন্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম ছিল। ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের চেয়ে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করা ক্রেতাদের সংখ্যা বেশি।
এদিকে শেষ দিন উপলক্ষে বিক্রেতারা কম মূল্যে পণ্য ছেড়ে দিচ্ছেন। ছোট ও মাঝামারি বিক্রেতারা বলছেন, মেলা শেষ, সে কারণে জিনিসপত্র ফিরিয়ে নিলে লোকসান হবে। তাই কম দামেই জিনিসপত্র ছেড়ে দিচ্ছেন তারা।
এদিকে বাণিজ্যমেলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সর্বমোট ৩৫ লাখ দর্শনার্থী হয়েছে বলে জানিয়েছে মেলা কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার দুপুর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ২৭ তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলা-২০২৩ ঘুরে এবং মেলা কর্তৃপক্ষ ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র দেখা গেছে।
যদিও সম্পূর্ণ একমাস বাণিজ্য মেলা চলায় এবং গত বছরের তুলনায় ক্রেতা দর্শনার্থী বেশি থাকায় অনেক ব্যবসায়ী খুশি।
সরেজমিনে বাণিজ্যমেলার শেষ দিনে দেখা গেছে ক্রেতা দর্শনার্থীদের ভিড় অন্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম। কিন্তু যারাই এসেছেন কিছু না কিছু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা সারতে একপ্রকার ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। বের হওয়ার গেটগুলোতে দেখা গেছে বেশিরভাগ দর্শনার্থেই মেলা থেকে কেনাকাটা করে ব্যাগ ভর্তি করে নিয়ে যাচ্ছে প্রয়োজনীয় পণ্য।
মেলার শেষ দিনে ভিশনের শো-রুম থেকে কিছু ইলেকট্রনিক্স পন্য কেনেন বনশ্রীর বাসিন্দা হিমেল হোসেন। তিনি দুটি ব্লু-টুথ হেড ফোন, একটি ইলেক্ট্রিক কেটলি এবং একটি বাটন মোবাইল কেনেন। মূল্যছাড়ে পণ্য কিনতে পেরে তিনি খুবই খুশি।
বাংলানিউজকে হিমেল হোসেন বলেন, আমি আগেও মেলায় এসেছি। তখনই এগুলো পছন্দ করে গেছি। আজ একটা কাজে এদিকে আসা হয়েছিল. তাই কিনে নিয়ে গেলাম।
৩০ দিনের সার্বিক পরিস্থিতি জানিয়ে বাণিজ্য মেলার পরিচালক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী (ইপিবি সচিব) বাংলানিউজকে বলেন, দর্শনার্থী এবং ক্রেতা-বিক্রেতা যদি সন্তুষ্ট থাকেন তাহলেই আমাদের সাফল্য। এত বড় একটা ভেন্যুতে প্রতিদিন তিন থেকে চার লাখ মানুষ এসেছেন, তাদের ম্যানেজ করা আসলেই অনেক কঠিন। তারপরও আমাদের পক্ষ থেকে মেলাকে সুন্দর করার যত রকমের চেষ্টা আছে তা আমরা করেছি। সে হিসেবে মেলায় এখন পর্যন্ত বড় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আজকে মেলার শেষ দিন। যথারিতি রাত ৯টায় মেলা শেষ হয়ে যাবে। মেলার সময় আর বাড়ছে না। এবারের বাণিজ্য মেলায় আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল ভেন্যুটাকে সবার কাছে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। আমরা মনে করি এ ব্যাপারে সফল হয়েছি।
বাণিজ্য মেলায় এখন পর্যন্ত ৩৫ লাখ এসেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ক্রেতা- বিক্রেতারা যদি সন্তুষ্ট থাকে তাহলেই আমাদের সন্তুষ্টি। আগামীতে মানুষ যেন আরও ভালোভাবে মেলাটা করতে পারে সেই চেষ্টা করব আমরা। আগামীতে কীভাবে বেশি বেশি বিদেশি স্টল আনা যায় সেই চেষ্টা আমরা করছি। আগামীতে আমাদের পরিকল্পনা আছে মেলার চার থেকে পাঁচ দিন শুধু বিদেশি ক্রেতাদের জন্য সোর্সিং মেলা করা হবে। যেখানে বড় বড় রপ্তানি আদেশ আসবে। বাণিজ্য মেলায় যে শুধুমাত্র ব্যবসাকেন্দ্রিক একটা মেলা, বিষয়টা এমন নয়। এটা একটা বিনোদনের কেন্দ্রও হয়ে উঠেছে। যেখানে সবাই তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে আসেন।
বর্তমান এবং আগামীর বাণিজ্যমেলায় যাতায়াতের সুবিধার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, জন্য কর্ম দিবসগুলোতে ৫০ থেকে ৬০টির মতো বিআরটিসি বাস যাতায়াত করেছে। এছাড়া বন্ধের দিনগুলোতে (শুক্র এবং শনিবার) ১৫০টি বিআরটিসি বাস যাত্রীসেবায় ছিল। বিআরটিসির চেয়ারম্যান ওয়াদা করেছিলেন যে, একজন যাত্রী থাকলেও তারা বাস পরিচালনা করবেন; সেই ওয়াদা তিনি রেখেছেন। আগামীতে প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে যাত্রীদের বিআরটিসি সার্ভিস দেয়া হবে।
>>> আরও পড়ুন: পর্দা নেমেছে বাণিজ্য মেলার, সেরার ট্রফি পেল ৪৭ প্রতিষ্ঠান
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২৩
ইএসএস/এমএমজেড