ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

হারিয়ে যাচ্ছে ‘বাঘব্রত’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৭
হারিয়ে যাচ্ছে ‘বাঘব্রত’ ‘বাঘব্রত’-ছবি-বাংলানিউজ

আগরতলা: অতীতে বাংলার গ্রামাঞ্চলে ‘বাঘব্রত’ নামে একটি সামাজিক অনুষ্ঠান ছিল। সিলেট অঞ্চলে এই ব্রতকে ‘বাঘাই’ পূজা বলা হতো। বনের বাঘকে সন্তুষ্ট করতেই মানুষ পূজা দিতেন। এখন বাঘব্রত আর হয় না বললেই চলে। নতুন প্রজন্মের বেশিরভাগই এই ব্রতের সঙ্গে অপরিচিত।

চলিত বিশ্বাস মানুষের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েই বাঘ গ্রামে হামলা করতো। তাই বাঘের হাত থেকে বাঁচতে মানুষ বাঘব্রত চালু করে।

মাঘ-ফাল্গুন মাস এলে গ্রামবাসীরা ধানের খড় দিয়ে একটি বাঘ তৈরি করতেন। খড়ের বাঘটিকে সঙ্গে নিয়ে কীর্তন করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদা তুলতেন। চাঁদা তোলা শেষ হলে গ্রামের সবাই মিলে খড়ের বাঘটিকে সঙ্গে নিয়ে গভীর জঙ্গলে চলে যেতেন। সেখানে খিচুড়ি, পায়েস রান্না করে তা দিয়ে বাঘকে পূজা করতেন। এরপর সবাই মিলে প্রার্থনা করতেন যাতে বাঘ গ্রামের মানুষের কোনো ক্ষতি না করে।

এখন জঙ্গল নেই, বাঘও নেই। বাঘের সঙ্গে হারিয়ে গেছে বাঘব্রতও। তবে এখনও ত্রিপুরার পশ্চিম জেলার সীমনা এলাকার মানুষ বাঘব্রতের আয়োজন করে।

সীমনার বাসিন্দা বিষ্ণু দেব বাংলানিউজকে বলেন, এখন আর বাঘ নেই। তবুও গ্রামীণ এই সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে প্রতিবছর আমরা এই ব্রত পালন করি।

আগরতলার পশুপ্রেমী প্রবীর দেব বলেন, এখন বাঘ না থাকলেও লোকজ এই প্রথার প্রয়োজন আছে। আগে প্রচুর বাঘ ছিলো। এগুলি গৃহপালিত প্রাণীসহ মানুষদের শিকার করতো। এখন বাঘ বিপন্ন, তারপরও বাঘ লোকালয়ে চলে এলে মানুষ এদের হত্যা করে। প্রাচীন এই সামাজিক প্রথাকে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে কাজে লাগাতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৭
এসসিএন/আরআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।