ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

লকডাউনে সরকারি নীতি মানছেন না কারখানা মালিকরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২০
লকডাউনে সরকারি নীতি মানছেন না কারখানা মালিকরা খেয়ে না খেয়ে দিনযাপন করছেন ইটভাটার শ্রমিকরা।

আগরতলা (ত্রিপুরা): ত্রিপুরার পশ্চিম জেলার অন্তর্গত মোহনপুরের হরিণখোলা এলাকার তুষার ইটভাটায় কর্মরত শ্রমিকরা লকডাউনের মধ্যে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। কাজ নেই তাই মালিকপক্ষ তাদের সপ্তাহে অর্ধেক মজুরি দিচ্ছে। এ মজুরিতে পরিবারের সবার খাবার বন্দোবস্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে তাদের অভিযোগ। ত্রিপুরা সরকারের তরফে তাদের সহায়তা করার জন্য নাম ও ফোন নম্বরসহ যাবতীয় তথ্য নিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তাদের কাছে সরকারি সাহায্য পৌঁছায়নি।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে ভারতজুড়ে এখন লকডাউন চলছে। ফলে কল-কারখানাসহ অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজকর্ম বন্ধ রয়েছে।

শুধু জরুরি সেবা চালু রয়েছে।

তবে লকডাউন এর কারণে যাতে শ্রমিকদের অসহায় অবস্থার মধ্যে ফেলে ছাঁটাই করতে না পারে এবং তাদের যেন নিয়মিত বেতন সরবরাহ করা হয় এ বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে কল-কারখানার মালিকপক্ষকে আহ্বান জানানো হয়েছে।

তোষার ইটভাটায় কর্মরত রয়েছেন বিহারসহ অন্য রাজ্যের প্রায় দুশ’ শ্রমিক। বর্তমান লকডাউনের জেরে তারা সবাই কর্মহীন অবস্থায় ভাটার পাশের শেডে পরিবার নিয়ে অলস দিন যাপন করছেন।

এখানে কর্মরত বিহার রাজ্যের এক শ্রমিক উপেন্দ্র রাজবংশ সিং জানান, এখন রাজ্যজুড়ে সব ধরনের কাজকর্ম বন্ধ, সেই সঙ্গে ইটভাটাতেও কাজ হচ্ছে না। যখন কাজ চলতো তখন সপ্তাহে একদিন তাদের কাজের হিসাব অনুসারে পুরো সপ্তাহের মজুরি দেওয়া হতো। এখন কাজ নেই তবে সরকারি নির্দেশ রয়েছে তাদের যেন মালিকপক্ষ নিয়মিত অর্থ দিয়ে সহায়তা করে। সরকারি নির্দেশ থাকলেও মালিকপক্ষ সম্পূর্ণভাবে তা মানছে না বলেও তার অভিযোগ। এখন মালিকপক্ষ আর ১০ দিন পর পর পাঁচশ’ রুপি করে পরিবার পিছু দিচ্ছে। তা দিয়ে একটি পরিবার প্রতিপালন কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে পরিবারের ছোট সদস্যরা খেলে বড়রা খেতে পারেন না আবার যদি বড়রা খায় তবে ছোটরা খাবার পায়় না। এভাবেই কষ্টের মধ্যেই চলছে জীবন যাপন।

ত্রিপুরা সরকারের আধিকারিকরা এসে তাদের নাম, ফোন নম্বর, পরিবারের সদস্যসংখ্যা ইত্যাদি যাবতীয় তথ্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তখন বলা হয়েছিল, এ অবস্থায় রাজ্য সরকারও তাদের সহায়তা করবে। তখন তারা অনেকটাই উজ্জীবিত হয়েছিলেন এ ভেবে যে সরকারি সহায়তা পেলে সবাই মিলে একসঙ্গে খেতে পারবেন। কিন্তু সরকার থেকে তথ্য নিয়ে যাওয়ার প্রায় এক মাস হয়ে গেলেও এখনো কোনো সহায়তা পাননি বলেও তিনি জানান। একই অবস্থা এখানে কর্মরত প্রায় দুশ’ শ্রমিক পরিবারের।

শঙ্কর, বিজিতসহ প্রায় সবার একই বক্তব্য। তারা জানান, যেহেতু কাছ হচ্ছে না তাই তার বাড়ি চলে যেতে চান কিন্তু যেতেও পারছেন না কারণ যব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে ভাটা ম্যানেজার প্রদীপ কুমার দে কে জিজ্ঞেসা করা হলে তিনি বলেন, সরকার থেকে শ্রমিকদের বিষয়ে তথ্য নিয়ে যাওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা করা হয়নি। কিন্তু সরকারের নির্দেশ রয়েছে যে এ অবস্থায় শ্রমিকদের খাবার-দাবারের যাতে কোনো সমস্যা না হয় তার জন্য মালিকপক্ষ যেন পদক্ষেপ নেয়।

এ অবস্থায় আপনারা কী করছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা যতটুক পারছি তাদের সহায়তা করে যাচ্ছি। বিশেষ করে অসুখ বিসুখ হলে বিনামূল্যে ওষুধ দিচ্ছি।

তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল, ২০২০
এসসিএন/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।