ঢেঁকিতে গ্রামের নারীরা ধান, চিড়া, চালের গুড়ো, মশলাসহ নিত্য দিনের প্রয়োজনীয় নানান সামগ্রী তৈরি করতেন। কিন্তু কালের বিবর্তনে যন্ত্র নির্ভর সভ্যতার যুগে তা হারিয়ে যেতে বসেছে।
ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা শহর ও শহরতলী এলাকায় এখন আর ঢেঁকি দেখা যায়না। নতুন প্রজন্মের অনেক ছেলে মেয়ে এই মানটির সঙ্গেও পরিচিত নন। আগরতলার ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পাঠরত অনেক ছেলে মেয়েকে ঢেঁকি শব্দটি বললে প্রায় সকলেই চোখ কপালে তোলে উল্টো প্রশ্ন করেন ঢেঁকি আবার কি !!!
শহর ছাড়িয়ে গ্রামীণ এলাকায় গেলে এখনো অনেক বাড়িতে ঢেঁকি দেখা যায়। খোয়াই জেলার কল্যাণপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেল ঢেঁকি। পৌষ সংক্রান্তির আরও কয়েকদিন বাকি থাকলেও দেখা গেলো নারীরা পিঠাপুলি তৈরির জন্য চালের গুড়ো করছেন ঢেঁকিতে।
নারীরা বাংলানিউজকে বলেন, ঘরে ঘরে এক সময় ঢেঁকি থাকলেও এখন আর তেমনটা নেই, এখন সারা গ্রাম খোঁজ নিলে দু’একটি বাড়িতে ঢেঁকি পাওয়া যায়। এখন আর আগের মতো ঢেঁকির ব্যবহারও হয় না। তাই ঢেঁকি হারিয়ে যাচ্ছে। সব বাড়িতে ঢেঁকি না থাকায় চাল নিয়ে এক ঢেঁকিতে সিরিয়াল দিয়ে অনেকে চালেল গুড়ো করে নিচ্ছেন। একই দিনে সকলের গুড়ো করা সম্ভব হবে না।
আগে নারীরা মন মন ঢেঁকিতে তৈরি করতেন। সেই সঙ্গে মরিচ, হলুদ, জিরা ইত্যাদি মশলাও করতেন ঢেঁকিতে।
৬০ বছর বয়সী এক নারী বাংলানিউজকে বলেন, রাইচমিল হওয়ায় নারীদের এই কষ্ট এখন দূর হয়েছে। দিন বেধে ঢেঁকিতে কাজ করতে হয় না। এখন নারীরা ঢেঁকিতে শুধু পিঠেপুলির জন্য চালের গুড়োই তৈরি করেন তাও আবার সকলে নয়। অনেকেই এখন মিল থেকে চালের গুড়োও করিয়ে আনেন।
পৌষ সংক্রান্তি আসলে ঢেঁকির খোঁজ পড়ে, না হলে সারা বছর এটি পড়ে থাকে অবহেলা আর অযত্নে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৭
এসসিএন/বিএস