তাই বাংলাদেশের যে পর্যটকরা লাউয়াছড়ায় গিয়েছেন তারা ত্রিপুরায় বেড়াতে এলেও সিপাহীজলার এ বনটিতে একবার ঢুঁ মেরে যান।
জীব-বৈচিত্র্য আর বন্য প্রাণীর দর্শন পেতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এ রাজ্যটির আদর্শ স্থান বলা চলে সিপাহীজলাকে।
তবে মূল ফটক থেকে একটু গিয়েই বোঝা গেল সিপাহীজলা থেকে বাংলাদেশের লাউয়াছড়া বেশ সমৃদ্ধ। তবে এখানে যেটা লক্ষ্যণীয় তা হচ্ছে এটি বেশ সাজানো গোছানো। পরিকল্পনার দিক দিয়েও এগিয়ে রয়েছে সিপাহীজলা। এক কথায় বলা যায় সিপাহীজলা অভয়ারণ্য হচ্ছে ইকো পর্যটনের আদর্শ।
শনিবার (২৯ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫ টা। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয় দর্শনার্থীদের প্রবেশ। তবুও অনেক অনুরোধের পর ঢুকতে দেওয়া হলো।
একটু গিয়েই দেখা হলো দুরন্তপনায় মেতে আছে বানর। মূল ফটকে দায়িত্বে থাকা বিদু ভূষণ জানালেন, চশমা পড়া বানরই নাকি এখানকার মূল আকর্ষণ। তাদের বিশেষত্ব হলো দেখে মনে হবে চোখে চশমা পড়ে আছে।
‘একমাত্র সিপাহীজলাতেই চশমা পড়া বানর আছে,’ যোগ করেন ওই ব্যক্তি।
কিছুদূর ভেতরে গিয়ে কথা হয়, অভয়ারণ্যের স্টাফ চিকন মালা দেব বর্মার সঙ্গে। তিনি জানান, ১৮ দশমিক ৫৩ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে এ বন্যপ্রাণী অভয়াশ্রম। যা রাজ্যের রাজধানীর আগরতলা থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে।
১৯৭২ সাল থেকে বায়োডাইভার্সিটির নানা বিষয় নিয়ে সিপাহীজলা বায়ো কমপ্লেক্স কাজ করে যাচ্ছে। এখানে বোটানিক্যাল গার্ডেন, হরিণ পার্ক ও চিড়িয়াখানাও রয়েছে।
১৯৮৭ সালে এটিকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। এখানে ৪৫৬ ধরনের মতো উদ্ভিদ রয়েছে, আছে ভিন্ন প্রজাতির বাঁশ ও অনেক ভেষজ গাছও।
এখানে কমপক্ষে সাড়ে ৪ হাজার কিউবিক মিটার বাগান খুঁজে পাওয় যাবে। সেখানে রয়েছে বিশেষ জাতের যেমন রেসাস, গিটেইন ম্যাককিউ, ক্যাপড ল্যাগার, স্পেকট্যাপল মাংকি ও নানান জীব-জন্তু। এর সঙ্গে রয়েছে বাঘ, কিভেট, হরিন, বন্য শূকর ও হাতিও।
অতিরিক্ত আকর্ষণ হিসেবে এখানে আছে কফি ও রাবার বাগান, বোটে চড়ার ব্যবস্থা ও খেলনা ট্রেন। অনেক ট্যুরিস্ট কটেজও এর আকর্ষণ বাড়িয়েছে।
বৃক্ষরাজি, জলাশয়, নানা জাতের বন্যপ্রাণী এবং জলাশয় সব মিলিয়ে গা ছমছম করা এ অভয়ারণ্যটি মুগ্ধ করবে প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকদের। এসব কারণে বলাই যায় ইকো পর্যটনের আদর্শ সিপাহীজলা অভয়ারণ্য।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৭
এসএইচডি/এমএ