ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাণিজ্যমেলা

মেট্রোরেল ও এক্সপ্রেসওয়ের সুবিধা নিয়ে যাওয়া যাবে বাণিজ্য মেলায়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৪
মেট্রোরেল ও  এক্সপ্রেসওয়ের সুবিধা নিয়ে যাওয়া যাবে বাণিজ্য মেলায়

ঢাকা: ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে এবছর প্রথম ফার্মগেট থেকে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এর ফলে মেট্রোরেল ও এক্সপ্রেসওয়ের সুবিধা নিয়ে মতিঝিল ও উত্তরার দর্শনার্থীরা সহজেই মেলা প্রাঙ্গণে যেতে পারবেন।  

শনিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ- চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে  ‘২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)-২০২৪’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম৷

এসময় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ,  রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান।

আহসানুল ইসলাম বলেন, এবার মেলায় যাতায়াতের সুবিধার জন্য মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করতে ফার্মগেট থেকে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে উত্তরা, মতিঝিল রুট থেকে যারা মেলায় আসবেন তারা মেট্রোরেলে এসে ফার্মগেট থেকে বাসে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে সোজা মেলায় চলে আসতে পারেন সেই সুবিধা রাখা হয়েছে। গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যত বেশি দর্শনার্থী আসবে ততো বেশি লোকাল শিল্প উৎসাহিত হবে।

তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য রপ্তানিকে বহুমুখী করার মাধ্যমে রপ্তানি বাণিজ্য বাড়ানো। গত ১৫ বছরে ৬ গুণ রপ্তানি বাণিজ্য বাড়াতে পেরেছি। আমরা সেখানে বসে থাকতে চাই না। আমরা যদি পণ্যে বহুমুখীকরণ করতে পারি। তাহলে আমাদের রপ্তানি ১০০ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামীতে মেলায় কোনো ম্যানুফেকচারার বঞ্চিত হবে না। তাদের দেওয়ার পরও আমরা কমার্শিয়াল স্টল বরাদ্দ দেব৷ মেলা আয়োজন করতে হলে সকল কিছুর একটা সমন্বয়ের প্রয়োজন হয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, গত দুই বছর রাস্তার কিছুটা সমস্যা ছিল। এবার রাস্তা অনেক ভালো, ফলে অনেক দর্শনার্থী আসবেন বলে আশা করছি। আমরা চেষ্টা করেছি একটি ভালো মেলা অনুষ্ঠানের জন্য। প্রতিবছর পহেলা জানুয়ারি মেলার আয়োজন করলেও এবার নির্বাচনের কারণে কিছুটা পিছিয়েছে। এ মেলাটি মানুষের জন্য বার্ষিক একটা ঐতিহ্যবাহী মেলায় পরিণত হচ্ছে।  

জানা গেছে, সাধারণ দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে কুড়িল বিশ্বরোড হতে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত বিআরটিসি ও কয়েকটি যাত্রীবাহী বাসের ডেডিকেটেড সার্ভিসের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মেলা চলাকালীন এ বাস সার্ভিস চালু থাকবে। শুক্র ও শনিবার চাহিদা মতো গাড়ির ব্যবস্থা করা হবে৷ এছাড়া এবছরই প্রথম মেলার জন্য ফার্মগেট থেকে বাস ছাড়া হবে।  

মেলায় প্রবেশ টিকিটের মূল্য

মেলার প্রবেশ টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা (প্রাপ্ত বয়স্ক) এবং শিশুদের (১২ বছরের নিচে) ক্ষেত্রে ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধীরা তাদের কার্ড প্রদর্শন করে বিনামূল্যে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। মেলার টিকেট অনলাইনেও পাওয়া যাবে। এছাড়াও বিকাশের মাধ্যমে ডিসকাউন্টে টিকিট বিক্রয় করা হবে।

পার্কিং সুবিধা

এদিকে মেলার রয়েছে পর্যাপ্ত কার পার্কিংয়ের সুবিধা। ভিআইপি পার্কিংয়ের জন্য রয়েছে বিল্টইন দ্বিতল কার পার্কিং বিল্ডিং যেখানে পাঁচ শতাধিক গাড়ির পার্কিং সুবিধা রয়েছে। এছাড়াও, এক্সিবিশন হলের বাইরে ৬ একর জমিতে বিস্তর পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

স্টল সংখ্যা

এবারের বাণিজ্য মেলার লে-আউট প্ল্যান (সংশোধিত) অনুযায়ী, বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়ন, রেস্তোরাঁ ও স্টলের মোট সংখ্যা ৩৫১টি এবং দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ইতোমধ্যে প্রায় সবগুলো প্যাভিলিয়ন, রেস্তোরাঁ  ও স্টল বরাদ্দ পেয়েছে। অত্যাধুনিক সুযোগ- সুবিধা সংবলিত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এক্সিবিশন সেন্টারের ১ লাখ ৬৬ হাজার ৩০০ বর্গফুট আয়তনের দুটি হলে (এ ও বি) ১৭৪টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।  

সেন্টারের প্রধান ফটকের পূর্বপাশে বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়নসহ প্রিমিয়ার ও সংরক্ষিত ক্যাটাগরির স্টল রয়েছে ৬২টি। হলের পেছনে ফরেন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়ন এবং প্রিমিয়ার ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়নসহ প্রিমিয়ার ও সংরক্ষিত ক্যাটাগরির স্টল রয়েছে ৫৩টি।  

সেন্টারের মূল কম্পাউন্ডের বাইরে ৬ একর জমির একাংশে ফুড জোন (৩২টি রেস্তোরাঁ ও মিনি রেস্তোরাঁ) এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত ক্যাটাগরির স্টল রয়েছে ৬২টি।

মিলবে সেসব পণ্য

এবারের বাণিজ্য মেলায় দেশীয় পণ্যের পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, ইরান, হংকং ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশ অংশ নেবে। মেলায় এসব দেশের বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিক্স অ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স, ফার্নিচার, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহসামগ্রী, চামড়া/আর্টিফিসিয়াল চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর ইত্যাদি পণ্য মেলায় প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে। পণ্য প্রদর্শনের পাশাপাশি দেশীয় পণ্য রপ্তানির বড় বাজার খোঁজার লক্ষ্য রয়েছে।

প্রসঙ্গত, দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন ও উৎপাদনে সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ সাল হতে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা আয়োজন করা হচ্ছে। মেলার ২৫টি পর্ব আয়োজিত হয়েছে শেরে বাংলা নগরের উন্মুক্ত মাঠে। প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় বাণিজ্য মেলার জন্য নির্মিত স্থায়ী ভেন্যু- বিবিসিএফইসি-এ ডিআইটিএফ-২০২২ আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে যুক্ত হয়েছে এক নতুন মাত্রা। এই স্থায়ী মেলা কমপ্লেক্সে তৃতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০২৪। পূর্বের ন্যায় মেলাটি মাসব্যাপী সকাল ১০টা হতে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে (সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাত ১০ টা পর্যন্ত)।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৪
জিসিজি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।