আগরতলা (ত্রিপুরা): রাজ্যজুড়ে শীত ঝাকিয়ে পড়তেই হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে চলে এসেছে পরিযায়ী পাখিরা। অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও আশ্রয় নিয়েছে রাজধানীর কলেজ এলাকায়।
সারাদিন এসব পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত কলেজ লেকসহ আশপাশের এলাকা। এক, দুই এবং তিন নম্বর কলেজ লেকে এরা আশ্রয় নিয়েছে।
দিনভর লেকের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ঘুরে চলে আবার কখনও এক লেক থেকে অন্য লেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ঘুরে বেড়ায়। নিজেদের মধ্যে জটলা খুনসুটি চলতে থাকে। শেষ বিকেল হলেই উঠে পড়ে লেকের পাড়ের গাছগুলোতে। অন্ধকার হয়ে গেল ধীরে ধীরে তাদের কোলাহল থেমে যায়। আবার সকাল হলেই শুরু হয় তাদের কলতান। এভাবেই পুরো শীত কেটে যায় তাদের কোলাহলে। এরইমধ্যে বাসা তৈরি করে ডিম পাড়ে এবং বাচ্চার জন্ম হয়। শীতের শেষে নতুন সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে আবার তারা ডানা মেলে উড়াল দেয় সাইবেরিয়ার দিকে।
এ এলাকার পৌর নাগরিক গোপাল চন্দ্র সরকার বাংলানিউজকে জানান, প্রতিবছর শীতের সময় পাখিগুলো এখানে এলে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এদের দেখতে ভিড় জমান। কিছু লোক এ পাখিগুলোকে অহেতুক যন্ত্রণা দেওয়ার চেষ্টা করে। অনেকে এসব পাখিদের শিকার করার চেষ্টা করে।
তাছাড়া লেকের একটা বড় অংশ জুড়ে মানুষ প্রতিদিন গোসল করেন, এর ফলে পাখিদের অবাধে চলাফেরা করার ক্ষেত্রে কিছুটা বাধা সৃষ্টি হয়। এ পাখিগুলো প্রকৃতির এক অনন্য সম্পদ তাই এগুলোকে বাঁচিয়ে রাখা সকলের কর্তব্য।
বি বি এম কলেজ এবং এম বি বি কলেজের কিছু ছাত্র জঙ্গল পেরিয়ে পাখিদের অবাধ বিচরণ করার সেই নিরিবিলি জায়গায় চলে যায় এবং পাখিদের বিরক্ত করে বলে স্থানীয় মানুষ ও পাখি প্রেমীদের অভিযোগ রয়েছে। পাখি প্রেমীদের দাবি, ছাত্ররা যেন পাখিদের কোনোভাবে বিরক্ত না করতে পারে এর জন্য উভয় কলেজ কর্তৃপক্ষের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
পাখি প্রেমীরা আরও জানান, লেকগুলোতে পর্যাপ্ত খাবার নেই, তাই আগের তুলনায় অনেক কম সংখ্যক পরিযায়ী পাখি আসছে। যদি এভাবে এদের বিরক্ত করা হতে থাকে তবে হয়তো এক সময় এরা আর এখানে আসবে না। তাই আগে থেকে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর, ২০২১
এসসিএন/জেডএ