ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বাণিজ্যমেলা

‘পাটের পলিথন ও চা’ জনপ্রিয়তা বাড়াবে সোনালি আঁশের 

মানসুরা চামেলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৮
‘পাটের পলিথন ও চা’ জনপ্রিয়তা বাড়াবে সোনালি আঁশের  পাটের তৈরি ব্যাগ। ছবি: জিএম মুজিবুর/বাংলানিউজ

ঢাকা: প্লাস্টিক ব্যাগের পরিবেশের ক্ষতিকর দিক বিবেচনায় এনে দেশে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে সরকার। প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে পাটের পলিথিন ব্যাগ নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি)। 

নিষিদ্ধ হলেও বাজার থেকে পলিথিন ব্যাগ যেমন উঠে যায়নি, তেমনি পাটের ব্যাগও সেভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। তবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় পাটের তৈরি পলিথিন ‘সোনালি ব্যাগ’ শিগগির বাণিজ্যিকভাবে বাজারে ছাড়া হবে।

এখন পরিবেশবান্ধব পাটের তৈরি এ সোনালি ব্যাগ ঢাকা আন্তজার্তিক বাণিজ্য মেলায় প্রর্দশন করা হচ্ছে। পাশাপাশি সোনালি আঁশের জনপ্রিয়তা বাড়াতে স্বাস্থ্যসম্মত পাট পাতা থেকে তৈরি চা বিক্রি ও প্রর্দশন করা হচ্ছে মেলায়।

তবে রোববার (১৪ জানুয়ারি) বাণিজ্য মেলার বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখা যায়, পাটের পলিথিন ব্যাগ ও চা- এ দু’টো পণ্য দর্শনার্থীদের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি করেছে।


মেলায় আগত দর্শনার্থীরা ব্যাগ নেড়েচেড়ে দেখছেন। পাট দিয়ে যে পলিথিন তৈরি হয়-তা দেখে বিস্ময়ও প্রকাশ করেছেন অনেকে। একই বিস্ময় পাট পাতা থেকে তৈরি চা নিয়েও।  

পাট থেকে পলিথিন ব্যাগ উদ্ভাবন করেন পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ জুটমিল করপোরেশনের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা ড. মোবারক আহমদ খান।  

পাট পাতার তৈরি চা।  ছবি: জিএম মুজিবুর/ বাংলানিউজপরিবেশবান্ধব ব্যাগটির ভবিষ্যৎ বাজার সম্ভাবনা নিয়ে কথা হয় বিজেএমসির বিপণন ব্যবস্থাপক কাজী কামরুল করিমের সঙ্গে।  

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, পাটের সেলুলোজ থেকে তৈরি ব্যাগটি  সম্পূর্ণ পচনশীল ও পরিবেশবান্ধব। এ পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করার পর ফেলে দিলে ৫ ঘণ্টা পর ধীরে ধীরে গলতে শুরু করে। ৫-৬ মাসের মধ্যে মাটিতে মিশে যায়। প্লাস্টিকের পলিথিনের চেয়ে অধিক কার্যকর এ ব্যাগে দেড়গুণ ভারি দ্রব্য বহন করা যাবে। খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণ করাও যাবে।  

ক্ষুদ্র পরিসরে ‘সোনালি ব্যাগ’ উৎপাদন শুরু হয়েছে জানিয়ে কাজী কামরুল করিম বলেন, তবে এখনও তা বাজারে বাণিজ্যিকভাবে আনা হয়নি। এ ব্যাগ বিদেশে রফতানির ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে রফতানির কথাবার্তা চলছে। প্রথম দিকে ব্যাগের দামটা বেশি হবে।  

‘ব্যাপক রফতানি করে দেশে সহজলভ্য করা হবে। দাম কম হলে বলার অপেক্ষা রাখবে না, সোনালি ব্যাগ প্রচলিত পলিথিন ব্যাগের বিকল্প হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাবে। ’ 

বাণিজ্য মেলার এ প্যাভিলিয়নে প্রর্দশন ও বিক্রি করা হচ্ছে পাটের পাতা থেকে তৈরি চা। এ চা তৈরি হয়, ফুল আসার আগেই পাট গাছ থেকে পাতা সংগ্রহ করে। সূর্যের আলোয় শুকিয়ে গুঁড়া করে প্যাকেটজাত করা হয়। অনেকটা গ্রিন টি-এর স্বাদ এ চায়ের।  

পাটের চায়ে মধু বা চিনি মিশিয়ে পান করা যায়। মধু বা চিনি ছাড়াও এ চা পান করা যাবে। পাট শাকের সব ভেষজ গুণ পাট পাতা থেকে তৈরি করা চায়ে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। মেলায় এই চায়ের প্রতি প্যাকেটের মূল্য ১০০ টাকা রাখা হচ্ছে।  

কাজী কামরুল বলেন, পাটের পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারে পরিবেশ দূষণ, ভূমির উর্বরতা হ্রাস, শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টিসহ প্রভৃতি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। তেমনি পাটের চা মানুষের সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করবে। পাশাপাশি সোনালি আঁশের এ শিল্পকে চাঙ্গা করতেও সহায়তা করবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৮
এমসি/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।